TRENDING:

ভুতুড়ে গ্রামে ফিরল হারিয়ে যাওয়া অস্ট্রেলীয় প্রেম, কাহিনীতে ক্লিন বোল্ড নেটদুনিয়া

Last Updated:

কথা রাখতেই এরপর অস্ট্রেলিয়া পাড়ি। বাড়িতে না জানিয়ে ৩০হাজার টাকা ধার করে মেলবোর্ন রওনা দেন জয়সলমীরের যুবক।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#জয়সলমীর : চামড়া কুঁচকে গিয়েছে। শত-শত রেখা উপরেখা ভিড় করে এসেছে শরীরে। রোগাটে চেহারায় আজ বলিরেখার স্তূপ। মাথায় পাগড়িতেও নেই কোনও বাহারি রঙের ছোঁয়া। মালিন্য চোখ-মুখ ও পোশাকেও। অথচ বিরাশির এই দরিদ্র বৃদ্ধের মনেই এখন স্পষ্ট রামধনুর সবকটা রং! কারণ দীর্ঘ ৫০ বছর পর তাঁর জীবনে ফিরে এসেছে তাঁর একদা বিদেশিনী প্রেয়সী। আর তাতেই রাতারাতি পাল্টে গিয়েছে রাজস্থানের জয়সলমীরের ভুতুড়ে শহরের পাহারাদারটির সাদামাটা-রংহীন জীবন।
advertisement

সত্যি প্রেমের গল্পPhoto - Facebook

সময়টা সত্তরের দশক। বয়স তখন মেরেকেটে ৩০। সেই সময় জয়সলমীরে আসেন মারিনা নামে এক অস্ট্রেলীয় পর্যটক। পাঁচদিনের সফরে মারিনাকে উটে চড়ানো শেখাচ্ছিলেন আজকের বৃদ্ধ 'পাহারাদার'। দু-জোড়া চোখ এক হয় তখনই। আর ঘটে যায় সেটাই যেটা কখনও ঘটার কথা ছিল না। ' Love at first sight '! ইথার তরঙ্গে ঘটে যায় প্রেম। মন্ত্র মুগ্ধের মত কেটে যায় পাঁচটা দিন। ভালবাসার কথা নিজেই জানান মারিনা। সাড়া না দিয়ে পারেননি অচেনা প্রেমিকও। ক্রমে মারিনার অস্ট্রেলিয়া ফিরে যাওয়ার সময় আসে। ছেড়ে যাওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর কাছে যাওয়ার আর্জি জানিয়ে যান মারিনা। আগুপিছু না ভেবেও কথা দিয়ে ফেলে তিরিশের যুবক।

advertisement

কথা রাখতেই এরপর অস্ট্রেলিয়া পাড়ি। বাড়িতে না জানিয়ে ৩০হাজার টাকা ধার করে মেলবোর্ন রওনা দেন জয়সলমীরের যুবক। মারিনার সঙ্গে তিন মাস একসঙ্গে কেটে যায় সেখানে। ততদিনে ইংরেজিও চোস্ত হয়ে যায় তাঁর। আর মারিনাকে শিখিয়ে দেন রাজস্থানের ঘুমর নাচ। এরপরেই একসময় বিয়ের প্রস্তাব দেন মারিনা। আবদার করেন অস্ট্রেলিয়ায় থেকে যেতে। কিন্তু ঠিক এখানেই সমস্যায় পড়ে যান যুবক। দেশের মাটিকে একেবারে ত্যাগ করবেন? একদিকে প্রেম একদিকে ঘরের ফেরার টান। শেষে যুবক ফিরে আসেন ভারতে। বিচ্ছেদ হয়ে যায় দু'জনের। কিন্তু সত্যিই কি বিচ্ছেদ হয়েছিল? সত্যিকারের প্রেম কি এভাবে ফুরিয়ে যায়? ভৌগোলিক দূরত্ব কি হারিয়ে দিতে পারে সেই প্রেমকে? জীবনদেবতা হয়তো অলক্ষ্যে হেসেছিল সেদিন।

advertisement

ঘটনাপঞ্জী বলছে এরপরের জীবনটা ক্যালেন্ডারের পাতা ওল্টানোর মতোই কীভাবে যেন কেটে যায় মানুষটার। পারিবারিক চাপে বিয়ে হয় জয়সলমীরের 'যুবকের'। একটা ছোটখাটো চাকরিও জুটিয়ে নেন। তাও কোথায়? কুলধারা গ্রামে। ভারতের ভৌতিক গ্রাম হিসেবে বিখ্যাত এই গ্রামেই পাহারাদারের দায়িত্ব পান। একটু একটু করে 'মারিনা' অধ্যায় ফেড আউট হয়ে যায় জীবন থেকে। জীবনে ঢুকে পরে পারিবারিক দায়-দায়িত্ব। ছেলে মেয়ে বড় করা। তাদের পড়াশোনা। এসবের ফাঁকে মাঝেই মাঝেই স্মৃতিতে ভেসে আসত মারিনার কথা। কিন্তু সে যে কোথায়, কীভাবে জানা নেই কিছুই। জানা হয় না। দেখতে দেখতে কেটে যায় পঞ্চাশটা বছর। সদ্য গত হয়েছেন জয়সলমীরের সেই যুবকের স্ত্রী। ছেলেরাও সবাই বিবাহিত। ভুতুড়ে শহরের শূন্য পথে ঘটে একভাবে কেটে যাচ্ছিল একাকিত্বের গ্ৰীষ্ম-বর্ষা-বসন্তগুলো।

advertisement

এরপরেই গল্পে এল নতুন মোচড়। হঠাৎ করেই সুদূর মেলবোর্ন থেকে উড়ে এল চিঠি। মারিনার প্রেম-পত্র। তিনি ফিরছেন বৃদ্ধের জীবনে। চিঠি পেয়ে হতবাক আজকের অশীতিপর প্রেমিক। চিঠিতেই জানতে পারেন কোনওদিন আর বিয়ে করেননি মারিনা। বেশ কিছু পত্রালাপের পর আপাতত প্রেয়সীর পথ চেয়েই চলছে দিন গুজরান। আর মনে মনে ভাবছেন, 'এভাবেও ফিরে আসা যায়' !

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
চোখের নিমেষে উধাও সাত কুইন্টাল দই! কেজি মাত্র ১১০ টাকা,ভাইফোঁটায় উপচে পড়া ভিড় এই দোকানে
আরও দেখুন

ফেসবুকের মাধ্যমে এই গল্প সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে উঠতেই মুহূর্তে ভাইরাল। বৃদ্ধ পাহারাদার তাঁর ফুরিয়ে যাওয়া, হারিয়ে যাওয়া প্রেম খুঁজে পায় কিনা তাঁর দিকেই তাকিয়ে নেটিজেনদের একাংশ। গল্পের শেষটুকু জানার আগ্রহে একের পর এক কমেন্ট ভেসে উঠছে, আসছে মেসেজ। কারণ এই গল্পেই যে রয়েছে সত্যি প্রেমের সেই সোনার-কাঠি রুপোর-কাঠি ম্যাজিক। যা আজও ছুঁয়ে যায় প্রজন্মের পর প্রজন্মকে।

বাংলা খবর/ খবর/ফিচার/
ভুতুড়ে গ্রামে ফিরল হারিয়ে যাওয়া অস্ট্রেলীয় প্রেম, কাহিনীতে ক্লিন বোল্ড নেটদুনিয়া
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল