গতকাল কলেজ স্কয়্যার থেকে বিজেপি-র মিছিল হাওড়ার দিকে এগোচ্ছিল৷ হাওড়া ব্রিজের মুখে সেই মিছিল আটকায় পুলিশ৷ বড়বাজার এলাকায় বিজেপি নেতা কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায় পুলিশ৷ তখনই একটি গলির ভিতরে বিজেপি নেতা, কর্মীদের পিছু নিতে গিয়ে একা পড়ে যান কলকাতা পুলিশের সেন্ট্রাল ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার দেবজিৎ চট্টোপাধ্যায়৷ বিজেপি নেতা, কর্মীরা তাঁকে ঘিরে ধরেন৷ পালাতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে রাস্তায় পড়ে যান ওই পুলিশকর্তা৷
advertisement
অভিযোগ, ওই পুলিশকর্তাকে একা পেয়ে তাঁকে লাঠি, বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন বিজেপি-র কিছু নেতা, কর্মী৷ রাস্তায় ফেলেই রীতিমতো লাথি মারা হয় তাঁকে৷ পরে কয়েকজন বিজেপি কর্মীই তাঁকে উদ্ধার করে বের করে আনেন৷ আহত অবস্থায় ওই পুলিশ কর্তাকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়৷ আজ সেখানেই তাঁকে দেখতে যান অভিষেক৷ পুলিশ কর্তার সঙ্গে দেখা করে বাইরে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তৃণমূল সাংসদ৷
অভিষেক অভিযোগ করেন, 'গতকাল নবান্ন অভিযানের নামে বিজেপি-র রাহাজানি, গুন্ডামির নিদর্শন সারা বাংলায় তুলে ধরেছে৷
বিদ্যাসাগর মূর্তির ভাঙা দিনের কথা মনে করিয়েছে।
গায়ের জোর, পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো। লোহার রড দিয়ে মেরেছে। ওনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। চিকিৎসক সাথে কথা বলেছি। সিরিয়াস ফ্র্যাকচার আছে।'
আরও পড়ুন: 'মহিলারা মা দুর্গা হলে গায়ে হাত দিলে আপত্তি কেন?' শুভেন্দুর 'ডোন্ট টাচ' মন্তব্যে খোঁচা অভিষেকের
অভিষেক বলেন, 'আমি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করছি৷ হাইকোর্ট থাকতে বিচার ব্যবস্থা থাকতে এই ঘটনা ঘটে কী করে৷ আগামী ১৯ তারিখ হাইকোর্ট কী নির্দেশিকা দেয়, সেদিকে সবার নজর থাকবে৷ যাঁরা প্ররোচনা দিয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট কী ব্যবস্থা নেয়, সবাই সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে৷'
যদিও পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে অভিষেক বলেন, 'আমি দেবজিৎ বাবুকে বলেছি৷ আপনি যে সংযম, সহনশীলতা দেখিয়েছেন, তার জন্য স্যালুট৷ পুলিশ চাইলে বন্দুক চালাতে পারত। যেটা সিপিএম আমলে হত। যে পুলিশ কাজ করছে এখন তারা সংযমের পরিচয় দিয়েছে। এটাই পরিবর্তন।
একজন অফিসারকে নিরস্ত্র অবস্থায় পেয়ে আঘাত করা হয়েছে৷ ওনার মাথায় হেলমেট থাকায় উনি বেঁচে গিয়েছেন। ওনার জায়গায় যদি আমি থাকতাম, আর আমার সামনে কেউ পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগাতো, পুলিশকে আক্রমণ করত তাহলে আমি সোজা মাথায় শ্যুট করতাম৷'
বিজেপি-র নবান্ন অভিযানের পর গতকালই ট্যুইট করে গুন্ডামির অভিযোগ করেছিলেন অভিষেক৷ বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে কী পরিস্থিতি হত, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি৷ বাংলায় বিজেপি-কে না নিয়ে আনার জন্য মানুষকে ধন্যবাদও জানান অভিষেক৷ এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরে প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীও বলেন, পুলিশ চাইলে গতকাল গুলি চালাতে পারত৷ পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷