যেহেতু রাষ্ট্রপতি হিসাবে রাজাপক্ষকে গ্রেফতার করা যাবে না, তাই আটক হওয়ার সম্ভাবনা এড়াতে পদত্যাগ করার আগে বিদেশে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রাজাপক্ষ, তাঁর স্ত্রী এবং একজন দেহরক্ষী একটি Antonov-32 সামরিক বিমানে দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রতিবেশী মলদ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা দেন, জানিয়েছে ইমিগ্রেশন বিভাগ।
আরও পড়ুন- রাষ্ট্রপতির বাড়িতে লুকনো টাকা! ভাইরাল শ্রীলঙ্কার বিক্ষোভকারীদের টাকা গোনার ভিডিও
advertisement
“তাঁদের পাসপোর্টে স্ট্যাম্প দেওয়া হয় এবং তাঁরা বিশেষ বিমান বাহিনীর বিমানে ওঠেন,” এএফপিকে বলেন এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত একজন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা। বাণিজ্যিক বিমানে দুবাই যেতে চেয়েছিলেন রাজাপক্ষ, কিন্তু বন্দরনায়েকে ইন্টারন্যাশনালের কর্মীরা ভিআইপি পরিষেবা বন্ধ করে দিয়ে সমস্ত যাত্রীদের সাধারণ বিমানে যাতায়াতের ব্যবস্থাই চালু করায় তা সম্ভব হয়নি।
জনসাধারণের রোষের ভয়ে সাধারণ বিমানে করে যেতে অনিচ্ছুক ছিলেন রাজাপক্ষ, জানান নিরাপত্তা বিভাগের এক কর্মকর্তা। নিকটতম প্রতিবেশী ভারতে পালিয়ে আসার জন্য সামরিক বিমানের ছাড়পত্রও মেলেনি।
রাজাপক্ষের কনিষ্ঠ ভাই বেসিল গত এপ্রিলেই অর্থমন্ত্রী হিসাবে পদত্যাগ করেছিলেন, বিমানবন্দর কর্মীদের সঙ্গে এক বচসার পরে মঙ্গলবার দুবাইতে যাওয়ার বিমানে উঠতে পারেননি তিনিও। শ্রীলঙ্কা ছাড়াও মার্কিন নাগরিকত্বও রয়েছে বেসিলের৷
আরও পড়ুন- দাউদাউ করে জ্বলছে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি!চাপের কাছে হার মেনে পদত্যাগে রাজি রাজাপক্ষ
সূত্রের খবর, নগদ ১৭.৮৫ মিলিয়ন টাকা (প্রায় ৫০,০০০ মার্কিন ডলার) ভরা একটি স্যুটকেসও রাষ্ট্রপতির প্রাসাদে উদ্ধার হয়েছে, তা এখন কলম্বো আদালতের হেফাজতে রয়েছে। যদি রাজাপক্ষ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পদত্যাগ করেন, তাহলে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হয়ে যাবেন যতক্ষণ না সংসদ রাষ্ট্রপতির পদের জন্য একজন সাংসদকে নির্বাচিত করবে। কিন্তু বিক্রমাসিংহে নিজেই ঘোষণা করেছেন ঐকমত্য হলে তাঁরও পদত্যাগ করার ইচ্ছা রয়েছে।
প্রধান বিরোধী দল সমগী জন বালাওয়েগয়া পার্টির নেতা সজিথ প্রেমদাসা, যিনি ২০১৯ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রাজাপক্ষের কাছে হেরে যান তিনি এই পদে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াবেন। প্রেমদাসা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রানাসিংহে প্রেমদাসার পুত্র, যিনি ১৯৯৩ সালের মে মাসে এক তামিল বিদ্রোহী আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হন।