বিজয়া সম্মিলনীর মাধ্যমে বুঝে নেওয়া হল তৃণমূলের মহিলা কর্মী সমর্থকরা রাস্তায় নামছেন কি না? মন্ত্রী গ্রেফতারের পরেও প্রভাব গ্রামাঞ্চলে রয়েছে কি না তা বুঝে নিল শাসকদল। পুজোর পর দলের এই বিজয়া সম্মিলনীর সভাগুলি হয়ে উঠেছে কার্যত জনসংযোগ সভা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো দলের পুরনো নেতা-কর্মীদের বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। মঞ্চে তাঁদের সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে৷ তাঁদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।
advertisement
আরও পড়ুন: দূষণে ধুঁকছে দিল্লি, বিশেষ বিমানে ‘কৃত্রিম মেঘ’ থেকে বৃষ্টি নামানোর ভাবনা কেজরি সরকারের
বিজয়া সম্মিলনী থেকে দলের নজরে যে যে রিপোর্ট এসেছে – ১. স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের ঐক্যবদ্ধ চেহারাটা চোখে পড়ছে সব সভায়। ২. সভাগুলিতে রাজ্য কমিটির একজন অন্তত নেতা উপস্থিত থাকছেন। ৩. ১৯৯৮ সাল অর্থাৎ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার দিন থেকে যাঁরা দলের সঙ্গে ছিলেন সেই পুরনো নেতা-কর্মীদের সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে। ৪. জেলায় দলের সর্বস্তরের সাংগঠনিক নেতৃত্ব থাকছেন মঞ্চে।
আরও পড়ুন: ডান চোখ কাঁপলে খারাপ, বাম চোখ কাঁপলে? জানুন কোন অংশ কাঁপার অর্থ কী
সবমিলিয়ে দলের নতুনরা তো আছেনই, সঙ্গে পুরনো সিনিয়র নেতা-নেত্রীরাও বিজয়া সম্মিলনীর সভায়-মঞ্চে যথাযথ মর্যাদায় উপস্থিত থাকায় ও মাঠে নামায় সভাগুলির গুরুত্ব যেমন বাড়ছে, তেমনই ধারে ও ভারে বিরোধীদের বুঝিয়ে দেওয়া যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসই বাংলার মানুষের কাছে একমাত্র বিকল্প। অন্য কোনও দল নয়। সভাগুলি পরিণত হচ্ছে সমাবেশে।
৫) বহু জায়গায় কাদের দ্বন্দ্ব তাও জানা যাচ্ছে, জেলায় বিজয়া সম্মিলনীর সভাগুলিতে মঞ্চের ব্যাকড্রপে ব্যবহার হয়েছে দুটি ছবি। একদিকে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অন্যদিকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ দু’জনের কেউই উপস্থিত নেই সব সভায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের কাজ সামলাচ্ছেন। ভবানীপুর বিধানসভায়, দলের বিজয়া সম্মিলনীতে তিনি ছিলেন। ওই কেন্দ্রের বিধায়কও তিনি। আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের লোকসভা কেন্দ্রে।
কিন্তু তাঁদের ছবিকে সামনে রেখেই কর্মীদের ভিড় হচ্ছে। ফলে সশরীরে দুই হেভিওয়েট উপস্থিত না থাকলেও, তাঁদের ছবিকে ঘিরেই উৎসাহ-উদ্দীপনা কর্মীদের মধ্যে আনা হচ্ছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব প্রথমে ৫০০ সভার টার্গেট রাখলেও দেখা যাচ্ছে সভার সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। ওয়ার্ডগুলিতেও বিজয়া সম্মিলনী শুরু হয়ে গিয়েছে। এভাবে এই পর্যায়ে একবারে ৩০ লাখ সাংগঠনিক কর্মীকে মাঠে নামানোর সঙ্গে সঙ্গেই প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষের কাছে প্রত্যক্ষ ভাবে পৌঁছে যাচ্ছে দল, এমনটাই মত দলের অন্দরে।তৃণমূলের অন্দরের রিপোর্ট, জেলায় জেলায় সভাগুলিতে উপচে পড়ছে ভিড়৷ বিশেষ করে মহিলাদের উপস্থিতি নজর কাড়ছে সব সভাতেই। মহিলা ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রাখতে চায় তৃণমূল। তাই দলের মহিলা নেত্রীদের বিজয়া সম্মিলনীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা গিয়েছে।
আবীর ঘোষাল