শোরগোলের একটি কারণ যদি বামেদের আঁতুড়ঘরের কন্যার লেখালেখির জন্য জাগো বাংলা-কে বেছে নেওয়া হয় তবে আরেকটি কারণ অবশ্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামোচ্চারণ। এই সম্পাদকীয়তে ইতিহাসের পথ বেয়ে অন্তঃপুরীকাদের আলোকায়নের কাহিনি বর্ণনা করেছেন। মেধাবী ইতিহাসবেত্তার নজর এড়ায়নি বহু অল্পশ্রুত নামও।
অজন্তার লেখা বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি প্রবন্ধ জুড়ে আলোচিত হয়েছে তাদের আগলভাঙার কাহিনি। এসেছে উমাদেবী সীতাদেবী বগলা সম্মোহিনী দাশগুপ্ত বীণাপাণি দেবীর মতো নারীদের কৃতিত্বের কথা। সময়ের সারণি বেয়ে ধাপে ধাপে এগিয়ে এসেছেন অজন্তাদেবী। প্রথম কিস্তি প্রকাশিত হতেই জল্পনা পরের সংখ্যায় অনিলকন্যা হয়তো মমতার বিষয়ে লিখবেন, অন্তত এই ইঙ্গিত আসছে আজকের সম্পাদকীয়র স্ট্র্যাপে।
advertisement
প্রমোদ দাশগুপ্তর পাঁচ মানসপুত্রের একজন ছিলেন অনিল বিশ্বাস। প্রয়াত এই সিপিএম নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া সমালোচক হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। ১৯৬৯ সাল থেকে সিপিএম-এর সর্বক্ষণের কর্মী ছিলেন অনিল বিশ্বাস। এক সময় দলীয় মুখপাত্র গণশক্তি পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেছিলেন অনিল।পরে যোগ্যতাবলেই ওই পত্রিকার সম্পাদক হন তিনি। অনিলের দূরদর্শিতাতেই গণশক্তি স্ট্যান্ড স্ট্যান্ডে জায়গা করে নিয়েছিল একথা অস্বীকার করার উপায় নেই।
২০০৬ সালের ২৬ মার্চ ভোটের ঠিক আগে অনিল বিশ্বাস প্রয়াত হন। ভোটকুশলী অনিল বিশ্বাসের মৃত্যু সিপিএম রাজনীতিতে ব্ল্যাকহোল তৈরি করে। তারপর গঙ্গা দিয়ে বহু জল গড়িয়েছে। ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গণশক্তির দাপট ক্রমেই কমেছে, স্ট্যান্ড দখল করতে শুরু করেছে জাগো বাংলা। সম্প্রতি এই জাগো বাংলা-ই দৈনিকে পরিণত হয়েছে। বাবা দাপুটে সিপিএম নেতা তথা গণশক্তির সম্পাদক ছিলেন, কন্যা জাগো বাংলা সম্পাদকীয় লিখছেন, ঘটনাটির তাৎপর্য যে কী গভীর তা রাজনীতির চর্চাকারী মাত্রই বুঝবেন।
তবে লেখাটির মধ্যে কোনও ভাবেই রাজনীতির রোজকার কচকচি খুঁজে লাভ নেই। অনিলকন্যা লিখেছেন সংশ্লিষ্ট বিশয়ে নিজের ইতিহাস অবলোকনের পারদর্শিতার জায়গা থেকেই। ইতিমধ্যে এই নিয়েই চর্চাও শুরু হয়েছে সর্বত্র। পাঠক সমাদরও ইতিমধ্যেই পাচ্ছেন তিনি। আর সকলেই তাকিয়ে আছেন আগামীকাল অর্থাৎ দ্বিতীয় কিস্তির জন্য, কারণটা অবশ্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।