শুক্রবার সকালে গঙ্গা স্নান করতে গিয়ে একটি ভাসমান পাথর দেখতে পায় সেখানকার স্থানীয় দুই কিশোর। ভাসমান পাথর কে দেখে তারা নদীর পাড়ে নিয়ে আসে। ইতিমধ্যে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে পাথরের খবর চাউর হতে তাঁরা ভিড় জমান গঙ্গার ঘাটে। অনেকেই মনে করছিলেন পুরাণের রামায়ণের গল্পের কথা। ভগবান রাম সীতাকে উদ্ধার করার জন্য লঙ্কা ক্রমন করেছিলেন। তখন লঙ্কা পৌঁছানোর জন্য সাগরের উপরে এই রকমই পাথর ভাসিয়ে একটি সেতু তৈরি করেছিলেন ভগবান রাম এবং তাঁর বানর সেনারা। আশ্চর্য রকম ভাবে এই পাথরকে রাম সেতুর পাথরের সঙ্গে অবিকল মিল খুঁজে পাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
advertisement
এই খবর জানা মাত্রই নিউজ 18 লোকাল পৌঁছে যায় ঘটনাস্থলে রহস্যময় পাথরটিকে দেখতে। পাথরটির আনুমানিক ওজন ছিল প্রায় ৮ থেকে ১০ কেজি। অসংখ্য ছিদ্র যুক্ত পাথরটি দেখে প্রথমে মনে হবে একটি ঝামাপাথর। এ বিষয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, গঙ্গার জল নিতে এসেছিলেন তিনি। এসে তিনি দেখতে পান এই পাথরটিকে দুটি বাচ্চা নিয়ে খেলা করছে। পাথরের আশ্চর্য ক্ষমতা দেখে কিছুক্ষণের জন্য হতভম্ব হয়ে জান তিনি। প্রথমে সেটিকে থারমোকল মনে করলেও সেটিকে যখন নদীর পাড়ে আনা হয় তখন সেটি যে পাথর সে বিষয়ে আর সন্দেহ থাকে না কারোর মনে। তারপরই উঠে আসে পৌরাণিক কাহিনীর তত্ত্ব। পাথরের গায়ে লেখা রয়েছে 'জয় শ্রীরাম'। পাথরের গায়ে 'জয় শ্রীরাম' লেখা দেখে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেয় স্থানীয়রা।
যদিও এই বিষয়ে পৌরাণিক তত্ত্বকে নস্যাৎ করে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের আধিকারিক চন্দন দেবনাথ বলেন, পাথর জলে ভাসবে সেটা সম্ভব নয়। যদিও অনেক সময় কর্পূর কে রং করে পাথরের রূপ দেওয়া হয়। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও কুকুরের উবে যাবার সম্ভাবনা থাকে। তিনি আরও একটি তথ্য দেন যেখানে তিনি বলেন হতে পারে কোন সময় থার্মোকলের ওপরে সিমেন্ট দিয়ে ওই ধরনের ব্লক তৈরি করা হয়েছিল পরবর্তীতে সেটি গঙ্গায় চলে আসে এবং ভাসতে থাকে। কিংবা পাথরের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে অনেক সময় পাথর গুলিতে অসংখ্য ছিদ্র তৈরি হয় যার ফলে সেখানে গ্যাসের বাবলস তৈরি হয় যার কারণেই পাথরটি জলে ভাসছে। পাথরের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা পাওয়ার পরেও সাধারণ মানুষের মধ্যে পাথর নিয়ে পৌরাণিক কাহিনি রামায়ণের রাম সেতুর পাথরের কথাই তারা মনে করছেন।
রাহী হালদার