এদিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রধান হুঁশিয়ারি দেন, জরুরি ভিত্তিতে নতুন সরকার নিয়োগ না করা হলে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ভেঙে পড়বে। নন্দলাল ওয়েরাসিংহে জানান, শুক্রবারের মধ্যে একটি নতুন প্রশাসনের দায়িত্ব নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ নয়তো দেশ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে। “অর্থনীতি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়বে এবং কেউ তাকে বাঁচাতে পারবে না,” বলেন তিনি। “এক মাসের কিছু আগে যখন আমি দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখনই দেশ দ্রুত বিপর্যয়ের দিকে ঢলতে শুরু করেছিল। আমি ভেবেছিলাম আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব, কিন্তু সোমবারের ঘটনাগুলির পর আর কিছুই কাজ করছে না,” বলেন নন্দলাল।
advertisement
আরও পড়ুন- আসছে পুষ্পা: দ্য রুল! আল্লু অর্জুনের পারিশ্রমিক আর বাজেট শুনে হাঁ সিনেপ্রেমীরা
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না ফিরলে এক সপ্তাহের মধ্যে পদত্যাগ করার হুমকিও দিয়েছিলেন নন্দলাল ওয়েরাসিংহে। “আমি রাষ্ট্রপতি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের স্পষ্টভাবে বলেছি যে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত না হলে আমি পদত্যাগ করব,” সাংবাদিকদের বলেন নন্দলাল ওয়েরাসিংহে।
শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকট চলাকালীন নিরাপত্তা বাহিনী বুধবার জনতার হিংসার পর শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে রাস্তায় নেমেছে। সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী এবং রাষ্ট্রপতি রাজাপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে সোমবার থেকে নয়জনের মৃত্যু ঘটেছে, ২০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
বিরোধী দলগুলো রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে ঐক্যবদ্ধ সরকারের বিষয়ে রাজাপক্ষের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং পরিবর্তে তাঁর পদত্যাগ দাবি করে।
আরও পড়ুন- জনসাধারণের সম্পত্তির ক্ষতি করলেই প্রকাশ্যে গুলি করা হতে পারে: শ্রীলঙ্কা
লুটপাট বা হিংসার ঘটনায় জড়িত যে কাউকে ‘দেখামাত্র গুলি করার’ আদেশ জারি হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। দেশব্যাপী কার্ফিউ বলবৎ করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপকভাবে জনসাধারণের বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করেছে। সামরিক অভ্যুত্থানের গুজবকে উড়িয়ে শ্রীলঙ্কার সামরিক প্রধান কমল গুনারত্নে বলেন, “কখনই ভাববেন না যে আমরা ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছি। সেনাবাহিনীর এমন কোনও ইচ্ছা নেই।” তিনি জানান, সম্ভবত আগামিকাল, বৃহস্পতিবার কার্ফিউ তুলে নেওয়া হবে। “পরিস্থিতি ভালো হচ্ছে এবং আমরা আগামিকাল সকালের মধ্যেই কার্ফিউ তুলে নেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী,” বলেন সামরিক প্রধান।
সোমবারের হিংসার ঘটনা বৃদ্ধির কয়েক ঘণ্টা পরে, রাষ্ট্রপতির বড়ো ভাই মাহিন্দা রাজাপক্ষ জানান, তিনি একটি নতুন, ঐক্যবদ্ধ সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের আশা নিয়ে পদত্যাগ করছেন। গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারকারী পরিবারের প্রধান রাজাপক্ষকে পরে বিক্ষুব্ধ জনতা ঘেরাও করলে তাঁকে তাঁর কলম্বোর বাসভবন থেকে উদ্ধার করা হয়।