রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর ট্রাম্পের ক্ষমতা
যুক্তরাষ্ট্র একটি মহাশক্তি, যার কাছে শক্তিশালী সেনাবাহিনী, পরমাণু অস্ত্র এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি রয়েছে। আমেরিকার রাষ্ট্রপতি দেশের এবং সরকারের প্রধান হন। এর সাথে সাথে তিনি সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফও হন।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির কাজ হচ্ছে কংগ্রেস দ্বারা প্রণীত আইন বাস্তবায়ন করা। এই কাজে তাকে সাহায্য করার জন্য একটি ক্যাবিনেট থাকে, যার সদস্যদের রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করেন।
advertisement
আরও পড়ুন: এই পাঁচ কারণেই ফের আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! বিস্তারিত জানুন
ফেডারেল সরকার এবং সংস্থাগুলির নিয়োগ
রাষ্ট্রপতি ১৫টি এক্সিকিউটিভ ডিপার্টমেন্টের প্রধানদের নিয়োগ করেন, যারা দেশের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এর মধ্যে সিআইএ (CIA) থেকে শুরু করে পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা (EPA) পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এছাড়াও, রাষ্ট্রপতি ৫০টিরও বেশি স্বাধীন ফেডারেল কমিশনের প্রধানদের নিয়োগ করেন, যেমন ফেডারেল রিজার্ভ বোর্ড বা সিকিউরিটিজ এবং এক্সচেঞ্জ কমিশন। রাষ্ট্রপতি ফেডারেল বিচারক, রাষ্ট্রদূত এবং অন্যান্য ফেডারেল অফিসারদের নিয়োগও করেন।
ভেটো করার ক্ষমতা
রাষ্ট্রপতি কংগ্রেসের মাধ্যমে পাস হওয়া বিলগুলিকে ভেটো করার ক্ষমতা রাখেন। তবে সংবিধান অনুসারে, কংগ্রেসের উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির ভেটো ফিরিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
ক্ষমা এবং বিদেশ নীতির অধিকার
রাষ্ট্রপতি ফেডারেল অপরাধের জন্য দোষী ব্যক্তিদের ক্ষমা করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তার পাশাপাশি তিনি বিদেশি শক্তির সঙ্গে চুক্তিতে সই করতে পারেন (যা সিনেটের অনুমোদনের জন্য প্রয়োজন)। এছাড়া, রাষ্ট্রপতি নির্বাহী আদেশ জারি করার অধিকারও রাখেন।
কালো ব্যাগ (নিউক্লিয়ার ফুটবল) এবং তার গুরুত্ব
রাষ্ট্রপতির শপথ নেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে একটি কালো ব্যাগ দেওয়া হয়, যা “নিউক্লিয়ার ফুটবল” নামে পরিচিত। এই ব্যাগটি আগের রাষ্ট্রপতি থেকে নতুন রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তর করা হয়। এই ব্যাগের মধ্যে থাকে আমেরিকার পরমাণু কেন্দ্রগুলোর স্থান এবং পরমাণু হামলা চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় সব তথ্য। রাষ্ট্রপতি যেখানে থাকুক না কেন, তার সঙ্গে এই ব্যাগটি থাকে এবং তিনি তা ব্যবহার করে যে কোনও মুহূর্তে পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগ করতে পারেন।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা
১. সিনেটের অনুমোদনে অন্য দেশগুলির সাথে চুক্তি করতে পারেন।
২. বিধায়কগুলোর উপর ভেটো বা সই করতে পারেন।
৩. বিদেশী দেশগুলোর সাথে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করেন।
৪. কংগ্রেস কর্তৃক প্রণীত আইন বাস্তবায়ন করেন।
৫. আক্রমণ বা জরুরি অবস্থায় সৈন্য বা অস্ত্রের ব্যবস্থাপনা করতে পারেন।
৬. বিদেশী অতিথিদের অভ্যর্থনা জানান এবং তাদের পরিচিতি দেয়ার কাজ করেন।
৭. ফেডারেল অপরাধের জন্য দোষী ব্যক্তিদের মাফি দিতে পারেন।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা নয়
১. নতুন আইন তৈরি করতে পারেন না।
২. যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারেন না।
৩. ফেডারেল বাজেট কিভাবে ব্যয় হবে তা নির্ধারণ করতে পারেন না।
৪. আইনগুলো ব্যাখ্যা করতে পারেন না।
৫. সিনেটের অনুমোদন ছাড়া ক্যাবিনেট সদস্য বা সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ করতে পারেন না।
উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্ব ও ক্ষমতা
আমেরিকার উপরাষ্ট্রপতির প্রধান দায়িত্ব হল রাষ্ট্রপতি পদ গ্রহণের জন্য প্রস্তুত থাকা। যদি রাষ্ট্রপতি মৃত্যুবরণ করেন, পদত্যাগ করেন, অথবা অন্য কোনো কারণে তার দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন, তবে উপ রাষ্ট্রপতিকে দায়িত্ব নিতে হয়। উপরাষ্ট্রপতি আমেরিকার সিনেটের সভাপতিও হন, যেখানে তিনি সমতা থাকলে একটি নির্ধারক ভোট প্রদান করেন।