TRENDING:

শরৎকালের দুর্গাপুজো আদতে পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের জয়ের ' গ্র্যান্ড সেলিব্রেশন'

Last Updated:
impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কলকাতা: যদি বলা হয় পলাশীর যুদ্ধের স্মারক উৎসব আজ বাঙালীর জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে, তাহলে কিন্তু ভুল বলা হবে না!
advertisement

তবে তাঁর আগে বলতে হবে শোভাবাজর রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা নবকৃষ্ণ দেবের কথা। পলাশীর যুদ্ধের আগে ইনি ছিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মুন্সি, পরে হয়েছিলেন সুতানুটির তালুকদার। এর পরে ওয়ারেন হেস্টিংসের মুন্সি, তারপর ড্রেক সাহেব তেজাউদ্দীনকে কোম্পানির মুন্সির পদ থেকে সরিয়ে সেখানে বসালেন নবকৃষ্ণকে।

পলাশীর যুদ্ধের ফলে নবকৃষ্ণের কপাল খুলে গেল। মীরজাফর, রামচাঁদ রায়,আমীর বেগ আর নবকৃষ্ণ মিলে সিরাজদ্দৌলার লুকোনো কোষাগার লুঠ করে বহু কোটি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে নিলেন। নবকৃষ্ণ কেবল টাকাই পেলেন না ! বাড়তি পাওনা ছিল সম্মান ও ক্ষমতা।

advertisement

১৯৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশির রণাঙ্গনে মীরজাফরের বেইমানির দরুণ ইংরেজ সেনপতি ক্লাইভের হাতে নবাব সিরাজদ্দৌলার পরাজয় ঘটলে সবচেয়ে যাঁরা উল্লসির হয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে ছিলেন নদিয়ার কৃষ্ণচন্দ্র আর কলকাতার নবকৃষ্ণ। কোম্পানির জয়কে তাঁরা হিন্দুর জয় মনে করলেন। ধূর্ত ক্লাইভও তাঁদের তেমনই বোঝালেন। ক্লাইভের পরামর্শেই তাঁরা পলাশীর যুদ্ধের বিজয়-উৎসব করার আয়োজন করলেন।

advertisement

বসন্তকালীন দুর্গাপুজোকে তাঁরা পিছিয়ে আনলেন শরৎকালে! ১৭৫৭ সালে বহু টাকা ব্যয়ে শরৎকালীন দুর্গাপুজো করে তাঁরা পলাশীর যুদ্ধের স্মারক উৎসব পালন করলেন! অন্যান্য হিন্দু জমিদার বা ব্যবসায়ীরাও মহা উৎসাহে সেই ফূর্তিতে যোগদান করলেন!

অদ্ভুত ব্যাপার হল, ক্লাইভ নিজে খ্রিষ্টান আর মূর্তিপুজোর বিরোধী হয়েও স্রেফ রাজনীতির স্বার্থে 'হিন্দু প্রেমিক' সেজে নবকৃষ্ণের নবনির্মিত ঠাকুরবাড়ির দুর্গাপুজোয় একশো একটাকা দক্ষিণা আর ঝুড়ি ঝুড়ি ফলমূল পাঠিয়েছিলেন। শুধু তাই না, দুর্গাপুজোর সময় তিনি নবকৃষ্ণের বাড়িতে উপস্থিতও ছিলেন। সেই পুজোয় কৃষ্ণচন্দ্র ও নবকৃষ্ণ দুজনেই লক্ষ লক্ষ টাকা খরচা করেছিলেন। নবকৃষ্ণ টাকা পেয়েছিলেন সিরাজদ্দৌলার গুপ্ত কোষাগার লুঠ করে আর কৃষ্ণচন্দ্র ক্লাইভের প্রত্যক্ষ কৃপায়। ক্লাইভের সুপারিশে কৃষ্ণচন্দ্রের বার্ষিক খাজনা বরাবরের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা করে কমে গিয়েছিল। ফ্যানি পার্কস লিখেছিলেন, ''ধনিক বাঙালীবাবুরা পূজার সময় যে পরিমাণ অর্থব্যয় করেন তার হিসেব নেই।'' (অনুবাদ)

advertisement

কিন্তু এদেশে তো বরাবর বসন্তকালে দুর্গাপুজোর প্রচলন ছিল। শরৎকালে আয়োজিত হত নবপত্রিকাপুজো। তা হলে এটা কী হল? কী আবার! ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের বিজয়োৎসব পালন করার জন্য বসস্তকালের দুর্গা পুজোকে শরৎকালে টেনে নিয়ে এসে নবপত্রিকাপুজোর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হল। কাজটা করলেন নবকৃষ্ণ আর কৃষ্ণচন্দ্র ! মদত দিলেন ধূর্ত ক্লাইভ! আর 'বোকা' নব্যবাঙালি বা জেন্টুদের দল সেই আমোদের জোয়ারে বয়ে গিয়ে নিজেদের এতবছরের সজত্নে লালিত সংস্কৃতির বিসর্জন দিয়ে ফূর্তির ফোয়াড়ায় গা ভাসালেন!

advertisement

বাংলা খবর/ খবর/ফিচার/
শরৎকালের দুর্গাপুজো আদতে পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের জয়ের ' গ্র্যান্ড সেলিব্রেশন'