ঘটনাস্থলে থাকা সাংবাদিকদের বর্ণনা অনুযায়ী, কট্টরপন্থী নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার আধ ঘণ্টার মধ্যেই প্রথম আলো এবং দ্য ডেইলি স্টার— দুই সংবাদমাধ্যমের দফতরেই হামলা শুরু হয়। অল্প সময়ের মধ্যেই দফতরের বাইরে বিশাল জনতা জমায়েত করে এবং পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
বাংলাদেশে এখন উন্মত্তের দাপাদাপি, বাদ রইল না বেগম রোকেয়ার স্মৃতিও! ধ্বংসস্তুপে পরিণত ছায়ানট
advertisement
দ্য ডেইলি স্টার-এর ভবনের নিচতলায় আগুন ধরিয়ে দেয় হামলাকারীরা। ফলে সমস্ত বেরোনোর রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। উপায় না পেয়ে সাংবাদিক ও কর্মীরা উপরতলার দিকে উঠতে থাকেন। বহু কর্মী শেষ পর্যন্ত ভবনের ছাদে আশ্রয় নেন। নিচে আগুন জ্বলতে থাকে, বাইরে চলতে থাকে হিংসা। দীর্ঘ সময় ধরে তাঁরা ছাদেই আটকে ছিলেন। পরে নিরাপত্তা বাহিনী ও জরুরি পরিষেবার সহায়তায় তাঁদের উদ্ধার করা হয়।
প্রথম আলোর ক্ষেত্রে মার্কেটিং ও বই প্রকাশনা বিভাগের দফতরে আগুন লাগে। এই বিভাগগুলি দুটি সংলগ্ন পাঁচতলা ভবনে অবস্থিত। মূল ১৩ তলা টাওয়ারে কর্মরত সাংবাদিকদের অনেকেই বেরোতে পারলেও, কয়েক জন প্রথমে ভবনের ভিতরেই আটকে পড়েন, যখন ধীরে ধীরে আগুন ছড়িয়ে পড়ছিল।
সাংবাদিকদের বক্তব্য, রাতভর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চলে। হামলার ব্যাপকতা নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন তাঁরা। যাঁরা ওই সময় ভবনের ভিতরে আটকে পড়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই এখনও কথা বলার মতো মানসিক অবস্থায় নেই বলে জানিয়েছেন সহকর্মীরা।
এই অশান্তির মধ্যেই হামলার শিকার হন বর্ষীয়ান সাংবাদিক ও নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামি লিগের সমালোচনামূলক সম্পাদকীয় লেখার জন্য পরিচিত কবিরকেও জনতার মারধরের শিকার হতে হয় বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, হাদির মৃত্যুর পর হিংসা ছড়াতে পারে— এমন আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। কিন্তু হামলার তীব্রতা ও ব্যাপ্তি প্রত্যাশার অনেক ঊর্ধ্বে চলে যায়। কয়েক জন সাংবাদিক জানান, হামলাকারীরা অত্যন্ত আক্রমণাত্মক ছিল এবং কেন সংবাদমাধ্যমগুলিকে নিশানা করা হচ্ছে, তা অনেকের কাছেই স্পষ্ট ছিল না।
