বিশেষ করে তাঁরা আর্কটিক এবং অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চল নিয়ে আশঙ্কার মেঘ দেখছেন তাঁরা। আর সবথেকে বড় উদ্বেগের বিষয় হল, অ্যান্টার্কটিকার Doomsday Glacier বা ডুমসডে হিমবাহ দ্রুত গলে যাচ্ছে। যা তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির জন্য দায়ী।
এই ঝুঁকি প্রশমন করার জন্য বিজ্ঞানীরা নানা উদ্ভাবনী সমাধানের সন্ধান করছেন। এর মধ্যে অন্যতম হল – আন্ডারওয়াটার কার্টেন কিংবা জলের তলায় বিশালাকার পর্দা স্থাপন। আর শুধু Doomsday Glacier গলে গেলে প্লাবিত হতে পারে আমেরিকার পূর্ব উপকূল। এই ঝুঁকি কমাতে গবেষকরা সমুদ্রের জলের উপর কৃত্রিম হিমবাহের মোটা শিট স্থাপন করার প্রস্তাব দিয়েছেন।
advertisement
আরও পড়ুন- ‘ও জিতবে না, আমি জিতব’, স্মিথকে আউট করার ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ তৈরি! হুঙ্কার অশ্বিনের
এখানেই শেষ নয়, Thwaites Glacier বা Doomsday Glacier-এর নীচের বেডরককে ঠান্ডা করার পরামর্শও এসেছে। যাতে গরম জলের অনুপ্রবেশ আটকানো যায়।
পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকার ১৯২,০০০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে থাকা একটি বিশাল বরফের চাঁই হল Thwaites Glacier। যা মেরি বার্ড ল্যান্ডের ওয়ালগ্রিন উপকূলে মারফি মাউন্টেনের পূর্বে অবস্থিত। আর জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে দ্রুত গলে যাচ্ছে এটি। ফলে সারা বিশ্বে ১০ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে সমুদ্রের জলস্তর।
Thwaites Glacier গলে গেলে কী হতে পারে?
এর সম্ভাব্য পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। নিউ ইয়র্ক, চার্লসটন, আটলান্টিক সিটি এবং মায়ামির মতো উপকূলবর্তী শহরগুলি হামেশাই প্লাবনের সম্মুখীন হচ্ছে। এ নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাইমেট সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিশিয়েটিভের গবেষকরা। যেখানে নতুন উদ্যোগের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- খেলানিলামে দর ওঠে কোটি-কোটি টাকা, কিন্তু আইপিএলে প্লেয়াররা হাতে পায় কত?
কীভাবে এটি কাজ করবে?
প্রতিবেদনে Doomsday Glacier-এর পৃষ্ঠে সমুদ্রের জল পাম্প করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যেখানে হিমবাহের ঘনত্ব ঘন হওয়ার কারণে এটি হিমায়িত বায়ুর তাপমাত্রার কারণে বরফে পরিণত হবে। যদিও গবেষণাপত্রের লেখক এই ধারণার সঙ্গে যুক্ত অন্তর্নিহিত ঝুঁকি এবং খরচ স্বীকার করেছেন।
সামুদ্রিক জলের লবণাক্ততা বরফের হিমায়িত বা অভিন্ন হিমায়িত অবস্থা বজায় রাখার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। উপরন্তু, সমুদ্রের জলকে প্রচুর পরিমাণে পাম্প করার জন্য যথেষ্ট শক্তির প্রয়োজন হয়।
ইউকে-র স্টার্টআপ Real Ice অবশ্য সেই ২০১৯ সাল থেকে সমুদ্রের জল পাম্প করার ধারণা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করে আসছে। এমনকী কানাডায় ফিল্ড ট্রায়াল থেকে ভাল ফলাফলও এসেছে। যদিও বড় মাপে এটা করতে গেলে বার্ষিক ৫০৬.৩৪ বিলিয়ন টাকার প্রয়োজন রয়েছে। সেই সঙ্গে উল্লেখযোগ্য শক্তির খরচও ভাবনার বিষয়।
এর পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা হিমবাহের গলন প্রতিরোধ করার জন্য অন্যান্য জিও-ইঞ্জিনিয়ারিং সমাধানের প্রস্তাবও দিয়েছেন। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, এই ধারণাগুলি ‘বৈপ্লবিক’। তবে তাঁরা সতর্ক করে এ-ও জানিয়েছেন যে, জিও-ইঞ্জিনিয়ারিং কিন্তু ‘কঠিন এবং অসম্ভব’। কলাম্বিয়া ক্লাইমেট স্কুলের জলবায়ু অর্থনীতিবিদ গার্নট ওয়্যাগনার বলেন যে, “আমরা যখন গ্লেসিয়াল জিও-ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কথা বলি, আমাদের সত্যিটা বলতে হবে। এটা আদতে জলবায়ু পরিবর্তনের সমাধান নয়। সর্বোপরি এটা যন্ত্রণা উপশমকারীর মতো।”