বছর ৩৫-এর সুমন্ত চন্দননগরের বাসিন্দা। তাঁর জীবনের অনুপ্রেরণা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। মধ্যযুগীয় সময় বিদ্যাসাগর যেভাবে সহস্র বর্বরতার মধ্যে দিয়ে লড়াই করেছেন নারীদের জন্য, ঠিক তেমনই বর্তমান সময়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া মহিলাদের সচেতন করার জন্য এগিয়ে এসেছেন তিনি। আধুনিক যুগে এসেও পশ্চিমবঙ্গের বহু প্রান্তিক গ্রামে আদিবাসী পল্লীগুলির মধ্যে আজও নারীদের ঋতুচক্র নিয়ে সচেতনতার অভাব রয়ে গিয়েছে। যে সমস্ত জায়গায় ঋতুকালীন সময়ে মহিলারা কাপড়ের ব্যবহার করেন, সেই সব জায়গায় সুমন্ত এবং তাঁর ছাত্র-ছাত্রীরা স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবহার কেন প্রয়োজন তাই নিয়ে সচেতনতা বার্তা পৌঁছে দেন। এবং সেই মহিলাদের বোঝান ঋতুচক্র কোনও খারাপ বা অশুভ বিষয় নয়।সেটি মহিলাদের স্বাভাবিক শারীরিক প্রত্যাবর্ত ক্রিয়া।পোস্টার প্লাকার্ড ব্যানার সাজিয়ে প্রান্তিক মহিলাদের নিয়ে প্যাডম্যান শুরু করেন বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ঋতুচক্র নিয়ে মহিলাদের বোঝানো।
advertisement
আরও পড়ুন: শিবরাত্রি উপলক্ষে মা তারার ভোগে বিশেষ মেনু, দেখুন তারাপীঠ মন্দিরের ভিডিও
আরও পড়ুন: জমি কর্ষণ ছাড়াই চাষ হচ্ছে ডাল-তৈলবীজ, দরকার পড়ছে না সারের! পয়রা পদ্ধতি কী জানেন?
সুমন্ত বলেন, “কন্যা যখন ফুলের কুড়ি থেকে প্রস্ফুটিত হতে শুরু করে তখন বিধিনিষেধের বেড়াজাল যেন বেঁধে রাখে। প্রথম ঋতুদর্শনের সময় থেকে নারীদেহের প্রতি পরে যায় সামাজিক ছুতমার্গের প্রলেপ। ছোট্ট বেলা থেকেই ‘ওটা তো মেয়েদের বিষয়’ বলে নারী স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলার প্রাথমিক পদক্ষেপটি গ্রহন করা হয়। মেয়ারাও নিজেদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে উদাসীন থাকে। অসচেতনতার পথ ধরে হাঁটতে শুরু করে। যার একটি সময়ের পরিণতি হয় জরায়ুমুখ ক্যানসার এতো বিষয়। সমাজ, পরিবার ছোটবেলা থেকেই নারীস্বাস্থ্যের প্রতি ভীষণ রকম উদাসীন থাকে। কিন্তু একজন নারীই কিন্তু পরিবারের কাণ্ডারী। সে ভাল থাকলে পরিবারও ভাল থাকবে।”
প্রায় একদশক ধরে নারীর ঋতুকালীন স্বাস্থ্যস চেতনতা ও জরায়মুখ ক্যানসার বিষয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে সমাজ সচেতনতার কাজ করতে গিয়ে সুমন্ত দেখেছেন সমাজ নারীস্বাস্থ্যের প্রতি কতটা উদাসীন। তাই তিনি বলছেন, এ বারের নারীদিবসে আওয়াজ উঠুক নারীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি করার।
রাহী হালদার