মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার চিনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, বেজিংকে ওয়াশিংটনকে ম্যাগনেট দিতে হবে, না হলে যুক্তরাষ্ট্র ২০০% ট্যারিফ আরোপ করবে। দুই দেশের চলমান বাণিজ্য-সংঘাতের মধ্যেই তিনি এই মন্তব্য করলেন।
চিন রেয়ার-আর্থ ম্যাগনেট সরবরাহ নিয়ে ক্রমশ সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে। এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ বৃদ্ধির পাল্টা হিসেবে বেইজিং রেয়ার-আর্থ ও ম্যাগনেটসকে তাদের রপ্তানি-নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করেছিল।
advertisement
ট্রাম্প এদিন বলেন, “চিনকে আমাদের ম্যাগনেট দিতে হবে। যদি না দেয়, আমরা ২০০% ট্যারিফ বসাবো বা কিছু একটা করবো। ২০ বছর আগে পর্যন্ত কেউ ম্যাগনেটস চাইত না, তারপর ওরা সবাইকে বোঝালো যে আসো সবাই ম্যাগনেট ব্যবহার করি।”
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সামনে ট্রাম্প আরও বলেন, “আমাদের চিনের সঙ্গে খুব শক্তিশালী অর্থনৈতিক সম্পর্ক আছে। কিন্তু যদি তারা আমাদের ম্যাগনেট না দেয়, আমরা ২০০% ট্যারিফ বসাবো। তারা কিছু কার্ড হাতে রেখেছে, কিন্তু আমাদের কাছে অবিশ্বাস্য শক্তিশালী কার্ড আছে। আমি চাই না সেগুলো খেলতে, কারণ সেগুলি খেললে চিন ধ্বংস হয়ে যাবে।”
আরও পড়ুন: আমেরিকা না রাশিয়া! জলের তলার যুদ্ধে কোন দেশের সাবমেরিন বেশি শক্তিশালী?
এই মন্তব্য এল এমন সময় যখন দুই দেশ ১২ আগস্ট একমত হয়েছে যে তারা তাদের বাণিজ্য-বিরতি আরও ৯০ দিন বাড়াবে, যাতে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজা যায়। এ বছরের শুরুতে দুই দেশের মধ্যে ট্যারিফ যুদ্ধ তীব্র হয়েছিল। ট্রাম্প ১৪৫% ট্যারিফ বসিয়েছিলেন এবং চিন পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছিল। পরবর্তীতে দুই দেশ সম্মত হয় একে অপরের পণ্যের উপর ট্যারিফ যথাক্রমে ৫৫% ও ৩২%-এ নামিয়ে আনতে, যা নভেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হবে।
ট্রাম্প আরও বলেন, বিমান খাত ছিল আমেরিকার বড় এক হাতিয়ার। “ চিন তাদের ২০০টি বিমান ওড়াতে পারেনি, কারণ আমরা তাদের বোয়িং যন্ত্রাংশ দিইনি, যেহেতু তারা আমাদের ম্যাগনেট দেয়নি।”
সিএনবিসি জানায়, এপ্রিলে নিষেধাজ্ঞার পরও চিনের রেয়ার-আর্থ ম্যাগনেট রপ্তানি আবার আগের স্তরে ফিরে এসেছে। জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি আগের মাসের তুলনায় ৬৬০% বৃদ্ধি পায়, আর জুলাইয়ে ভলিউম আরও ৭৬% বেড়েছে।
বর্তমানে চিন বিশ্বের প্রায় ৯০% রেয়ার-আর্থ ম্যাগনেট উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে, যা তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বড় সুবিধা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অটোমোবাইল, ইলেকট্রনিক্স ও জ্বালানি শিল্প এই ম্যাগনেটের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
উল্লেখযোগ্যভাবে, চিন সম্প্রতি ভারতকে রেয়ার-আর্থ ম্যাগনেট রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় দিয়েছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় আমদানির ওপর অতিরিক্ত ২৫% ট্যারিফ ঘোষণা করেছিল, যা আগামীকাল থেকে কার্যকর হবে।