ওই ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই ফেসবুক-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় উটিউবার রোদ্দুর রায়ের বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছেই। দাবি উঠেছে অবিলম্বে তাঁকে গ্রেফতারেরও। নতুন প্রজন্মের মধ্যে অপসংস্কৃতি ছড়িয়ে দেওয়া, বাঙালি সংস্কৃতিকে নষ্ট করা এবং রবীন্দ্রনাথকে অপমান করার অভিযোগে গ্রেফতার করার দাবি উঠেছে। কিন্তু আইন কি বলছে? আদৌ এধরনের ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা যায় কি? পুলিশ কি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এধরনের ঘটনায় কোনও ব্যবস্থা নিতে পারে?
advertisement
আইনজীবীরা বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলা এই দাবি একেবারেই সঙ্গত। আইনি ব্যবস্থা নেওয়াই যায়। শুধু ব্যবস্থা নেওয়াই নয়, তাঁকে গ্রেফতার করে বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শাস্তি দেওয়াও সম্ভব। আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা জানিয়েছেন, তথ্যপ্রযুক্তি আইন এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির নির্দিষ্ট ধারাতেই সম্ভব এই ইউটিউবারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। অনির্বাণ বলেন, "সোশ্যাল মিডিয়ায় যা দাবি উঠছে আইন তাকে সমর্থন করে। এরকম আচরণের অভিযোগে পুলিশ আইন মেনে যে কাউকে গ্রেফতার করতে পারে। যেহেতু এটি কগনিজেবল অফেন্স, তাই পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করে গ্রেফতার করতে পারে।" উল্লেখ্য, এদিনই অর্থাৎ মঙ্গলবার বেলেঘাটা থানায় পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ রোদ্দুর রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। বাংলা কৃষ্টি-সংস্কৃতি আঘাত করা, মনীষীদের অপমান করা, রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুল গীতিকে বিকৃত করার জন্য অবিলম্বে রোদ্দুর রায়কে গ্রেফতার করার দাবি জানিয়ে এই অভিযোগ করা হয়।
কিন্তু কি সেই আইন? আইনজীবীদের মতে,
১) ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৪ ধারায় গ্রেফতার করা যেতে পারে রোদ্দুর রায়কে। এই ধারাটি জামিনযোগ্য হলেও পুলিশ আদালতের অনুমতি ছাড়াই গ্রেফতার করতে পারে। সর্বোচ্চ তিন মাসের সাজা হতে পারে এই ধারায়।
২) এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৭সি ধারাতেও গ্রেফতার করা যেতে পারে বিতর্কিত ইউটিউবারকে। এই ধারাটি অবশ্য জামিন অযোগ্য। সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ তিন বছরের সাজার বিধান রয়েছে।
আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ন চট্টোপাধ্যায় বলেন, "জনসমক্ষে কাউকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করা অপরাধ। তাই পুলিশ চাইলে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৪ ধারায় মামলা রুজু করে গ্রেফতার করতেই পারে।" তার প্রশ্ন, "অনেকেই রবীন্দ্রনাথকে ভগবান মনে করেন। তাহলে এক্ষেত্রে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার ধারায় কেন মামলা হবে না?"
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই বেলেঘাটা থানায় একটি শিক্ষক সংগঠনের তরফ থেকে রোদ্দুর রায়কে গ্রেফতারের দাবি তুলে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সংগঠনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, রোদ্দুর রায়ের কীর্তি যুব সমাজের ক্ষতি করছে। তাই তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। যদিও সে প্রসঙ্গে ডিসি (ইএসডি) অজয় প্রসাদ বলেন, "আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।"
SUJOY PAL