net-zero-এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
Net-zero বলতে কার্বন নিউট্রালিটিকে বোঝানো হয়। এর অর্থ এই নয় যে, কোনও দেশ একদম শূন্যে নামিয়ে আনবে কার্বন নিঃসরণ। আসলে নেট জিরোর মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণের পাশাপাশি গ্রিনহাউজ গ্যাসগুলিকে দূর করারও অঙ্গীকার নিতে হয়। সেই সূত্র ধরেই প্যারিস চুক্তি, ক্লাইমেট সামিট-সহ একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে।
এক্ষেত্রে আমেরিকার তরফে বার বার নানা প্রতিবন্ধকতা সামনে এসেছে। এর আগে আমেরিকার তরফে কোনও প্রতিনিধি পাঠানো হয়নি এই সম্মেলনে। এক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পকেই (Donald Trump) দায়ী করা হয়। তবে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হাত ধরে বরফ গলতে পারে। আগে একটি বিবৃতিতে বাইডেন জানিয়েছিলেন, তাঁর কার্যকাল শুরু হওয়ার ১০০ দিনের মধ্যেই জলবায়ু ইস্যুতে পদক্ষেপ করবেন তিনি। তাই সে দিকেও তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।
advertisement
আমেরিকার পাশাপাশি একাধিক দেশ নেট-জিরো নিঃসরণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছে। প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে আমেরিকা ৬৮ শতাংশ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ৫৫ শতাংশ কার্বন নিঃসরণের অঙ্গীকার নিয়েছে। পাশাপাশি চিন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া-সহ অনেক দেশ ২০৫০ বা ২০৬০ সালের মধ্যে নেট-জিরো নিঃসরণের পরিকল্পনা নিয়েছে। আপাতত সময়ের অপেক্ষা।
ভারতের অভিযোগ
এই বছরই প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। অধিকাংশ দেশ ২০২৫ বা ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রার কথা জানিয়েছে। আর ঠিক এখানেই একটি যুক্তি খাড়া করেছে ভারত। ভারতের বক্তব্য, প্যারিস চুক্তির রূপরেখাকে একটু দূরে সরিয়ে রেখে দেশগুলিকে অন্য বিষয়ের উপরে আলোকপাত করতে হবে। সবার আগে দেখতে হবে, এত দিন পর্যন্ত তারা কী করেছে? নিজেদের দেওয়া প্রতিশ্রুতিতে কতটা সফল হতে পেরেছে? প্যারিস চুক্তিতে সুনির্দিষ্ট ভাবে কী কী স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে, সেই বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছে ভারত।
এক্ষেত্রে একটি বিষয়কে বার বার কটাক্ষ করেছে ভারত। আঙুল তুলেছে উন্নত দেশগুলির দিকে। ভারতের বক্তব্য, অতীতে এই ধরনের নানা অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতিতে টিঁকে থাকতে পারেনি উন্নত দেশগুলি। প্যারিস চুক্তি ও কিয়োটো প্রোটোকল (Kyoto Protocol) অনুযায়ী এই ধরনের লক্ষ্যপূরণে একাধিক দেশ ব্যর্থ হয়েছে। অনেক দেশ সোজাসুজি কিয়োটো প্রোটোকল থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। ২০২০ সালে তারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেটিও রাখতে পারেনি। আর সেই সূত্র ধরেই ভারতের বক্তব্য, ২০৫০ সালের কার্বন নিউট্রালিটির প্রতিশ্রুতিও একই দিকে এগোচ্ছে। অনেকেই এই লক্ষ্যপূরণে ব্যর্থ হতে পারে। এক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলিকে আরও দৃঢ় পদক্ষেপ করতে হবে।
একই সঙ্গে একটি আশার আলো রয়েছে। ভারতের বার্তা, এখন থেকেই ২০৫০-৬০ সালের এই কার্বন নিউট্রালিটির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে হয় তো এই লক্ষ্যপূরণ সম্ভব। তবে এত আগে থেকে আন্তর্জাতিক স্তরে কোনও অঙ্গীকার করা সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, নানা স্তরে এই একই অভিযোগ স্পষ্ট হয়েছে। অধিকাংশ সদস্য দেশের কথায়, ২০১৫ সালে যে প্যারিস চুক্তি হয়েছিল তা সম্পন্ন করার জন্য বিশ্ব এখনও যথাযথ অবস্থানে নেই। গত বছরই প্যারিস চুক্তি গ্রহণের পাঁচ বছর স্মরণে আমেরিকা, রাষ্ট্রসংঘ ও ফ্রান্সের যৌথ উদ্যোগে ‘ক্লাইমেট অ্যাম্বিশন সামিট’ আয়োজিত হয়েছিল। বহু বিশ্ব নেতা উপস্থিত ছিলেন সেখানে। সেই বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি কার্বন ডাই-অক্সাইড কমানোর অঙ্গীকার করেন। তবে ২০৪৭ সালের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিলেন। তাই আপাতত নানা জল্পনা জারি। আর সঙ্গী এক দীর্ঘ অপেক্ষা!