তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যুব কংগ্রেসের সভাপতি। সচিত্র ভোটার কার্ডের দাবিতে কংগ্রেস নেত্রীর ডাকে মহাকরণ অভিযান হয়। সকাল ১০টা থেকে জমায়েত শুরু হয়। মোট পাঁচটি এলাকা দিয়ে মিছিল করে এগোতে থাকেন যুব কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকেরা। রাস্তায় নামেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন সৌগত রায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মদন মিত্রের মতো নেতারা। সেই অভিযানে পুলিশ গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে ১৩ জনের প্রাণ যায়।
advertisement
আরও পড়ুন: তৃণমূলের ২১ জুলাই, বিপাকে ২০ পরিযায়ী শ্রমিক! ঘটনা জানলে আকাশ থেকে পড়বেন
কারা ছিলেন সেই ১৩ জন ?
১. শ্রীকান্ত শর্মা
২. দিলীপ দাস
৩. মুরারী চক্রবর্তী
৪. রতন মণ্ডল
৫. কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
৬. বিশ্বনাথ রায়
৭. অসীম দাস
৮. কেশব বৈরাগী
৯. রঞ্জিত দাস
১০. প্রদীপ রায়
১১. বন্দনা দাস
১২. ইনু মিঞা
১৩. আবদুল খালেক
তৎকালীন সরকারের বক্তব্য ছিল, চারদিক থেকে মহাকরণ ঘিরতে চাইছিল তৃণমূল সমর্থকরা। এ হেন ঘেরাওয়ের বিরোধিতা করতেই গুলিচালনা। সেদিনের ঘটনার সাক্ষী মদন মিত্র, সুব্রত বক্সী, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বিলক্ষণ জানেন, সেদিন প্রাণ যেতে পারত তৃণমূল নেত্রীর। তবু তিনি পিছপা হননি। সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, “ও বরাবর ডানপিটে ছিল। আমরা সব আন্দোলনেই ওকে নিয়ে যেতাম। তাই আজও ওঁর থেকেই প্রতি বছর তারুণ্যের মন্ত্র শিখতে আসে হাজার হাজার কর্মীরা।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিন যখন মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পুলিশের গুলি চলার সম্ভাবনা তৈরি হতেই সেদিন মমতার নিরাপত্তারক্ষী সার্ভিস রিভলবারটি উঁচিয়ে ধরেছিলেন। তারপর গঙ্গা দিয়ে বহু জল গড়িয়ে গিয়েছে। তবে ওই দিনে ১৩ জনের মৃত্যুকে কখনও ভোলেনি তৃণমূল। শহিদ দিবস যেন তৃণমূল কর্মীদের কাছে সেই স্মৃতিস্মরণ আর পাশাপাশি উজ্জীবনের মন্ত্র। এই একুশে জুলাই মমতাকে ছোট চারা গাছ থেকে বনস্পতিতে পরিণত করেছে। একুশের অনুপ্রেরণা থেকেই মমতা সাহস পেয়েছেন সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের মতো বড় আন্দোলনকে সামনে থেকে পরিচালনা করার। শ্রমের ফসলই আসে ২০১১ সালে। মুখ্যমন্ত্রী হলেন মমতা।