ইসলামাবাদ: ভয়ঙ্কর অবস্থা পাকিস্তানে। ইতিহাসের অন্যতম বড় বন্যায় পাকিস্তানে মৃত্যুমিছিল। টানা ভারী বর্ষণে বিধ্বস্ত পাকিস্তান। একাধিক নদীর জল উপচে পড়ায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সরকারি হিসেবে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৮৫০ জনের বেশি মানুষ। শুধু পঞ্জাব প্রদেশেই মৃতের সংখ্যা ১৯৫। প্লাবিত হয়েছে ২,৩০০-রও বেশি গ্রাম, ঘরছাড়া প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ।
advertisement
সবচেয়ে গুরুতর অবস্থা পঞ্জাব প্রদেশে। ভারতের সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিনটি আন্তঃসীমান্ত নদী – চন্দ্রভাগা, ইরাবতী এবং শতদ্রু উপচে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের মতে, একসঙ্গে এই তিন নদীর জলে ভাসার ঘটনা বিরল। বহু প্রবীণ অধিবাসীরাই জানাচ্ছেন, এর আগে কখনও এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখেননি।
পঞ্জাব প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ-র মুখ্য আধিকারিক ইরফান আলি জানিয়েছেন, এবারের দুর্যোগে ৮০০-রও বেশি নৌকা উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্লাবিত অঞ্চল থেকে বিপদগ্রস্তদের সরিয়ে আনতে নিযুক্ত রয়েছেন ১,৩০০-রও বেশি উদ্ধারকর্মী। ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে ৫০০টিরও বেশি। অগাস্টের মাঝামাঝি খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে লাগাতার বৃষ্টিতে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। সেখানে কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রাণ হারান অন্তত ৪০০ জন।
স্থানীয়রা বলছে, গত প্রায় ৫০ বছরে এত ভারী বৃষ্টি কখনও দেখেনি তারা। শুধু কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি নয়, বরং এই ভয়াবহ বন্যার জন্য পাকিস্তান সরাসরি ভারতকে দায়ী করছে। ভারতের নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর থেকে দুটি বাঁধ খোলার পর প্রবল জলে তলিয়ে গেছে পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশ।
পরিস্থিতির উন্নতির আশা এখনই দেখা যাচ্ছে না অবশ্য। পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ সতর্ক করে জানিয়েছে, আগামী দিনে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলেই আশঙ্কা। এদিকে, কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতির মাঝেও ‘মানবিকতার খাতিরে’ পাকিস্তানকে সতর্ক করেছে ভারত।