TRENDING:

Covovax: WHO- এর ছাড়পত্র পেল 'কোভোভ্যাক্স', কেন এই ভ্যাক্সিন কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মাইলফলক? জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা

Last Updated:

নোভাভ্যাক্সের লাইসেন্সের আওতায় কোভ্যোভ্যাক্স তৈরি করেছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (SII)।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#নয়াদিল্লি: শুক্রবার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সেরাম ইনস্টিটিউটের (Serum Institute of India) কোভোভ্যাক্স (Covovax) টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন (Emergency Use Approval) দিয়েছে। এনিয়ে বিশ্বব্য়াপী মোট ৯টি টিকাকে জরুরি অনুমোদন দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। নোভাভ্যাক্সের লাইসেন্সের আওতায় কোভ্যোভ্যাক্স তৈরি করেছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (SII)। সরকারি বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, "বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এনভিএক্স-কোভ২৩৭৩-কে জরুরিকালীন ব্যবহারের জন্য করোনা টিকা হিসেবের তালিকাভুক্ত করেছে। কোভোভ্যাক্স নামের এই টিকা, নোভাভ্যাক্সের (Novavax) লাইসেন্সের আওতায় সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার দ্বারা উৎপাদিত এবং এটি কোভ্যাক্স সুবিধা পোর্টফোলিওর অংশ। যা নিম্ন আয়ের দেশগুলিতে আরও বেশি মানুষকে টিকা দেওয়ার যে উদ্যোগ চলছে, তাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ।" সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া-র তরফে সেই পদক্ষেপকে 'আরও একটি মাইকফলক' হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন সেরাম কর্ণধার আদর পুনাওয়ালা।
advertisement

কোভোভ্যাক্স দুই ডোজের টিকা: সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার কোভোভ্যাক্স হল আমেরিকান বায়োটেকনোলজি কম্পানি নোভাভ্যাক্স এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপারেডনেস ইনোভেশনস (CEPI)-র লাইসেন্সের অধীনে তৈরি টিকার একটি প্রোটিন সাবইউনিট। ভারত সহ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে টিকা তৈরি এবং সরবরাহ করার লাইসেন্স সেরামকে দিয়েছে নোভোভ্যাক্স। ভারতে বর্তমানে ব্যবহৃত অন্যান্য টিকার মতো এটিও দুই-ডোজ শট। এই টিকার সংরক্ষণের জন্য ২-8 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন।

advertisement

এটা কী ভাবে কাজ করে?

সমস্ত কোভিড টিকা প্রাথমিকভাবে স্পাইক প্রোটিনকে টার্গেট করে। কোভোভ্যাক্স হল একটি রিকম্বিন্যান্ট প্রোটিন টিকা, যা স্পাইক প্রোটিনগুলিকে সংক্রমিত করতে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ইমিউন সিস্টেমকে প্রশিক্ষণ দেয়। পরিবর্তিত SARS-CoV-2 স্পাইক জিন ধারণকারী একটি ইঞ্জিনিয়ারড ব্যাকুলোভাইরাস তৈরি করে টিকাটি তৈরি করা হয়েছে। তার পর স্পাইক জিন বহনকারী ভাইরাসটি মথ কোষকে সংক্রমিত করতে ব্যবহার করা হয়। কোষগুলি তখন নভেল করোনাভাইরাসের সঙ্গে যুক্ত স্পাইক প্রোটিন তৈরি করে। পরের ধাপে স্পাইক প্রোটিন সংগ্রহ করা হয় এবং শুদ্ধ করা হয়, যার পরে এই স্পাইক প্রোটিনের একটি নির্দিষ্ট ডোজ টিকা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যে স্পাইক প্রোটিনগুলিতে ভাইরাসের কোনও জীবন্ত উপাদান থাকে না, সেগুলিকে নিরাপদ বলা হয় এবং তা সংক্রমণের দিকে পরিচালিত করে না। যাই হোক, এইগুলিই একটি ইমিউন প্রতিক্রিয়া তৈরির করার দিকে কাজ করে, যা ফলস্বরূপ অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এখানে টিকা হল ভাইরাসের একটি অনুকরণ, যার কাজ ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডির একটি প্রতিরক্ষামূলক স্তর তৈরি করা।

advertisement

ওমিক্রন প্রজাতির বিরুদ্ধে এটা কি কার্যকরী প্রমাণিত হবে?

অতিমারির আবহে টিকা মানবজীবনে আশীর্বাদের চেয়ে কম কিছু নয়। যদিও সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের এখনও ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা রয়েছে। টিকা কেবল গুরুতর সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে, হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। ক্লিনিকাল ট্রায়ালে গুরুতর কোভিড সংক্রমণের বিরুদ্ধে কোভোভ্যাক্স ৯৬.৪ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে। প্রথম ডোজের দুই সপ্তাহ পরে এই টিকার কার্যকারিতা প্রায় ৮৩.৪ শতাংশ। কয়েকটি নতুন প্রজাতির বিরুদ্ধেও এই টিকা কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে। আলফা প্রজাতির বিরুদ্ধে প্রায় ৮৬.৩ শতাংশ ও বিটা প্রজাতির বিরুদ্ধে মাত্র ৪৯ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে।

advertisement

ডেল্টা (Delta) ভ্যারিয়ান্টের পরিপ্রেক্ষিতে কোভোভ্যাক্স বলেছে যে দুই ডোজ টিকা নেওয়ার ৬ মাস পরে বুস্টার ডোজ নিলে তা অ্যান্টিবডির সংখ্যা ৪.৬ গুণ বৃদ্ধি করতে পারে। এখন ওমিক্রন (Omicron) প্রজাতি নতুন উদ্বেগের কারণ। কোভোভ্যাক্স টিকা নতুন এই প্রজাতির বিরুদ্ধে কার্যকরী প্রমাণিত হবে কি না তা এখনও দেখা বাকি।

কোভিশিল্ডের চেয়ে অনেক ভাল: সরকারের জিনোম সিকোয়েন্সিং মনিটরিং এজেন্সি INSACOG-র একজন পরিচালক অনুরাগ আগরওয়াল জানিয়েছেন, কোভোভ্যাক্স শক্তিশালী প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। এই টিকার চমৎকার নিরাপত্তা প্রোফাইল রয়েছে। কোভোভ্যাকিসের কার্যকারিতা কোভিশিল্ডের (Covishield) চেয়ে বেশি বলেই তিনি মনে করেন। আগরওয়াল বলেন, “বুস্টার হিসাবে কোভিশিল্ডের তৃতীয় ডোজের চেয়ে কোভোভ্যাক্স ভালো।" তবে তিনি এটাও বলেছেন যে নতুন ওমিক্রন প্রজাতির বিরুদ্ধে এই টিকার কার্যকারিতা নিশ্চিত করার জন্য আরও তথ্যে প্রয়োজন। তবে, কোভোভ্যাক্সকে বুস্টার হিসেবে চালু করার জন্য ভারত সরকারের আর সময় নষ্ট করা উচিত নয়।

advertisement

শিশুদের কি এই টিকা দেওয়া হবে?

সম্প্রতি, সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (এসআইআই)-র সিইও আদর পুনাওয়ালা আগামী ৬ মাসের মধ্যে বাচ্চাদের জন্য কোভোভ্যাক্স টিকা চালু করার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, "আমরা শিশুদের মধ্যে খুব বেশি গুরুতর রোগ দেখিনি। ভাগ্যক্রমে, বাচ্চাদের জন্য আতঙ্ক নেই। যাই হোক, আমরা ৬ মাসের মধ্যে তাদের জন্য একটি টিকা চালু করব, আশা করছি তিন বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের এই টিকা দেওয়া যাবে।" তিনি আরও বলেন, "আমাদের কোভোভ্যাক্স টিকা তিন বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে চমৎকার কার্যকারিতা দেখিয়েছে" পুনাওয়ালা শিশুদের টিকা দেওয়ার গুরুত্বও তুলে ধরেন। বলেন, “হ্যাঁ, আমি মনে করি বাচ্চাদের টিকা দেওয়া উচিত। কোনও ক্ষতি নেই, টিকা নিরাপদ এবং কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। শুধু সরকারের ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করুন।" করোনার নতুন স্ট্রেন ‘ওমিক্রন’ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই সেরাম কর্ণধার বলেছিলেন, সরকার চাইলে বুস্টার ডোজ সরবরাহের জন্য তাঁরা তৈরি। পর্যাপ্ত পরিমাণে কোভিশিল্ডও মজুত রয়েছে। খোলা বাজারে বুস্টার ডোজের প্রতিটির দাম ৬০০ টাকার কাছাকাছি পড়বে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ভারতে এখনও পর্যন্ত ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সের লোকেরা টিকা নেওয়ার যোগ্য। বর্তমানে, জাইডাস ক্যাডিলার জাইকোভ-ডি টিকা ১২ বছর বা তার বেশি বয়সিদের দেওয়ার জন্য জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (DCGI)।

কোভিডের ওমিক্রন প্রজাতি কি প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে শিশুদের বেশি প্রভাবিত করছে?

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম চিহ্নিত হওয়া ওমিক্রনকে গত ২৬ নভেম্বর ‘ভ্যারিয়ান্ট অফ কনসার্ন’ বলেছিল হু। ওমিক্রনের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় ৯০টি দেশে। ভারতে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা আজ পর্যন্ত বেড়ে হয়েছে ২০০ জন। শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। এই রাজ্যে ৫৪ জন নতুন প্রজাতিতে আক্রান্ত। তার পরেই দিল্লি, এখানেও আক্রান্ত ৫৪ জন। দক্ষিণ আফ্রিকার সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে দেশে ওমিক্রন প্রাদুর্ভাবের পরে মাঝারি থেকে গুরুতর উপসর্গ নিয়ে আরও বেশি শিশু হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। অনেকদিন ধরেই বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকরা শিশুদের টিকা (Covid Vaccine) দেওয়ার তাগিদ দিয়ে আসছেন। যদিও কিছু দেশে ১২ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। তবে, ভারতের মতো বেশ কয়েকটি দেশ এখনও ১৮ বছরের কম বয়সিদের টিকা দেওয়ার অনুমতি দেয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে কোভিড উপযুক্ত আচরণ অনুসরণ করা এবং টিকা দেওয়াই সামনে একমাত্র রাস্তা।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

বাচ্চাদের জন্য এখনও কোন টিকা নেই: ভারত সহ বেশ কয়েকটি দেশ এখনও বাচ্চাদের টিকাকরণ (Vaccine Administration In kids) শুরু করতে পারেনি। প্রাথমিকভাবে, শিশুরা নিজেরাই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম বলে বিশ্বাস করা হয়েছিল। জটিলতার কোনও লক্ষণ ছিল না। এই কারণে তাদের টিকা দেওয়ার জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি। যাই হোক, সময়ের যত গড়িয়েছে ততই বাচ্চাদের মধ্যে কোভিড মামলার সংখ্যা বেড়েছে। নতুন প্রজাতিগুলির বিকাশে এই সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। যদিও কোভিড টিকা নিলেই ভাইরাসের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে না। তবে ঝুঁকি অবশ্যই কমে, সংক্রমণ তীব্রতার সম্ভাবনা হ্রাস করে এবং হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি হ্রাস করে। দক্ষিণ আফ্রিকার হাসপাতালে শিশুদের অবস্থা বিবেচনায় রেখে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিশুদের টিকা দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলা খবর/ খবর/Explained/
Covovax: WHO- এর ছাড়পত্র পেল 'কোভোভ্যাক্স', কেন এই ভ্যাক্সিন কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মাইলফলক? জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল