TRENDING:

পয়লা বৈশাখ ২০২১: স্বামী-সোহাগী হতে বৈশাখের দ্বিতীয় দিন 'বউ' মেলায় মেতে ওঠে এই গ্রাম

Last Updated:

স্বামীর সোহাগিনী হতেই হিন্দু রমনীরা ছুটে আসেন এই পুজোয়। মনস্কামনা পূর্ণ করতে বিবাহিত মহিলাদের ভিড় জমে যায় ৷

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#নারায়নগঞ্জ: বাঙালির কাছে এ দিনের রুটিনটা বছরের আর পাঁচটা দিনের থেকে এক্কেবারে আলাদা ৷ পয়লা বৈশাখ বলে কথা ৷ রোজকার দশটা-পাঁচটা ভুলে, এ দিনটা একটু অন্যরকম তো হবেই ৷ ভোর ভোর ঘুম থেকে ওঠে গঙ্গায় স্নান৷ এরপর ন্যতুন কাপড়ে শুদ্ধ চিত্তে লক্ষ্মী-গণেশের সামনে জোড় হাতে বসে পড়া ৷ পুজো শেষে মিষ্টি মুখ ৷ দুপুরে সোনা মুগের ডাল থেকে শুরু করে কচি পাঠার ঝোল সহযোগে গরমা গরম ঝরঝরে বাঁশকাঠি চালের ভাত দিয়ে উদরপূর্তি৷ বিকেলে একটু ভাত-ঘুম ৷ সন্ধ্যায় দোকানে দোকানে ঘুরে হালখাতা সেরে একগাদা মিষ্টির প্যাকেট আর ক্যালেন্ডার নিয়ে বাড়ি ফিরে আসা৷ মাঝে কোথাও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে টুক করে কোথাও একটা বসে আড্ডা সেরে ফেলা৷ ইদানীং সান্ধ্যকালীন রুটিনে বদল ঘটেছে খানিক৷
advertisement

এখন পয়লা বৈশাখের সন্ধ্যা মানেই বড় কোনও রেস্তোরাঁয় গিয়ে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে বাঙালি খাবার ট্রাই করা ৷ এই বাংলায় বাংলা নববর্ষের ছবিটা খানিকটা এমনই ৷ তবে শেষ দু'বছরে সে সবে ছেদ পড়েছে। সৌজন্যে করোনা অতিমারী। গত বছরে পয়লা বৈশাখের দিনে দেশজুড়ে লকডাউন জারি ছিল। ফলে সকলেই অপেক্ষায় ছিলেন, এ বারে আগের বছরের সব না পাওয়া ভুলে দ্বিগুন আনন্দে মেতে উঠবেন। কিন্তু করোনা ফের যেভাবে বেড়েছে, তাতে এ বারে লকডাউন না হলেও বাইরে বেরিয়ে হুল্লোড় করার মতো পরিস্থিতি নেই।

advertisement

তবে ওপার বাংলার বাঙালিদের মধ্যে পয়লা বৈশাখ নিয়ে উদ্দীপনা খানিক বেশিই৷ রমনার বটমূলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে সূচনা৷ ঢাকার রাজপথে তখন হাজার হাজার মানুষের ভিড়৷ লাল আর সাদায় তখন রেঙে উঠেছে রাজপথ ৷ এ বারে সেখানেও কড়া প্রশাসন। করোনা সংক্রমণে রাশ টানতে আগামিকাল থেকে বাংলাদেশে লকডাউন।

advertisement

তবে প্রত্যন্ত গ্রামে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষ্যে অন্য ভাবে মেতে ওঠে এখনও ৷ সেই পুরনো গন্ধটা এখনও মিলেমিশে রয়েছে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে৷ পয়লা বৈশাখকে কেন্দ্র করে তো কত ধরনের মেলাই না বসে ৷ তবে সোনারগাঁওয়ের মেলা এক্কেবারে ভিন্ন৷ মেলার নামের মধ্যেই রয়েছে বৈচিত্র্যের ইঙ্গিত৷ নাম ‘বউমেলা’৷

advertisement

চারশো বছরের পুরনো একটি বটগাছ কেন্দ্র করে যুগ যুগ ধরে পালিত হচ্ছে এ বউ মেলা। বৈশাখ মাসের দ্বিতীয় দিন থেকে পাঁচদিনব্যাপী এই মেলা শুরু হয়। বটগাছের নীচে সিদ্ধেশ্বরী দেবীর পুজো দিয়ে শুরু হয় মেলা ৷ পুজোতে মূলত অংশ নেন মহিলারাই ৷ পুরুষরাও অংশ নেন, তবে সংখ্যায় কম ৷ লোক মুখে প্রচার, স্বামীর সোহাগিনী হতেই হিন্দু রমনীরা ছুটে আসেন এই পুজোয়। মনস্কামনা পূর্ণ করতে বিবাহিত মহিলাদের ভিড় জমে যায় ৷ আর সেই কারণেই এই মেলা নাম ‘বউমেলা’ ৷

advertisement

যে বটবৃক্ষের নীচে পুজো হয়, তা স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে হয়ে উঠেছে পুণ্যের দেবতা। তাই হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে বটবৃক্ষটি সিদ্ধেশ্বরী দেবতা নামে সুপরিচিত৷ রেকাবি ভরা বৈশাখী ফলের ভোগ নিয়ে দলে দলে হিন্দু নারীরা হাজির হন বউ মেলায়। দেবতার সন্তুষ্টির জন্য এখানে আগে বলি দেওয়া হত৷ তবে এখন সেই প্রথা বিলুপ্ত ৷ বরং শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিতে ওড়ানো হয় পায়রা ৷ শোনা যায়, স্বামী সংসারের বাঁধন যেন অটুট থাকে সারা বছর সুখ শান্তিতে যেন কাটে দাম্পত্য জীবন এই কামনাতেই পুজোর আয়োজন করে হিন্দু নারীরা।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

আর এই পুজোকে কেন্দ্র করেই বটবৃক্ষের পাশের মাঠে বসে বিরাট মেলা ৷ স্থানীয় মানুষজনের পাশাপাশি অন্যান্য জেলার মানুষও জড়ো হন এই মেলায়৷ তবে, সময়ের পালা বদলে এ ‘বউ মেলা’ এখন তার অতীত জৌলুস অনেকটাই হারিয়ে এখন বর্ণহীন। মেলার জন্য পর্যাপ্ত স্থান না থাকার কারণে মেলায় আগত দর্শণার্থীদেরকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রামগঞ্জে পালিত হওয়া ঐতিহ্যবাহী মেলাগুলো এখন বিলুপ্তির প্রায় পথে। সেখানে শিবরাত্রির সলতে মতো এখনও জিইয়ে রয়েছে সোনারগাঁওয়ের ‘বউমেলা’৷ যদিও এ বারে করোনার জন্য সেই মেলা আদৌ হবে কিনা, তা নিয়ে কোনও তথ্য আমাদের কাছে নেই।

বাংলা খবর/ খবর/ফিচার/
পয়লা বৈশাখ ২০২১: স্বামী-সোহাগী হতে বৈশাখের দ্বিতীয় দিন 'বউ' মেলায় মেতে ওঠে এই গ্রাম
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল