TRENDING:

Buddhadeb Guha : যাপনের মতো অরণ্যের রাজার নশ্বর প্রস্থানে জীবনেরই জয়গান

Last Updated:

বাঙালির অরণ্যপাঠের হাতেখড়ি যদি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলমে, আরণ্যকযাপন বুদ্ধদেব গুহর (Buddhadeb Guha) ছায়ায়

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
কোজাগরীর চাঁদ তাঁর আর্জিতে অস্ত যায় বাওবাব গাছের পিছনে ৷ বাঙালির অরণ্যপাঠের হাতেখড়ি যদি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলমে, আরণ্যকযাপন বুদ্ধদেব গুহর (Buddhadeb Guha) ছায়ায় ৷ তবে তিনি নিজে শুধু সাহিত্যিক হয়ে থাকতে চাননি ৷ বরং বাঁচতে চেয়েছিলেন জীবনরসিক হয়ে, বহু পরিচয়ে ৷
advertisement

জন্ম ১৯৩৬ সালে, কলকাতায় ৷ শৈশব কেটেছিল পূর্ববঙ্গের রংপুর, বরিশালের বিভিন্ন অংশে ৷ পরে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের প্রাক্তনীর কলমে বার বার ঘুরে ফিরে এসেছে পূর্ববঙ্গ ৷

সাহিত্যিক পরিচয়ের আড়ালে কিছুটা হলেও চাপা পড়ে যায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের সাফল্য ৷ অথবা পুরাতনী গানের সুর ৷ কিংবা ক্যানভাসের রং ৷ কিন্তু তাঁর সব ভাবমূর্তিতেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে অরণ্যের বোহেমিয়ান রূপ ৷

advertisement

নিটোল ঘরের নিভৃত সংসার থেকে তিনি বার বার পাঠককে নিয়ে গিয়েছেন টাঁড়ের মাটিতে অথবা শ্বাপদসঙ্কুল জঙ্গলের তাঁবুতে ৷ কালিদাসের যে বনজ্যোৎস্নায় সুনীলের নবীনকুমার তাঁর অধরা প্রেয়সীর নামকরণ করেছিলেন, সেই বনজ্যোৎস্নায় স্নান করে বুদ্ধদেবের কুর্চি, রুরু, ঋভু পৃথু-রা ৷

ঋভু থেকে ঋজুদা, তাঁর কিশোরসাহিত্যের মধ্যেও কৈশোরের সারল্যকে শাসন করে বয়সন্ধির কৌতূহল ৷ ঋজুদা আসলে তিনি নিজেই ৷ ভাবতে ভালবাসে পাঠক ৷ ‘রুআহা’, ‘গুগুনোগুম্বারের দেশে’, ‘অ্যালবিনো’, ‘ল্যাংড়া পাহান’-এর মতো উপন্যাস নিছক প্রকৃতিপাঠ বা শিকারকাহিনি নয় ৷ এ আসলে পাঠককে নিয়ে যাওয়া সেই বিন্দুতে, যেখানে থেকে শুরু হয়েছিল মানুষের স্থাবর থেকে জঙ্গমযাত্রা ৷ অস্ত্রের খুঁটিনাটি, শিকারের ভালমন্দ ছাপিয়ে তাঁর আখ্যান আসলে প্রকৃতির সঙ্গে, প্রাণীদের সঙ্গে করবেটসুলভ একাত্মতা ৷ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনায় অরণ্য যদি ঈশ্বরিক, বুদ্ধদেব গুহর সৃষ্টিতে জঙ্গল আদিম ৷

advertisement

জঙ্গলের পর্ণমোচীর মতো তিনিও ছিলেন ত্যাগে দ্বিধাহীন ৷ বলতেন, স্ত্রী নামী রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী বলেই তিনি চর্চা করেন পুরাতনী গান ৷ এক দশকের বিচ্ছেদের পর হয়তো অন্য কোথাও আবার ঋতুর মুখোমুখি তিনি ৷ গন্ধর্বলোকে কি চলছে সঙ্গীতচর্চা? যে সঙ্গীত একদিন তাঁদের কাছাকাছি এনেছিল ৷ ‘দক্ষিণী’-তে গান শিখতে গিয়েই দু’জনের প্রথম আলাপ ৷ সেই দীর্ঘ আলাপে মাঝে সুর কেটে গিয়েছিল ২০১১ সালে ঋতু গুহর প্রয়াণে ৷

advertisement

বু্দ্ধদেব গুহর প্রয়াণে স্মৃতিচারণে ভিড় করে এসেছে ‘বাবলি’, ‘কোয়েলের কাছে’, ‘একটু উষ্ণতার জন্য’, ‘চানঘরে গান’, ‘মাধুকরী’, ‘নগ্ন নির্জন’, ‘কোজাগর’ বা ‘হলুদ বসন্ত’ ৷ তবে অরণ্য ও জীবনের উদযাপন বহুমাত্রায় রয়েছে ‘বাজে চন্দনপুরের কড়চা’, ‘চবুতরা’, ‘চাপরাশ’, ‘ছৌ’, ‘লবঙ্গির জঙ্গলে’-র প্রতি কোণাতেও ৷

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
চা বিক্রির টাকায় তিন বছরে ৬৯ হাজার কয়েন! মেয়ের জন্য স্কুটি কিনে চমকে দিলেন বাবা
আরও দেখুন

কোনও পাঠকের মনের কোণায় চলে এসেছে তাঁর কলমের অপেক্ষাকৃত ঈষৎ অল্প আলোচিত ‘বাজা তোরা রাজা যায়’ ৷ বৃদ্ধ হলেও বাঘ যে রাজা-ই, সে কথা বোঝাতে এর চেয়ে রাজকীয় লেখনী বোধহয় হয় না ৷ তাঁর নশ্বর প্রয়াণও বলে অরণ্যের রাজার চলে যাওয়ায় জীবনের জয়গান থাকুক, হারানোর শোক নয় ৷

advertisement

বাংলা খবর/ খবর/ফিচার/
Buddhadeb Guha : যাপনের মতো অরণ্যের রাজার নশ্বর প্রস্থানে জীবনেরই জয়গান
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল