পাঁচ দিনের চিন সফরে গিয়েছেন মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতি। মঙ্গলবার ফুজিয়ান প্রদেশে বিজনেস ফোরামে ভাষণ দিতে গিয়ে চিনকে মলদ্বীপের ‘ঘনিষ্ঠ মিত্র’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। মুইজ্জু বলেন, ‘চিন মলদ্বীপের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং উন্নয়নের সহযোগী’। ভাষণে জিনপিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন মুইজ্জু। তাঁর কথায়, ‘এই প্রকল্পই মলদ্বীপের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো তৈরি করেছে’।
advertisement
এরপরই মুইজ্জু চিনকে মলদ্বীপে আরও বেশি পর্যটক পাঠানোর আর্জি জানান। তাঁর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে পোস্ট করা রিডআউট অনুযায়ী মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘কোভিডের আগে মলদ্বীপে সবচেয়ে বেশি আসতেন চিনা পর্যটকরাই। আমার অনুরোধ, চিন যেন আমাদের দেশে আরও বেশি করে পর্যটক পাঠায়’। শুধু তাই নয়, মলদ্বীপে চিনের সঙ্গে জোট বেঁধে পর্যটন অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য ৫০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন মুইজ্জু।
মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতির ‘আরও বেশি চিনা পর্যটক পাঠানোর আর্জি’কে কূটনীতির অংশ হিসেবেই দেখছেন রাজনীতির কারবারিরা। নতুন বছরের শুরুতে লাক্ষাদ্বীপ সফরের ছবি পোস্ট করে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভারতের দ্বীপগুলিতে ঘুরতে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এখান থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। মলদ্বীপ মনে করে, ভারত তাদের পর্যটনের সঙ্গে টক্কর নিতে চাইছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং ভারতীয়দের উদ্দেশ্যে অশালীন আক্রমণ করে বসেন মুইজ্জু সরকারের তিন মন্ত্রী। সেই নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। বিপদ বুঝে তিন মন্ত্রীকে বরখাস্ত করে মলদ্বীপ সরকার। কিন্তু ততক্ষণে ‘বয়কট মলদ্বীপ’ ট্রেন্ড শুরু হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। লাখ লাখ পর্যটক মলদ্বীপের বুকিং বাতিল করেন। এসবের মধ্যেই চিনের কাছে ‘আরও বেশি’ পর্যটক পাঠানোর আর্জি জানালেন মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতি।
২০২৩ সালে মলদ্বীপের পর্যটন মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, দ্বীপরাষ্ট্রে সর্বাধিক পর্যটক গিয়েছে ভারত থেকে। সংখ্যাটা ২০৯,১৯৮। দ্বিতীয় স্থানে রাশিয়া। পর্যটক সংখ্যা ২০৯,১৪৬। ১৮৭,১১৮ পর্যটক নিয়ে তৃতীয় স্থানে চিন। তবে কোভিডের আগে প্রতি বছর প্রায় ২.৮০ লক্ষ চিনা পর্যটক ভিড় জমাতেন মলদ্বীপে। কিন্তু চার বছরের লকডাউন এবং আর্থিক মন্দার কারণে ধুঁকছে জিনপিংয়ের দেশ। দেশীয় পর্যটনকে পুনরুজ্জীবিত করতে চাইছে তারা। এই পরিস্থিতিতে মুইজ্জুর আর্জি কতটা কাজে দেবে তা সময়ই বলবে।