মাসুদ আজহারকে জঙ্গি ঘোষণার দাবিতে রাষ্ট্রসংঘে অনেক বছর ধরেই সরব ভারত। কিন্তু, নয়াদিল্লির চেষ্টা প্রতিবারই ধাক্কা খেয়েছে চিনের প্রাচীরে। পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রসংঘে চার বার আপত্তি জানায় বেজিং। এমনকি চলতি বছর পুলওয়ামায় হামলার পরেও চিন নিজেদের অবস্থানে অনড় ছিল। ইসলামাবাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে তারা বার বার তথ্য-প্রমাণ চেয়েছে। নয়াদিল্লিও হাল ছাড়েনি। গত সপ্তাহে বিদেশ সচিব বিজয় গোখেল চিনে গিয়ে তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরেন। যাতে পুলওয়ামা হামলায় জইশের হাত স্পষ্ট। পুলওয়ামা হামলার পর থেকেই কূটনৈতিক স্তরে ভারত পাশে পায় ফ্রান্স, ব্রিটেন, এবং আমেরিকাকে। এতেও চিনের উপর চাপ বাড়ে। শেষমেশ পাকিস্তানের বন্ধু চিন আর তাদের পাশে দাঁড়াল না। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এবার আপত্তি প্রত্যাহার করে নেয় বেজিং।
advertisement
কিন্তু কেন চিনের এবার সুর বদল?
ভারত বার বার মাসুদ আজহারকে পুলওয়ামা হামলার মাস্টারমাইন্ড দাবি করলেও,জঙ্গি তকমা দেওয়ার নেপথ্য কারণ হিসেবে রাষ্ট্রসংঘের নথিতে বলা হয়েছে, কান্দাহার বিমান ছিনতাই, ওসামা বিন লাদেন, আফগানিস্তানে তালিবান জঙ্গি নিয়োগের সঙ্গে জড়িত মাসুদ আজহার।
পাক বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, পুলওয়ামা হামলা এবং জম্মু-কাশ্মীরে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগ সরিয়ে নেওয়াতেই, মাসুদ আজহারের গায়ে জঙ্গি তকমা রাষ্ট্রসংঘের। তা হলে কি ওই পুলওয়ামা ও কাশ্মীর প্রসঙ্গ থাকবে না এই শর্তেই চিনের সুর বদল?
রাষ্ট্রপুঞ্জ জঙ্গি তকমা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে একাধিক নিষেধাঞ্জা জারি করেছে পাকিস্তান। কিন্তু, সরকারি একটি সূত্রের দাবি, তাকে সম্প্রতি ইসলামাবাদে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তা হলে কি মাসুদ আজহারকে ভারতের হাতে তুলে দেবে পাকিস্তান? এর আগে লস্করের মাথা, হাফিজ সইদকেও জঙ্গি ঘোষণা করেছিল রাষ্ট্রসংঘ। কিন্তু, সে এখনও পাকিস্তানে বহাল তবিয়তেই রয়েছে। এবার মাসুদ আজহারের ক্ষেত্রেও কি সেই পথেই হাঁটবে ইসলামাবাদ? এই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।