দার্জিলিং সমতল সাংগঠনিক জেলা। প্রবল সাংগঠনিক দুর্বলতা। দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে সামঞ্জস্যের অভাব। তিনটি বিধানসভা আছে এই সাংগঠনিক জেলায় শিলিগুড়ি, মাটিগারা নকশালবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া- তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রেই তৃণমূলের শোচনীয় হার হয় ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের ফল অনুযায়ী দার্জিলিং লোকসভা আসনে পরাজয় হয়েছে শাসক দলের৷ এই সাংগঠনিক জেলার তিনটি বিধানসভায় অনেক পিছিয়ে শাসক দল। একমাত্র শিলিগুড়ি পৌরনিগমে ২০২২- এ ঘাসফুল ফুটলেও ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে কোন ওয়ার্ডেই জয়ের মুখ দেখেনি তৃণমূল কংগ্রেস।
advertisement
একদা গৌতম বনাম পাপিয়া দ্বন্দ্ব দুর্বল করেছে শাসক শিবিরকে। সম্প্রতি নিজের দলের কাউন্সিলরদের সঙ্গেই বোর্ড মিটিংয়ে বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন মেয়র গৌতম দেব।যার সুযোগ নিচ্ছে বিরোধী দল বিজেপি। সংগঠনে বদল আনা হয়েছে। চেয়ারম্যান পদে নিয়ে আসা হয়েছে নতুন মুখ টিব্রেওয়ালকে। বীরভূম, কলকাতা উত্তরের মতোই শিলিগুড়িতে হয়েছে ৯ জনের কোর কমিটি।কংগ্রেস থেকে যোগ দিয়েছেন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ শঙ্কর মালাকার। তাতেও আসন্ন ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনে ঘাসফুলের জয়ের রথ কি আদৌ ঘুরবে এই সাংগঠনিক জেলায়, এটাই এখন মাথা ব্যথার কারণ তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে।
এ দিনের বৈঠক শেষে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘জেতার সুযোগ সব সময়েই আছে। সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রচারে নামা হয়েছে। পুর এলাকার ফল বিধানসভায় ফেরানো হবে।তাহলে শিলিগুড়ি জয় সহজ হবে, কাউন্সিলররা সকলে সেই দায়িত্ব নিচ্ছে। সূত্রের খবর, বাঙালি অস্মিতাতেও বিশেষ নজর উত্তরবঙ্গে।বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে৷’
অন্যদিকে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুর, খেজুরি, ভগবানপুর, কাঁথি উত্তর, কাঁথি দক্ষিণ, রামনগর, এগরা, পটাশপুর- এই ৮ বিধানসভা নিয়ে কাঁথি সাংগঠনিক জেলা। শুভেন্দু অধিকারীর গড় এই কাঁথিতে জেলাপরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক বনাম বর্ষীয়ান নেতা অখিল গিরির দ্বন্দ্বে জেরবার শাসক শিবির। জেলা সভাপতি উত্তম গোষ্ঠীর নেতা পীযূষকান্তি পণ্ডা। যুব সভাপতিও উত্তম ঘনিষ্ঠ জালালউদ্দিন খান।
অভিযোগ, জেলায় তৃণমূলের দলীয় নেতৃত্বের একাংশের উপরে এখনও অদৃশ্য নিয়ন্ত্রণ রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর। লোকসভা নির্বাচনে কাঁথি কেন্দ্রে হার। খেজুরি, কাঁথি উত্তর ও কাঁথি দক্ষিণ, ভগবানপুর এই চার বিধানসভায় অনেকটা পিছিয়ে শাসক দল। কাঁথি সমবায় ভোটের ফল শাসক শিবিরের পক্ষে এসেছে। এই জেলার সব থেকে বড় সমস্যা অধিকারী পরিবারের একটা ছায়ার সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হচ্ছে।
অখিল গিরি এ দিনের বৈঠক শেষে বলেন, ‘আমাদের মধ্যে মতবিরোধ থাকবে। কিন্তু আমাদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। ভোটের সময়ে আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জোড়া ফুল চিহ্নকে জেতানোর চেষ্টা করব। ২০২১ সালে ৯ আসনে জিতেছিলাম। এবার আরও বেশি আসনে জিতব। ‘আমার পাড়া আমার সমাধানে’ জনসংযোগ আরও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।’
আবার উত্তম বারিক বলেন, ‘কোনও দ্বন্দ্ব নেই। এক সঙ্গেই সবাই চলছে। কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে রাজ্যের টাকা আটকানো কী হয়, মেদিনীপুরের মানুষ সেটা এবার বুঝিয়ে দেবে।’