কারাকাস: মাদক পাচার রোধের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার উপকূলে তিনটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করছেন। সূত্রের খবর, ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার নেতা নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়ানোর পর যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে বামপন্থী এই প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগে তার ব্যাপারে তথ্য প্রদানের পুরস্কার ২৫ মিলিয়ন থেকে বাড়িয়ে দ্বিগুণ করে ৫০ মিলিয়ন ডলার করেছে আমেরিকা।
advertisement
যদিও ট্রাম্পের এই আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে পথে নামছেন ভেনেজুয়েলার সাধারণ মানুষ। ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে শনিবার হাজার হাজার মানুষ স্বেচ্ছায় সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছেন। এদের মধ্যে সরকারি কর্মচারী, গৃহিণী ও অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাও রয়েছেন। আমেরিকার সাম্প্রতিক হুমকির পরিপ্রেক্ষিতেই এককাট্টা হয়েছেন ভেনেজুয়েলার আমজনতা।
আরও পড়ুন: ‘নিজের উপর যা করেছে…’ জয়ের মৃত্যুর পরই মুখ খুললেন শতাব্দী রায়! যা বললেন, এত তাড়াতাড়ি জয়ের প্রয়াণের কারণ কি তবে এটাই?
এদিকে, তিনটি এজিস-শ্রেণীর গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ভেনিজুয়েলার উপকূলে পাঠিয়েছে আমেরিকা। মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে, ওয়াশিংটন এই অঞ্চলে আরও চার হাজার নৌসেনা পাঠানোর পরিকল্পনাও করছে।
সম্প্রতি লাতিন আমেরিকার জলসীমায় মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও সেনা মোতায়নের খবরকে কেন্দ্র করে আবারও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে ভেনেজুয়েলা–আমেরিকা সম্পর্কে। গত সপ্তাহে আমেরিকা জানিয়েছে, মাদক পাচার দমন অভিযানের অংশ হিসাবে তারা লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে একটি সম্ভাব্য নৌ অভিযান চালাতে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে দাবি করা হয়, তিনটি মার্কিন নৌবিধ্বংসী জাহাজ ও প্রায় চার হাজার সেনা ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে পৌঁছে যেতে পারে। এরপরই প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো পালটা ঘোষণা করেছেন, সারা দেশে ৪৫ লাখ মিলিশিয়া সদস্য মোতায়েন করা হবে। মাদুরো এক টেলিভিশন ভাষণে বলেছেন, ‘কোনও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি চাইলেই ভেনেজুয়েলার পবিত্র ভূমির দিকে হাত বাড়াতে পারবে না।’ তিনি আমেরিকার হুমকিকে ‘অতিরঞ্জিত ও অযৌক্তিক’ বলে উল্লেখ করেন।
মাদুরোর বিগত দুটি নির্বাচনী জয়কে স্বীকৃতি দেয় না ওয়াশিংটন এবং তার বিরুদ্ধে কার্টেল দে লস সোলস নামে কোকেন পাচারকারী চক্রে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ করেছে আমেরিকা। ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট গত মাসে এই গোষ্ঠীটিকে বিশেষ সন্ত্রাসী তকমা দিয়েছে। কারণ তারা ট্রেন ডি আরাগুয়া ও সিনালোয়া মাদক চক্রগুলোকে সমর্থন করছে। এই দুই চক্রকে এই বছরের শুরুতে বিদেশী সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সেনা অভিযানের সম্ভাবনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে হোয়াইট হাউস বলেছে, ট্রাম্প মাদক পাচার বন্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেবেন ট্রাম্প।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে কোনও আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। চলতি বছরের জুলাইয়ে ট্রাম্প প্রশাসন মাদুরোর গ্রেফতারের তথ্য দিলে পুরস্কার দ্বিগুণ বাড়িয়ে পাঁচ কোটি ডলার ঘোষণা করে। ওয়াশিংটন তাকে বিশ্বের অন্যতম বড় মাদককারবারি হিসাবে অভিযুক্ত করেছে। যদিও ভেনেজুয়েলা সরকার এই সব অভিযোগ নাকচ করেছে।