১৯ জনের মৃত্যু। আগুন জ্বলল মন্ত্রীদের বাড়িতে, সংসদে। তার পরও শান্ত হল না নেপাল। শুধু নেপাল নয়, ভারতের একাধিক পড়শি দেশেই দেখা গিয়েছে গণ অভ্যুত্থান। বাংলাদেশ হোক বা শ্রীলঙ্কা, গণবিক্ষোভে টালমাটাল হয়েছে একাধিক দেশ। গণঅভ্যুত্থানে বদলে গিয়েছে রাজনৈতিক পালাবদল।
২০২৪ সালের অগাস্ট মাসে ছাত্র আন্দোলনের হাত ধরেই বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদল হয়। গণবিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হয়। দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন মুজিব কন্যা। এবার নেপালে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান ঘিরে গণবিক্ষোভ শুরু হয়। সেই বিক্ষোভের জেরে জ্বলছে নেপাল।
advertisement
বেকারত্ব এবং দুর্নীতি। মূলত এই দুটি কারণকে সামনে রেখেই নেপালের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমতে শুরু করে। তবে অনেকেই জানেন না, নেপালে আগুন জ্বলার পিছনে রয়েছে একটি ছোট্ট ঘটনা। একটি ছোট্ট মেয়ের দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঝামেলার সূত্রপাত। সেই ঘটনাই ক্ষিপ্ত করে তুলেছিল জনগণকে, বিশেষত যুব সমাজকে।
এর পর নেপাল সরকারের সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত। ৪ সেপ্টেম্বর নেপাল সরকার ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপের মতো ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করে দেয়। সেই ঘটনা জেন জি-কে আরও বিক্ষুব্ধ করে তোলে।
আরও পড়ুন- রাতভর সেনার টহল, রাতের ভিডিও বার্তা সেনাপ্রধানের সম্প্রীতি বজায় রাখার আর্জি
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময়ও ঠিক একই ঘটনা ঘটেছিল। ১৪ বছর বয়সি মুয়াবিয়া সায়াসনেহ বাড়ির গলির দেওয়ালে একটি গ্রাফিতি এঁকেছিল। গ্রাফিতিতে লেখা হয়, ‘এবার আপনার পালা, ডক্টর’। সিরিয়ার রাষ্ট্রপতি বাশার আল-আসাদ-এর উদ্দেশে লেখা ছিল ওই গ্রাফিতি। সেটাই আখেরে মুখোশ খুলে দেয় স্বৈরাচারী শাসকের। তার পর থেকে মুয়াবিয়া ও তার বন্ধুদের গ্রেফতারর করে চলে অকথ্য অত্যাচার। সেই ঘটনাই সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ বাঁধিয়ে দেয়।
অগাস্ট মাসে নেপালের ললিতপুর জেলার হরিসিদ্ধিতে একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সেদিন রাস্তার ধারে ১১ বছরের এক নাবালিকা দাঁড়িয়ে ছিল। তখন তাকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে নেপালের এক মন্ত্রীর গাড়ির চালক। বাচ্চাটি গুরুতর আহত হয়। এর পর স্থানীয়রা ধাওয়া করে ওই গাড়ির চালককে ধরে ফেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান সত্ত্বেও মন্ত্রীর গাড়ির চালককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পর থেকে ক্ষোভ জমতে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে। নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি ওলি ওই দুর্ঘটনাকে ‘ছোট্ট ঘটনা’ বলে মন্তব্য করে বসেন। তার পর থেকে মেয়েটির দুর্ঘটনার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। #JusticeForTheGirl এবং #HatyaraSarkar ট্রেন্ড করতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বলা হচ্ছে, সেই ঘটনার পর থেকেই নেপালে ক্ষোভের আগুন জ্বলতে থাকে।

