মুসা তালিব, ৭২ বছর বয়স। দক্ষিণ ২৪ পরগনা বারুইপুরের ধপধপির বাসিন্দা। ধর্মপ্রাণ মুসলিম আজমিরশরিফ যাওয়ার আগে গত ৭ মার্চ দিল্লির নিজামুদ্দিনে পৌঁছন। ১২ এবং ১৩ মার্চ ধর্মীয় সমাবেশের পর ২২ মার্চের ট্রেন ধরে তাঁর ফেরার কথা ছিল কলকাতায়। এরপর ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ২৩ শে মার্চ বিমানে করে কলকাতায় ফেরেন তিনি। বারুইপুরের বাড়িতে ফেরার পরই দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা প্রশাসন খোঁজ নিয়ে তাঁকে সরাসরি নিয়ে আসে টালিগঞ্জের এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে।হাসপাতালের চিকিৎসকরা কোনরকম দেরি না করে দ্রুত তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করে নেন। এরপর দু'দফায় তার লালা রসের পরীক্ষা করা হয়। তবে দুই দু'বারই পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় চিকিৎসকরা স্পষ্ট করেন করোনা আক্রান্ত নন মুসা তালিব। রবিবার তাকে হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ করে দেওয়া হবে।
advertisement
ধর্মপ্রাণ প্রাক্তন শিক্ষক মুসা তালিবের বক্তব্য, "যত দোষ, নন্দ ঘোষ। যখন নিজামুদ্দিনের এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল তখন দেশে করোনা আতঙ্ক ছিল না। এমনকি এরপরও যতদিন তারা দিল্লিতে ছিলেন, নিজামুদ্দিন দরগায় তাঁরা একদম আলাদাই ছিলেন। কেউ দরগার বাইরে এক মুহূর্তের জন্যও বাইরে যাননি। যা হচ্ছে সবকিছুই অপপ্রচার। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জনতা কার্ফুর পরেও বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নানা অনুষ্ঠান হয়েছে। এমনকি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী, বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করেছেন। সে বেলায় তো কেউ কোন দোষ দেখেনি। সমস্ত দোষ একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের উপর ইচ্ছাকৃতভাবে চাপানো হচ্ছে যাতে গোটা দেশজুড়ে সেই সম্প্রদায়কে সহজেই বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া যায়।
করোনা আক্রান্ত সন্দেহে টালিগঞ্জ এমআর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি থাকা দিল্লির নিজামুদ্দিন ফেরত বারুইপুরের বাসিন্দা এই বৃদ্ধ যদিও রাজ্য সরকারের ভূমিকায় অত্যন্ত খুশি। হাসপাতালে যেভাবে চিকিৎসা হয়েছে এবং সর্বোপরি চিকিৎসক-নার্স স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারে তিনি আপ্লুত। তার একটাই আক্ষেপ যদি নিজামুদ্দিনে কোন ভুল হয়ে থাকে, তবে কেন কেন্দ্রীয় সরকার বা দিল্লির কেজরিওয়াল সরকার তাঁদের সতর্ক করে নি!" তবে ২১ দিনের লকডাউন কে তিনি সর্বান্তকরণে সমর্থন জানিয়েছেন। মানুষ যেন আরও সতর্ক ও সচেতন থাকে। কেউ যেন প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় না বেরোয়, সেই আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
তবে যে বিষয়টা উঠে আসছে গত ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা WHO গোটা বিশ্বে করোনাকে প্যানডেমিক বা অতিমারি আখ্যা দিয়েছিলেন। তারপরেও দিল্লির নিজামুদ্দিন এর এই ধর্মীয় সমাবেশ কিভাবে অনুষ্ঠিত হল, সে ব্যাখ্যা ধর্মপ্রাণ এই বৃদ্ধের কাছে ছিল না।
AVIJIT CHANDA