সারং কেন আর কী ভাবে সেনার ভয়ের কারণ হয়ে উঠেছে?
সারং মায়ানমারের একটি ঐতিহ্যবাহী পোশাক। এটি সাধারণত ১ মিটার চওড়া এবং আড়াই মিটার লম্বা হয়। জিনিসটা অনেকটা আমাদের দেশের শাড়ির মতো। পরাও হয় সে রকম ভাবেই পাকে পাকে। তবে শাড়ি যেন কাঁধ থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত পুরোটাই ঢেকে রাখে, সারংয়ের ক্ষেত্রে তা হয় না। এটি পাকে পাকে জড়িয়ে রাখা হয় বুক থেকে কোমরের একটু নিচ পর্যন্ত। আগে মায়ানমারের পুরুষেরাও কোমরের নিচ থেকে পাকে পাকে সারং পরতেন। তবে পরে ধীরে ধীরে এটি কেবলমাত্র মহিলাদের পোশাক হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে আর তার সঙ্গে মিশে যায় এক লোকবিশ্বাস।
advertisement
সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠে যে পুরুষেরা কেন সারং পরা ছেড়ে দিলেন মায়ানমারে! লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, সারং কোনও সাধারণ পোশাক নয়, এর রয়েছে দৈব ক্ষমতা। এটি শরীরে নারীর মতো লাবণ্য এবং নমনীয়তার সঞ্চার ঘটায়। তাই কোনও পুরুষ যদি সারং পরেন, তবে তিনি তাঁর পৌরুষ হারিয়ে ফেলেন বলে মায়ানমার বিশ্বাস করে। তবে এই পৌরুষ হারিয়ে ফেলার ধারণা শুধুই সারং পরার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বলা হয়, যদি কোনও পুরুষ সারংয়ের তলায় কোনও ভাবে চলে আসেন, তাহলেও তাঁর পৌরুষের হানি ঘটবে।
এই লোকবিশ্বাসকে হাতিয়ার করেই এখন মায়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থান এবং সেনার আগ্রাসন ঠেকিয়ে রাখছেন মেয়েরা। তাঁরা এলাকার পথের এক ধার থেকে আরেক ধারে সামিয়ানার মতো টাঙিয়ে দিচ্ছেন সারং, যাতে এলাকায় পা রাখলে সেনাকে তার তলা দিয়েই যাতায়াত করতে হয়!
প্রসঙ্গত, ১ ফেব্রুয়ারি মায়ানমারের সেনাবাহিনী দখল করে নেয় ক্ষমতা, দেশ থেকে কার্যত গণতন্ত্রের পতন ঘটে। বন্দী করা হয় ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি বা NLD-র অন্যতম প্রধান অং সান সু চি (Aung San Suu Kyi) এবং আরও কিছু নেতাকে। তার পর থেকেই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নানা ভাবে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে দেশ, এর মধ্যেই সাম্প্রতিক সংযোজন হল সারংয়ের ব্যবহার।