ছোট্ট লাল রঙের গাড়ি.....WB24Y7058 । নিজের প্রিয় এই গাড়ি নিয়েই ভরা বর্ষায় অ্যাডভেঞ্চারে বেড়িয়ে পড়েছিলেন নৈহাটির বাসিন্দা সুজয় মণ্ডল। এই বছরের অক্টোবরে। গন্তব্য ছিল পৃথিবীর গভীরতম গিরিখাদ নেপালের মুক্তিনাথ পিক ।।
তিনজনের টিম। চালক সুজয়। স্ত্রীর কাঁধে থাকা-খাওয়ার দায়িত্ব। ছেলে নেভিগেটর। অপাশেদার টিমের সম্বল ছিল শুধুই জেদ।
নেহাটি থেকে এনএইচ টু ধরে বুদ্ধগয়া। সেখান থেকে ডানদিকে ঘুরে এনএইচ ৪২ ধরে পটনা, মুজফ্ফরপুর, রক্সৌল হয়ে নেপালের পোখরা। পোখরা ট্যুরিস্ট অফিস থেকে মুক্তিনাথ বা লোয়ার মুস্তাং ভ্যালি যাওয়ার পারমিট মিললেও, ছোট গাড়ি দেখে চোখ কুঁচকেছিলেন তাঁরাও।
advertisement
এরপরই শুরু আসল মজা....চড়াই পথের প্রতি বাঁকে লুকিয়ে বিপদ। একটু এদিক-ওদিক হলেই মৃত্যু নিশ্চিত।
ভরা বর্ষায় এমনিতেই পিচ্ছিল পাহাড়ি পথ ...জায়গায় জায়গায় ধস নেমে অগম্য রাস্তা.....দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে চাকা টেনে ধরেছে বড়, বড় পাথর, বোল্ডার।
বর্ষায় কালিগণ্ডকি নদীর তখন ভয়াল রূপ.....মাঝে মাঝেই খরস্রোতা নদী পথ কেটেছে। চল্লিশ কিলোমিটার পথ পেরতে লেগে গেছে ন’ ঘণ্টা।
কোবাং হোক বা জুমসম....কিংবা মারফা ভ্যালি।। পথের দুধারের দৃশ্য ভুলিয়েছে কষ্ট। কোথাও বাঁক ঘুরলেই উঁকি দিয়েছে অন্নপূর্ণা পিক। কোথাও অভ্যর্থনা জানিয়েছে শ্বেতশুভ্র ধৌলাগিরি। নেপালের কোল্ড ডেজার্টও তাঁদের দমাতে পারেনি।।
একেক সময়ে মনে হয়েছে আর এগোনো যাবে না।। এবার ফিরতে হবে।। পর মুহূর্তেই সব বাধা কাটিয়ে এগিয়ে গেছে গাড়ি। অবশেষে মুক্তিনাথ দর্শনে এসেছে শান্তি।
দুর্গম যে পথে শুধু বড় গাড়ি-ই চলে...সেখানে সুজয়দের ছোট গাড়ি কামাল করেছে।। তাঁর চলতি কা নাম গাড়ির ভরসায় এখন আরও সাহসী নৈহাটির বাসিন্দা। এখন থেকেই শুরু হয়ে গেছে আগামী পরিকল্পনা।