এ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম উপকূলের নিঙ্গালু রিফ অংশে দশ বছর ধরে ৫৪টি হোয়েল শার্কের বৃদ্ধির উপর সমীক্ষা চালিয়েছেন গবেষকরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, অল্প বয়সে পুরুষ ও স্ত্রী- উভয় হোয়েল শার্কই দ্রুত হারে বাড়তে থাকে। এই সময় এদের বার্ষিক বৃদ্ধির হার ৮-১২ ইঞ্চি (২০-৩০ সেন্টিমিটার)। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর পুরুষদের থেকে আকারে অনেকটাই বড় হয় স্ত্রী হোয়েল শার্করা।
advertisement
সমুদ্রের তলদেশে থাকা শার্ক নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অফ মেরিন সায়েন্সের গবেষক মার্ক মিকান একাধিক তথ্য সামনে এনেছেন। তা থেকে জানা যায়, সময় বেশি লাগলেও পুরুষদের তুলনায় অনেকটাই বড় হয় স্ত্রী শার্ক। কিন্তু কী ভাবে ? এ ক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যানটি দেখে নেওয়া যেতে পারে। গবেষণা বলছে, পুরুষ শার্করা স্ত্রীদের তুলনায় একটু দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পায়। এবং বছর তিরিশের পর যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যায়, যখন বংশবিস্তারে সক্ষম হয়, তখন প্রায় ২৬ ফুট (৮ মিটার) দীর্ঘ হয় এরা। অন্যদিকে ৫০ বছর বয়সে একটি স্ত্রী শার্ক যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়, তখন সেটি ৪৬ ফুট (১৪ মিটার) দীর্ঘ হয়। এ পর্যন্ত সব চেয়ে বড় যে হোয়েল শার্কটির সন্ধান পাওয়া গেছে, তা প্রায় ৬০ ফুট (১৮ মিটার) দীর্ঘ। যেহেতু স্ত্রী শার্কগুলি বড় হয় তাই এই অতিকায় শরীরের মধ্যে একাধিক ছোট্ট শার্ক নিরাপদে বাস করতে পারে বলে মনে করছেন প্রাণী বিজ্ঞানীরা।
এ ক্ষেত্রে মিকানের দাবি, তাঁদের গবেষণাই প্রথমবার প্রমাণ করেছে যে, পুরুষ ও স্ত্রী শার্কের বৃদ্ধির হার ভিন্ন। কারণ এর আগে মৃত শার্কের মেরুদণ্ড ও শরীরের অবশিষ্ট অংশ দেখেই তাদের বৃদ্ধি ও বয়সের অনুমান করতেন প্রাণী বিজ্ঞানীরা। কাজেই নমুনাও খুব কম পাওয়া যায়। তাই বৃদ্ধির একটি যথাযথ পরিসংখ্যান বা সুনিশ্চিত তত্ত্ব পাওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়।
তবে এই প্রাণীগুলির সংরক্ষণ বর্তমানে অত্যাবশক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনই জানাচ্ছেন মিকান। এর পিছনে যথেষ্ট কারণও রয়েছে । এই প্রাণীরা প্রাপ্তবয়স্ক হতে সাধারণত ৩০ বছর, অনেক ক্ষেত্রে তারও বেশি সময় নেয়। তার পরই প্রজননে বা বংশবিস্তারে সক্ষম হয়। কিন্ত এই দীর্ঘ সময়ের মাঝে মৎসশিকারীদের হাতে কিংবা জাহাজের ধাক্কায় প্রাণ যায় এদের । এর জেরে পরবর্তী প্রজন্ম পৃথিবীর আলোই দেখতে পায় না । তাই হোয়েল শার্ককে বাঁচাতে সচেতন হওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি।