উমা যে আসলে ঘরের মেয়ে। তাঁকে কি কষ্ট দেওয়া যায়? সে যে আদরের... তাই সংসারের আর্থিক অবক্ষয়েও ঘরের মেয়ের আদর অক্ষুণ্ণ রাখতে চেয়েছিল কালনার বালিবাজারের চট্টোপাধ্যায় পরিবার। উমার যত্নের ভার দিয়েছিল পূজারির হাতে। সেই শুরু। দানে পাওয়া জয়দুর্গার অনাদর করেননি পূজারি রামধন মুখোপাধ্যায়। পাথুরিয়ামহলের বাড়িতে জয়দুর্গা হয়েছে মুখোপাধ্যায়দের ঘরের মেয়ে।
advertisement
মুখোপাধ্যায়রা ঢাকের বোলে কোমর দোলান না। জয় দুর্গার পুজোয় ঢাক বাজে না... আধুনিক কোনও বাজনাও বাজে না... দশমীতে পুজোও হয় না। তাই জয়দুর্গার পুজোয় বিসর্জন হয় না। সময়ের দৌড়ে কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে বোধহয় ঘরের মেয়েকে বোধহয় কাছছাড়া করতে চায় না পরিবার।
পুজোর বয়স প্রায় চারশ। ন’পুরুষের পুজো। একচালার সাবেকি প্রতিমা। টানা চোখ। দেখে যেন মনে হয়, পাথরের মূর্তি। আসলে শাড়ি, গয়না সবই মাটির। ১২ বছর অন্তর প্রতিমার অঙ্গরাগ হয়। জয়দুর্গার সঙ্গে কার্তিক-গণেশ পুজো পায় না।
দশমীতে শুধু কলাবউয়ের বিসর্জন হয়। ষাট বছর আগে ছাগল বলি হলেও এখন আখ, চালকুমড়ো, শশা বলি হয়। পুজোর ক’দিন বাড়ি ছেড়ে কোথাও যাওয়ার কথা ভাবতেই পারে না মুখোপাধ্যায় পরিবার। একসঙ্গে খাওয়া-আনন্দ-আড্ডায় জমে ওঠে আনন্দ।
আগে বর্ধমানের মহারাজা এই পুজোর খরচ চালাতেন। এখন পুজো করেন পরিবারের সদস্যরাই। কেউ কেউ বলেন দানে পাওয়া দুর্গা। আবার কেউ কেউ বলেন দুর্গা নিজেই আসতে চেয়েছিলেন এই বাড়িতে। তাই হয়তো বাড়ি বদল... ইতিহাস বা গল্প যাই বলুক... মুখোপাধ্যায় বাড়িতে জয়দুর্গা ভালই আছে.. অাদরে আছে..
কালনা থেকে
ক্যামেরায় নবকুমার রায়ের সঙ্গে
শরদিন্দু ঘোষ। নিউজ 18 বাংলা।
কালনা
- পুজোয় ঢাক বাজে না
- দশমীতে বিসর্জনও নেই
- মুখোপাধ্যায়দের জয়দুর্গা পুজো
- চট্টোপাধ্যায়দের থেকে দানে পাওয়া দুর্গা
- ৪০০ বছরের পুরোন পুজো
