#কলকাতা: আসলে সমকাল একটা ঘটনাকে যেভাবে দেখে, ভবিষ্যৎ সেই দেখাকে পালটে ফেলে নিজের মত। অন্য সবার মত নেতাজী (হ্যাঁ, সুভাষ বোসের কথাই বলছি, ভারতের রাজনীতির নতুন নেতাজীকে নিয়ে না হয় ভাবীকাল আলোচনা করবে)- কে দেখার বা চেনার চোখও কালে কালে বদলেছে। আর কালকে চেনার সবথেকে ভাল উপায় কি হতে পারে, তখনকার বিজ্ঞাপন পোস্টার আর কার্টুন ছাড়া!!
advertisement
১৯৪০ সালের কথা। কানপুর তখনও Cawnpore। ন্যাশনাল প্রেসের পক্ষ থেকে শ্যামসুন্দরলাল অগ্রবাল অদ্ভুত একটা পোস্টার ছেপে প্রকাশ করলেন। লাগিয়ে দিলেন দেওয়ালে দেওয়ালে। আপাতদৃষ্টিতে বেশ চমকে ওঠার মত। নেতাজী এখানে কালীর অন্যতম রূপ ছিন্নমস্তার সাথে তুলনীয়। আজাদ হিন্দ ফৌজের পোশাক পরে তিনি তাঁর নিজের গলা কেটে উৎসর্গ করছেন দেশের জন্য। আশেপাশে ছড়িয়ে আছে আরও সৈনিকদের ছিন্ন মস্তক। তলায় লেখা- “सुभाष चन्द्र बोसे कि अपूर्व भेट” (সুভাষ চন্দ্র বোসের অপূর্ব উপহার)।
আজাদ হিন্দের আত্মত্যাগ ঠিক কতটা সাড়া জাগালে একজন মানুষ তাঁর জীবৎকালে ঈশ্বরের সঙ্গে তুলনীয় হয়, তা বলাই বাহুল্য। অবশ্য এর উলটো দিকও আছে। ১৯৪২ এর ১৯ জুলাই "পিপলস ওয়ার" পত্রিকার এই কার্টুনটি যেমন। এখানে স্পষ্টই সুভাষ বোসকে তোজোর গাধার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
জয় হিন্দ কেমিক্যাল ওয়ার্কস অবশ্য অত ভাবে না। তাঁরা খেয়াল করেছেন নেতাজী, গান্ধীজী, নেহেরু, প্যাটেল বা আজাদ- সব্বার চকচকে একখানা করে টাক আছে, আর সেই টাক যাতে অন্যদের না পড়ে তাই উপায় একটাই-
Jai Hind Amla Goonnidhi Hair Oil
An effective dressing for hair
Prepared with pure vegetable oil with amla and other Indian herbs
একটা ব্যাপার খেয়াল করার মত। দেশপ্রেমে মাতোয়ারা এই কোম্পানি কিন্তু মডেল হিসেবে যে পাঁচজনকে বেছে নিলেন কারও চুল নেই। পরে গজায়ওনি। বাজারের চলতি ধারণাকে (একমাত্র সুন্দর চুলের অধিকারীরাই মাথার তেলের মডেল হতে পারেন) ভেঙ্গেচুরে একেবারে নতুন ইতিহাস তৈরি হল।
শেষে বলি প্রমথ সমাদ্দারের সেই বিখ্যাত কার্টুনের কথা। দেশ সবে স্বাধীন। কিন্তু সবাই জুজু দেখছে। অই বুঝি নেতাজী আসে। দেশজুড়ে গুজব " নেতাজী আসছেন নেতার বেশে"... কে জানত? পঞ্চাশ বছর পেরিয়েও নেতাজীর ভূত আজও তাড়া করে বেড়াবে দেশের অনেক নেতাদের?....
