পেজার কী? এটি একটি ছোট যোগাযোগ যন্ত্র, যা বার্তা পাঠানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। ৮০-এর দশকে সারা বিশ্বে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হl। তবে, মোবাইল এবং অন্যান্য প্রযুক্তির আবির্ভাবের সাথে, পেজার প্রায় অদৃশ্য হয়ে গেছে। কিন্তু হিজবুল্লাহর মতো অনেক সন্ত্রাসী সংগঠন এবং অপরাধীরা এখনও পেজার ব্যবহার করে। কারণ এটি মোবাইল বা অন্যান্য যোগাযোগ যন্ত্রের তুলনায় অনেক বেশি নিরাপদ বলে মনে করা হয়৷
advertisement
আরও পড়ুন : লেবানন জুড়ে রহস্যময় পেজার বিস্ফোরণ, আহত হাজার হাজার মানুষ, মৃত ৮! নেপথ্যে ইজরায়েল?
কিভাবে একটি পেজার কাজ করে? সহজ ভাষায়, আপনি যদি পেজারের মাধ্যমে কাউকে বার্তা পাঠাতে চান, তবে প্রথমে আপনার ডিভাইসে রিসিভারের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি সেট করতে হবে তারপরেই আপনি বার্তা পাঠাতে পারবেন। পেজারে ফোন করার সুবিধা নেই। পেজার প্রধানত তিন প্রকার। প্রথমটি হল ওয়ান ওয়ে পেজার, যাতে শুধুমাত্র মেসেজ পাওয়া যায়। দ্বিতীয়টি একটি দ্বিমুখী পেজার, যেখানে বার্তা পাঠানোর পাশাপাশি বার্তা গ্রহণে সুবিধা রয়েছে এবং তৃতীয়টি একটি ভয়েস পেজার যাতে ভয়েস রেকর্ড করে বার্তা পাঠানো যায়।
মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য প্রযুক্তির তুলনায় পেজারগুলিকে খুব নিরাপদ বলে মনে করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে এটিকে অনুসরণ করা কঠিন। এমনকি একটি পেজার থেকে পাঠানো বার্তাগুলিও ট্র্যাক করা কঠিন, এই কারণেই হিজবুল্লাহর মতো সংগঠনগুলি তাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে এটি ব্যবহার করে।
আরও পড়ুন : পেজার বিস্ফোরণে ছারখার লেবানন, মৃত ১১, আহত বহু, ইজরায়েলকে হুঁশিয়ারি হিজবুল্লাহর
ডেটা বিশ্লেষক রাল্ফ বেডাউন জানিয়েছেন, পেজারে একটি লিথিয়াম ব্যাটারি রয়েছে। পেজার হ্যাক করা হলে এটি অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়৷ তারপরে একটি প্রক্রিয়া শুরু হয় যাকে বলা হয় ‘থার্মাল রানওয়ে’ প্রক্রিয়া।এই প্রক্রিয়ায়, একটি রাসায়নিক শৃঙ্খল প্রতিক্রিয়া ঘটে এবং হঠাৎ ব্যাটারির তাপমাত্রা এত বেড়ে যায় যে এটি একটি বিশাল বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। তবে, রালফ বলেছেন যে একসাথে এত পেজার বিস্ফোরণ করা সম্ভব নয়। পেজারে ত্রুটি থাকলে তবেই সেটি সম্ভব৷ হয়তো পেজারগুলি সেই ত্রুটিগুলিও ইচ্ছাকৃত সৃষ্টি করা হয়েছিল৷
পেজার ব্লাস্টের পেছনে আরেকটি তত্ত্বও উঠে আসছে। নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক মাস আগে তাইওয়ানের এক কম্পানিকে হিজবুল্লাহ প্রায় পাঁচ হাজার পেজার অর্ডার করেছিল। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কাছে সেই খবর ছিল৷ তারা প্রতিটি পেজারে তিন গ্রাম করে বিস্ফোরক ভরেছিল। নিউইয়র্ক টাইমসের মতে, পেজারগুলি লেবাননে পৌঁছানোর আগেই ইজরায়েলে আটক করা হয়। তারপরই সেগুলির মধ্যে বারুদ বিষ্ফোরক ভরে দেওয়া হয়েছিল৷