এই সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসতে অভিনব উপায় বের করেছেন মার্কিন নাগরিরদের একাংশ৷ চড়া দামে ডিম না কিনে বাড়িতেই ভাড়ায় মুরগি নিয়ে পুষতে শুরু করেছেন তাঁরা৷ নিউ হ্যাম্পশায়ারের একটি সংস্থার থেকে মুরগি জোড়ায় জোড়ায় মুরগি ভাড়ায় নিচ্ছেন অনেকেই৷
কীভাবে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে মুরগি?
ওই সংস্থার দাবি অনুযায়ী, ছ মাসের জন্য এক জোড়া মুরগির ভাড়া পড়বে ৬০০ ডলার মতো৷ এক জোড়া মুরগি পুষলে প্রতি সপ্তাহে এক ডজন ডিম পাওয়াই যাবে৷ যাঁদের বেশি ডিমের চাহিদা বেশি, তাঁরা চাইলে একসঙ্গে দু জোড়া মুরগি নিয়েও পুষতে পারেন৷ মুরগির খাবার থেকে শুরু করে ওষুধ, মুরগি পোষার খুঁটিনাটি পরামর্শ দেওয়া, এই সবকিছুও জোগাবে ওই সংস্থাই৷ থাকবে ইউটিউব টিউটোরিয়ালও৷ আমেরিকায় এখন ডিমের দাম যা চড়া, তাতে এই পদ্ধতিকে সাশ্রয়জনক বলেই মনে করছেন অনেকে৷
advertisement
আরও পড়ুন: পাকিস্তানি সেজে আমেরিকায় ঢুকতে গেলেন গুজরাতের বাসিন্দা! তার পর যা ঘটল, মাথায় হাত
গোটা আমেরিকা এবং কানাডা জুড়ে চাষিদের সঙ্গে মিলে ওই সংস্থা মুরগি ভাড়া দেওয়ার এই ব্যবসা শুরু করেছে৷ ভাড়ার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে মায়া পড়ে গেলে মুরগিগুলিকে পাকাপাকি ভাবে কিনে নিতে পারেন ক্রেতারা৷ নাহলে ওই সংস্থাকেই মুরগি ফেরত দিয়ে পারবেন তাঁরা৷
সংস্থার কর্তাদের দাবি, ডিমের দাম বাড়তে শুরু করার পর থেকেই তাঁদের দফতরের ফোন বেজেই চলেছে৷ মুরগি ভাড়া নিতে চাইছেন বহু মানষ৷ যাঁরা ভাড়ায় নিচ্ছেন, তাঁদের অধিকাংশই বাড়িতে মুরগি পুষে টাটকা ডিম হাতে পেয়ে দারুণ খুশি৷ ভাড়ায় নিয়েও অনেকেই পোষা মুরগির মায়া ত্যাগ করতে পারছেন না৷ ফের ওই মুরগি এবং মোরগকেই পুষতে চাইছেন তাঁরা৷
আমেরিকায় ডিমের সঙ্কট
গত দু বছরে আমেরিকায় মুরগির দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে৷ দু বছর আগের তুলনায় দাম বেড়েছে প্রায় ৫৩ শতাংশ৷ ফলে ডিম খাওয়ার জন্য খরচ বাঁচিয়ে বিকল্প উপায় খুঁজছেন মার্কিন নাগরিকরা৷
পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে যে অতিরিক্ত ডিম চাইলে চড়া হারে সারচার্জ দাবি করছে আমেরিকার নামী রেস্তোরাঁ চেন৷ এমন কি, বড় বড় বাজারগুলিতেও নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশি ডিম একজনকে বিক্রি করা হচ্ছে না, যাতে চাহিদা মেটানো যায়৷ ডিমের দর এতটাই আকাশছোঁয়া যে গতমাসে পেনসিলভেনিয়া্য় একটি ট্রাক থেকে প্রায় ১ লক্ষ ডিম চুরি হয়ে যায়৷
মার্কিন মুলুকে ডিমের আকাল কেন?
জানা গিয়েছে, বার্ড ফ্লুর দাপটেই আমেরিকায় ডিমের দাম এতটা বেড়েছে৷ ২০২২ সালে প্রথমবার কানাডা থেকে আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ে বার্ড ফ্লু৷ এর পর ২০২৪ সালে ফের আমেরিকায় বার্ড ফ্লুর আবির্ভাব হয়৷ সংক্রমণ ঠেকাতে প্রায় ১ কোটি ৭০ লক্ষ মুরগিকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ যা আমেরিকার বার্ষিক মুরগির চাহিদার প্রায় অর্ধেক৷ এর পরেই ডিমের দাম আরও বাড়তে শুরু করে৷