জাকার্তা: যখন বাংলার আকাশে অবিরাম বৃষ্টির কালমেঘ সরে গিয়ে উঁকি দিল মিষ্টি রোদ্দুর, রাজ হাঁসের পাখার মত সাদা মেঘের আড়াল থেকে, সেই আলোর ছ্বটা ছড়িয়ে পরল দিকদিগন্তে, আর সেই আলোর থেকে এক টুকরো হাসি মাখা আলো এসে পড়ল জাকার্তায়। আলোয় রাঙা হয়ে উঠল জাকার্তার প্লইত শিব মন্দির। এর কোনও অন্যথা হওয়ার কথাও কিন্তু ছিল না।
advertisement
বিগত চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে জাকার্তার বাঙালিরা উদযাপন করে চলেছে বাঙালির ঐতিহ্যের সব থকে বড় পার্বণ দুর্গাপুজো। উত্তর জাকার্তার প্লইত শিব মন্দিরে সম্পূর্ণ নিয়ম নিষ্ঠা মেনে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় দুর্গাপুজো, প্রায় ৭০টি বাঙালি পরিবার অংশ নেয় এই প্রাণের পার্বণে। হই-হুল্লোড়ে আনন্দে উল্লাসে কেটে যায় পুজোর পাঁচটা দিন। পুজোর আচার অনুষ্ঠানের সঙ্গেসঙ্গে থাকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পসরা। থাকে দু‘বেলা খাওয়া-দাওয়ার অবারিত দ্বার। সদস্য হোন বা নাই হোন, সকলের জন্যই থাকে এই ব্যবস্থা।
সম্পূর্ণ নিয়মনিষ্ঠা মেনে ভারতীয় সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুজো করা হয় এখানে। কলকাতা থেকে পুরোহিত আসেন, বহু বছর ধরে পরম্পরা ক্রমে চলে আসছে এই নিয়ম। এখানকার পুজোর পুরোহিত অলোকবাবু বলেন, ”বছরের এই সময় যেমন মা কৈলাস থেকে বাপের বাড়ি আসেন, সঙ্গে তার সন্তানদের নিয়ে। তেমনই মা আমাকে তাঁর সঙ্গে করে জাকার্তায় নিয়ে আসেন প্রতি বছর।”
এক আলাপচারিতায় বর্তমান সভাপতি শ্রী শোভন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ”এই বছর কার্যনির্বাহী সমিতিতে জাবার ইতিহাসের সর্বাধিক মহিলা সদস্যের উপস্থিতি, প্রতিটি সাব-কমিটিরই অগ্রভাগেই আছেন আমাদের মহিলা সদস্যরা। নারীশক্তির হাত ধরে আমরা প্রকৃত অর্থেই মায়ের বন্দনায় রত।” অসাধারণ মণ্ডপ ও আলোক সজ্জা, তার সঙ্গে নানা বয়সের বাঙালিদের কলতান, মা-এর মূর্তির সামনে সমবেত একদল বাঙালি, এ যেন বাংলার বাইরে আর এক বাংলা। নিজের অজান্তেই মন থেকে ধ্বনিত হয়, বলো, ”দুর্গা মাইকি, জয়”।