জানা যাচ্ছে, অক্সফোর্ডের গবেষকরা এমন একটা নিউরোইমেজিং পদ্ধতি তৈরি করেছেন, যার সাহায্যে আমরা বলে দিতে পারি আমাদের চোখে কে কতখানি সুন্দর, অর্থাৎ কে কতটা কিউট বা আকর্ষণীয়। এ নিয়ে সাম্প্রতিক একটি গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই কিউটনেস রেটিং সিস্টেমে শুধু বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্কেরই উন্নতি হবে না, পাশাপাশি মস্তিষ্কের কর্মপদ্ধতি নিয়ে আমরা আরও জানতে পারব।
advertisement
এই নতুন পদ্ধতিতে দেখা যাচ্ছে, যখনই আমরা কোনও শিশু বা এমন কোনও জীবন্ত প্রাণীকে দেখি, যাদের আমরা মিষ্টি বা কিউট মনে করি, তখন আমাদের মস্তিষ্কের অরবিটোফ্রন্টাল কর্টেক্স অংশটি সক্রিয় হয়। এই অংশ আমাদের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই অংশটি চোখের ঠিক পিছনে থাকে এবং তখনই সক্রিয় হয়, যখন আমরা সুখকর অনুভূতি সৃষ্টিকারী কোনওকিছুকে দেখি। এই গবেষণায় নিউরোইমেজিং পদ্ধতির সাহায্যে গবেষকরা দেখতে চেয়েছেন, কীভাবে অরবিটোফ্রন্টাল কর্টেক্স কাজ করে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মর্টেন এল ক্রিঙ্গেনবাকের মতে, যখনই অরবিটোফ্রন্টাল কর্টেক্স সক্রিয় হয়, তখন কোনও ব্যক্তি, প্রাণী বা বস্তুর সৌন্দর্য বা 'কিউটনেস' আমাদের মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে। এটা সম্পূর্ণ স্নায়বিক একটি প্রক্রিয়া। অধ্যাপক ক্রিঙ্গেলবাকের ব্যাখ্যা, আমাদের প্রজাতি হাজার হাজার বছর ধরে বিবর্তিত হয়ে চলেছে। কিছু প্রাণী জন্মের পর থেকে হাঁটা শুরু করে, কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে এমনটা হয় না। এই সমস্ত প্রক্রিয়াই মস্তিষ্কের কাজের গতির ওপর নির্ভর করে।
আমাদের মস্তিষ্কের ধাপে ধাপে উন্নতি তার গঠন ও ক্ষমতাকে আরও উন্নত করার সুযোগ দেয়। অরবিটোফ্রন্টাল কর্টেক্স আমাদের শরীরের গঠনের দিকে নজর রাখে, এবং সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষমতাতেও প্রভাব ফেলে। অধ্যাপক ক্রিঙ্গেলবাকের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বোঝার জন্য নিউরোইমেজিং পদ্ধতি তৈরি করা হয়েছে। এটা মস্তিষ্কের প্রতিটি সেকেন্ডের কাজের দিকে নজর রাখে এবং একটি কিউটনেস রেটিংও দেয়।
গবেষকদের মতে, এই ম্যাপিং সিস্টেম কোনও ব্যক্তিকে আরও ভাল মানুষ হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। একটা শিশুর মিষ্টত্ব তার ও তার বাবা-মায়ের মধ্যে তৈরি হওয়া আচরণগত সমস্যাগুলোও কমিয়ে আনবে। পাশাপাশি শিশুর জন্মের পর, এর সাহায্যে মা অবসাদ থেকেও বেরিয়ে আসতে পারবেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
