চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে আয়োজিত সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়ার পথে, বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, “অন্য দেশগুলো যখন নিজেদের পারমাণবিক ভাণ্ডার ক্রমাগত বাড়াচ্ছে, তখন আমরা পুরনো নিয়ম মেনে চলতে পারি না।”
advertisement
এর আগে সপ্তাহের শুরুতেই ট্রাম্প তাঁর নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লেখেন, তিনি মার্কিন সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন “চিন ও রাশিয়ার সমান ভিত্তিতে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করতে”। তাঁর এই ঘোষণার পরেই আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র উদ্বেগ ও নিন্দার ঝড় ওঠে।
১৯৯২ সালে শেষবার পারমাণবিক বিস্ফোরণমূলক পরীক্ষা চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র এক স্বেচ্ছা নিষেধাজ্ঞা বা moratorium মেনে চলেছে। পরে ১৯৯৬ সালে দেশটি স্বাক্ষর করে Comprehensive Nuclear Test Ban Treaty (CTBT)-তে, যদিও চুক্তিটি এখনও মার্কিন কংগ্রেসে অনুমোদিত হয়নি।
সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেননি যে আসন্ন পরীক্ষাগুলো আন্ডারগ্রাউন্ড বিস্ফোরণ আকারে হবে কি না। শুধু বলেন, “দেখা যাক।” অন্যদিকে মালয়েশিয়া সফরে থাকা মার্কিন যুদ্ধমন্ত্রী পিট হেগসেথ এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে মন্তব্য করেন, “নির্ভরযোগ্য প্রতিরোধ শক্তি বজায় রাখার জন্য পরীক্ষাগুলো পুনরায় শুরু করা একটি দায়িত্বশীল পদক্ষেপ। এতে পারমাণবিক সংঘর্ষের সম্ভাবনা আরও কমবে।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, ১৯৯৬ সালে সিটিবিটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র আর কোনও বিস্ফোরণমূলক পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়নি, যদিও চুক্তিটি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন পায়নি। চুক্তিটি বিশ্বের সব দেশকে পারমাণবিক বিস্ফোরণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানায়। চুক্তির শর্ত ভেঙেছে শুধু উত্তর কোরিয়া, যারা সর্বশেষ ২০১৭ সালে পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক পরমাণু ভারসাম্যে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই অবস্থান চিন ও রাশিয়ার সঙ্গে অস্ত্র প্রতিযোগিতা আরও বাড়াতে পারে, এবং বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের প্রক্রিয়াকেও মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত করতে পারে।
