TRENDING:

১৯১৩ সালে ১৩ নভেম্বর নোবেল পেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ! কি লেখা হল সংগঠনের তরফে ?

Last Updated:

বিশ্বের কাছে হাহাকার তো করেননি বটেই, বরং সেই শোক তাঁর কলমে ফুটে উঠেছে শ্লোক হয়ে।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কলকাতা: ভারতীয়, বিশেষ করে বাঙালির পক্ষে এ গর্ব করার মতোই দিন। কিন্তু কার্যত দেখা যাচ্ছে খোদ নোবেল সংগঠনের পক্ষেও এ বড় কম আনন্দের মুহূর্ত নয়। সম্প্রতি যার প্রকাশ দেখা গিয়েছে সংগঠনের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে। একটি Instagram পোস্ট মারফত সাড়ম্বরে ঘোষণা করেছে তারা- ১৯১৩ সালের ১৩ নভেম্বর অর্থাৎ আজকের দিনেই সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেই পোস্ট উল্লেখ করতে ভোলেনি, নন-ইউরোপিয়ান কোনও ব্যক্তির সেই প্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ!
advertisement

এ প্রসঙ্গে যে বইটির সূত্রে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ, তার রচনা এবং প্রকাশের ইতিবৃত্তের দিকে না তাকালেই নয়। 'গীতাঞ্জলি', ইংরেজি তর্জমায় যার নাম 'সংস অফারিংস', যার দৌলতে এ দেশ দেখেছিল প্রথম নোবেল পুরস্কারের মুখ, তার সমালোচনায় ব্রিটিশ পত্রিকা এথেনিয়াম লিখেছিল- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্যে এমন এক স্নিগ্ধতা রয়েছে পশ্চিমের অশান্তচিত্ত মানুষের যা বড়ই দরকার! অস্বীকার করার উপায় নেই- কবির নিজের চিত্তও বিশ্ব ইতিহাসের এই অমূল্য সম্পদটি রচনার কালে ছিল অসুখে ভরা!

advertisement

এই জায়গায় এসে কিংবদন্তী বাংলা ভাষাবিদ এবং লেখক সুকুমার সেনের মতামত তুলে ধরতে হয়। তিনি স্পষ্ট দাবি করেছেন- ''ইতিমধ্যে (১৩১৪ সালের মাঝামাঝি) কনিষ্ঠ পুত্রের [শমীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৯৬-১৯০৭)] আকস্মিক মৃত্যুতে কবিধর্ম কিছুদিনের মতো যেন বিচলিত হইল। তখন শোকবেদনার উৎসাহ হইল এক অভিনব ভক্তিরসে। তাহার মুখ্য প্রকাশ 'গীতাঞ্জলি'তে (১৩১৭)।''

সাধারণ মানুষের কাছে পুত্রের বিয়োগব্যথা বড় মর্মান্তিক হয়েই দেখা দেয়। কিন্তু রবীন্দ্রজীবনী থেকে বার বার আমরা দেখেছি যে শোককে বড় আদরে ব্যক্তিগত করে রেখেছেন এই কবি। বিশ্বের কাছে হাহাকার তো করেননি বটেই, বরং সেই শোক তাঁর কলমে ফুটে উঠেছে শ্লোক হয়ে।

advertisement

এরই বিপরীত দিকে রয়েছে কবির নিজের শারীরিক অসুস্থতার কথাও। রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের লেখা থেকে আমরা জানতে পারি যে ১৯০৮ সালের পুজোর সময়ে রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহে গিয়েছিলেন পৈতৃক জমিদারি তত্ত্বাবধানের কাজে। পুজোর ছুটির পর একটানা পাঁচ মাস তিনি কাটিয়েছিলেন স্বপ্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতনের ব্রহ্মচর্যাশ্রমে। পরের বছর বর্ষা এবং শরৎ কালে আবার তিনি রওনা দেন শিলাইদহের উদ্দেশে। ফিরে এসে কিছু দিন থাকেন কলকাতায়, জোড়াসাঁকোর পৈতৃক ভিটেতে। আর এই পুরো সময় ধরে চলতে থাকে নানা কবিতা এবং গান লেখা, যার সঙ্কলন 'গীতাঞ্জলি'। এই সময়ে শারীরিক ভাবে খুবই অসুস্থ ছিলেন কবি। চিকিৎসকরা স্বাস্থ্যোদ্ধারের জন্য দিয়েছিলেন আমিষ খাওয়ার পরামর্শ। কিন্তু শান্তিনিকেতনের ব্রহ্মচর্যাশ্রমে তাঁর ছাত্ররা আছেন নিরামিষে, অতএব কবিও আমিষ মুখে দিতে চাননি।

advertisement

আশ্চর্যের কথা, যে 'গীতাঞ্জলি' 'সংস অফারিংস'-এর উৎস, তাকে কিন্তু হুবহু তর্জমা করেননি রবীন্দ্রনাথ। এমনকি ইংরেজি বইয়ে বাংলার সব গান আর কবিতাকেও ঠাঁই দেননি। 'গীতাঞ্জলি'-র ১৫৭টি গান-কবিতা থেকে 'সংস অফারিংস'-এ স্থান পেয়েছিল মাত্র ৫৩টি! বইয়ের বাকি কবিতাগুলো নেওয়া হয়েছিল 'গীতিমাল্য', 'নৈবেদ্য', 'খেয়া', 'শিশু', 'কল্পনা', 'চৈতালি', 'উৎসর্গ', 'স্মরণ' ও 'অচলায়তন' থেকে। 'গীতিমাল্য' থেকে ১৬টি, 'নৈবেদ্য' থেকে ১৫টি, 'খেয়া' থেকে ১১টি, 'শিশু' থেকে ৩টি, 'কল্পনা' থেকে ১টি, 'চৈতালি' থেকে ১টি, 'উৎসর্গ' থেকে ১টি, 'স্মরণ' থেকে ১টি এবং 'অচলায়তন' থেকে ১টি কবিতা/গান নিয়ে রূপ পেয়েছিল 'সংস অফারিংস'।

আরও আশ্চর্য এই যে কবি না কি স্রেফ সময় কাটানোর জন্য তাঁর লেখার ইংরেজি অনুবাদ করতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরে গুণগ্রাহী এবং বন্ধু উইলিয়াম রদেনস্টাইনের অনুরোধে নিজের লেখার একটি ইংরেজি সঙ্কলন প্রকাশে রাজি হন। এই রদেনস্টাইন ছিলেন একাধারে শিল্পী, প্রকাশক এবং লেখক। তিনি এই বইয়ের পাণ্ডুলিপি নিয়ে সোজা চলে যান সেই সময়ে পাশ্চাত্য জগতের বিখ্যাত কবি ডব্লিউ বি ইয়েটস-এর কাছে। মুগ্ধ ইয়েটস লিখে দেন সংস অফারিংস'-এর ভূমিকা। রদেনস্টাইনের আঁকা কবির ছবি দিয়ে ইওরোপে সাড়ে চার শিলিং এবং আমেরিকায় সওয়া এক ডলার দামে বই প্রকাশিত হয়। ১৯১২ সালে প্রথমে প্রকাশ করা হয়েছিল ৭৫০টা বই। ১৯১৯ সালে এসে দেখা যায় যে মাত্র ৭ বছরেই সংস অফারিংস'-এর ৩৭ হাজারতম মুদ্রণ প্রকাশিত হয়!

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
পুরীর রথ এবার রঘুনাথপুরে, থিমে মন কাড়ছে আপার বেনিয়াসোলের দুর্গাপুজো মণ্ডপ
আরও দেখুন

জানা যায়, ব্রিটিশ লেখক এবং রয়্যাল সোসাইটির সদস্য স্টার্জ মুর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নোবেল পুরস্কারের মনোনয়ন দেন। বাকিটা ইতিহাস! যা নতুন করে স্মরণ করল নোবেল সংগঠন!

বাংলা খবর/ খবর/ফিচার/
১৯১৩ সালে ১৩ নভেম্বর নোবেল পেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ! কি লেখা হল সংগঠনের তরফে ?
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল