যুগান্তকারী এই গবেষণার জন্য বিজ্ঞানীরা এর নিকটতম জীবিত আত্মীয়, ধূসর নেকড়ের ডিএনএ ব্যবহার করেছেন। প্রসঙ্গত প্রাগৈতিহাসিক যুগে উত্তর আমেরিকা জুড়ে ঘুরে বেড়ানো ডায়ার উলফ ছিল দুর্ধর্ষ শিকারি। এরা ধূসর নেকড়েদের চেয়ে আকারে বড়, এদের পশম একটু মোটা এবং চোয়াল শক্তিশালী।
“আমরা কেবল এক শিশি রক্ত নিতে পারি, ইপিসি আলাদা করতে পারি, কালচার করতে পারি এবং সেগুলো থেকে ক্লোন করতে পারি, আর এগুলোর ক্লোনিং দক্ষতা বেশ ভাল, এই ধারণাটি আমাদের কাছে গেম চেঞ্জার বলে মনে হয়,” হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি) উভয়েরই জেনেটিক্সের অধ্যাপক এবং কলসালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জর্জ চার্চ বলেন টাইম ম্যাগাজিনকে। ধনকুবের এলন মাস্ক এই খবরের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নিজের সুপ্ত ইচ্ছে পোস্ট করেছেন এক্স হ্যান্ডলে। বিজ্ঞানীদের কাছে তাঁর আর্জি, এ বার ফিরিয়ে আনা হোক উলি ম্যামথের শাবককেও৷
advertisement
জন্মের পর, ডায়ার নেকড়ের ছানাগুলো কয়েকদিন ধরে একজন সারোগেট মায়ের কাছ থেকে খাওয়া শুরু করে৷ এর পর কলোসাল টিম তাদের বোতল থেকে খাওয়ানো শুরু করে। সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা এখন সুস্থ তরুণ ভয়ঙ্কর নেকড়ের মতো জীবনযাপন করছে। কিন্তু অন্যান্য নেকড়ে প্রজাতির থেকে এই ছানাগুলোর আচরণ আলাদা। মানুষের উপস্থিতিতে কুকুরছানারা যে উচ্ছ্বাস প্রদর্শন করে তা শাবকদের মধ্যে সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। রোমুলাস এবং রেমাস তাদের দূরত্ব বজায় রাখে এবং একজন ব্যক্তি এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে পিছু হটে। ডায়ার প্রজাতির নেকড়ে একা একাই থাকতে পছন্দ করে৷
আরও পড়ুন : চৈত্র পূর্ণিমায় আসছে হনুমানজীর জন্মতিথি! এই ৩ রাশি বজরঙ্গবলীর প্রিয়! সৌভাগ্যময় কপালে টাকার বৃষ্টি সবসময়
এই সাফল্যের পর বিজ্ঞানীদের আশা, একদিন তাঁরা ফিরিয়ে আনবেন বিলুপ্ত প্রাণী ডোডোপাখি, ম্যামথ এবং তাসমানিয়ান বাঘকেও৷ গবেষক তথা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন “আমাদের দল ১৩,০০০ বছরের প্রাচীন একটি দাঁত এবং ৭২,০০০ বছরের প্রাচীন একটি খুলি থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে এবং তা থেকে সুস্থ সবল দুর্ধর্ষ নেকড়ে শাবক তৈরি করে।”
বিলুপ্তির ১২,৫০০ হাজার বছর পর পুনর্জন্ম হওয়া ডায়ার নেকড়ে-এর দুই শাবক আপাতত ২০০০ একর জমির উপর ১০ ফুট উঁচু বেড়া দিয়ে ঘেরা একটি অজ্ঞাতস্থানে বাস করছে৷ সেখানে নিরাপত্তাকর্মী, ড্রোন এবং লাইভ ক্যামেরা ফিড সর্বক্ষণ তাদের তদারকি করছে। বিজ্ঞানীরা ফিরিয়ে এনেছেন ডায়ার নেকড়ের মোট ৩ টি শাবককে৷ গত বছর ১ অক্টোবর জন্ম নিয়েছে দু’টি পুরুষ শাবক৷ চলতি বছর ৩০ জানুয়ারি তারিখে পৃথিবীর আলো দেখেছে একটি স্ত্রী শাবক৷ বিজ্ঞানের দৌলতে সাড়ে বারো হাজার বছর পর এই প্রজাতি ফিরে এসেছে পৃথিবীর মাটিতে৷ তবে এখনও পর্যন্ত দু’টি শাবকের ছবিই প্রকাশ্যে এসেছে৷