ব্লুমবার্গে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে এনডিটিভি-র রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতের রাষ্ট্রপতিকে লেখা হলেও আসলে ওই চিঠির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেই ভারত-চিন সম্পর্কের উন্নতিতে বার্তা দিয়েছিলেন চিনা প্রেসিডেন্ট৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় সরকারের এক শীর্ষ কর্তার দাবি, আমেরিকার সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে চিনের স্বার্থ বিঘ্নিত যাতে না হয়, সে বিষয়ে জোর দিয়েছিলেন জিনপিং৷ এমন কি, ভারতের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষার জন্য কোন আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, চিঠিতে তারও উল্লেখ করে দিয়েছিলেন জিনপিং৷
advertisement
ওই রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, জুন মাস থেকেই চিনা প্রেসিডেন্টের এই ইতিবাচক বার্তাকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে থাকে নয়াদিল্লি৷ কারণ ততদিনে ট্রাম্প ভারতের উপরেও শুল্কের বোঝা চাপানোর হুমকি দিতে শুরু করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ শুধু তাই নয়, পহলগাঁও হামলার পর ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে শুরু হওয়া সামরিক সংঘাত বন্ধ করার কৃতিত্বও নিতে শুরু করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷
ট্রাম্পের শুল্ক ছোবলে বিদ্ধ হয়ে নিজেদের ফাটল ধরা সম্পর্ক জোড়া লাগাতে উদ্যোগী হয় বেজিং এবং নয়াদিল্লি৷ ২০২০ সালে গালওয়ান সংঘর্ষের পর থেকেই ভারত এবং চিনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছিল৷ কিন্তু ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির চাপ ফের কাছাকাছি নিয়ে আসল দুই দেশ৷ সীমান্ত সহ বিভিন্ন বিষয়ে দু দেশের মধ্যে ঝুলে থাকা বিবাদ দূর করতে আলোচনায় সম্মত হয় বেজিং এবং নয়াদিল্লি৷
এর ফলস্বরূপ গত কয়েক মাসে ভারত এবং চিনের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতির প্রমাণ হিসেবে বেশ কিছু ঘটনা সামনে এসেছে৷ দু দেশের মধ্যে ফের সরাসরি বিমান যোগাযোগ শুরু হয়েছে৷ ভারতে ইউরিয়া রফতানির উপরে কড়াকড়ি অনেকটাই শিথিল করেছে বেজিং৷ পাল্টা নয়াদিল্লিও চিনা নাগরিকদের ভিসা দিতে শুরু করেছে৷
মার্চ মাসে যখন প্রথম ট্রাম্প যখন চিনা পণ্যের উপরে শুল্কের বোঝা একধাক্কায় কয়েক গুন বাড়িয়ে দেওয়ার পরই ভারতের প্রতি ইতিবাচক বার্তা দিতে থাকে চিন৷ আমেরিকার ক্ষমতার আস্ফালনের বিরুদ্ধে ভারত এবং চিনকে যৌথ ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার বার্তা দেন চিনা বিদেশমন্ত্রী৷ এর পর শি জিনপিং নিজেও হাতি এবং ড্রাগনের একসঙ্গে নাচই একমাত্র বিকল্প ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন৷
জুলাই মাস চিন সরকারের শীর্ষ কূটনীতিকরাও একই সুরে কথা বলতে শুরু করেন৷ চিনের সরকারি মুখপাত্র গ্লোবাল টাইমস-এও আমেরিকার শুল্ক আগ্রাসনেকে প্রতিরোধ করতে এশিয়ার দুই মহাশক্তির কাছাকাছি আসার উপরে জোর দেওয়া হয়৷
চলতি সপ্তাহেই চিন সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির৷ সেখানে সরাসরি চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তাঁর আলোচনার জোরাল সম্ভাবনা রয়েছে৷ গত সাত বছরে প্রথমবার চিন সফরে যাচ্ছেন মোদি৷ শেষ বার গত বছর কাজানে মুখোমুখি হয়েছিলেন মোদি-জিনপিং৷