এই জায়গায় এসে একটা কথা বলে রাখা ভালো- নিউ শেফার্ড এর আগে ১৫ বার মহাশূন্যে গিয়েছে ঠিকই, তবে কোনও বারেই সে কোনও মানুষকে পৃথিবী থেকে নিয়ে যায়নি। সেই কারণেই এই ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হল এই যে মহাকাশ পর্যটনের লক্ষ্যে নানা সংস্থা ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে। তবে সব কিছু যদি ঠিক থাকে, তাহলে বেজোসের সংস্থাই প্রথম পৃথিবী থেকে পর্যটক নিয়ে মহাশূন্য থেকে ঘুরে আসবে। যে রকেট বনাম ক্যাপসুলটি বেজোস-সহ অন্যদের মহাকাশে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত, তাতে মোট ৬ জন যাত্রীর স্থান সঙ্কুলান হতে পারে। মহাশূন্যে ১০০ কিলোমিটার মতো পথে সে ঘোরাঘুরি করবে বলে জানা গিয়েছে। উচ্চতায় এই রকেটটি ৬০ ফুট, এর নাম রাখা হয়েছে অ্যালেন শেফার্ড (Alan Shepard)। এছাড়াও তৈরি আছে নিউ গ্লেন (New Glenn) নামের আরেকটি রকেট, যা মহাশূন্যে ভারি জিনিস বয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যবহার করা হবে বলে শোনা যাচ্ছে।
advertisement
এর ঠিক পরেই যে প্রশ্নটা উঠে আসে, তা নিখাদ পর্যটন সম্পর্কিত। বলা তো হচ্ছে মহাকাশে পর্যটন, কিন্তু নিলামে টিকিট কেটে, রকেটে সওয়ার হয়ে যাত্রীরা ঠিক কী অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হবেন? এর উত্তরও দিয়েছে ব্লু অরিজিন। জানিয়েছে যে মহাশূন্যে কক্ষপথে মোট ১১ মিনিট রকেটটি অবস্থান করবে। এই সময়ে মহাকাশ থেকে পৃথিবী দর্শন করতে পারবেন যাত্রীরা, সেই সঙ্গে অনুভব করতে পারবেন মাধ্যাকর্ষণহীনতা। আর এই মাধ্যাকর্ষণহীনতার সূত্রেই উঠে আসে আরেকটা প্রশ্ন- ব্যাপারটা কত দূর নিরাপদ হবে? কেন না, এই সংস্থার ট্রেনিং মাত্র ১ দিনের! মহাকাশে যাত্রার আগের দিন কেবিনের মধ্যে ঘোরাফেরা, মাধ্যাকর্ষণের টান কাটানো, সুরক্ষাবিধি এই সব সম্পর্কে মহাকাশচারীকে ট্রেনিং দিয়ে থাকে সংস্থা, তাদের মতে এই ১ দিনের ট্রেনিংই পর্যাপ্ত!
NASA এই প্রসঙ্গে জানিয়েছে যে যাত্রীদের এক্ষেত্রে খুব একটা সুখকর কিছু প্রত্যাশা করা অন্যায় হবে। রকেট যাওয়া এবং আসার সময়ে প্রচণ্ড চাপ, রেডিয়েশন, সব রকম যোগাযোগ বহির্ভূত জীবন, একটা ছোট জায়গার মধ্যে বদ্ধ থাকা- NASA-র মতে এই ব্যাপারগুলো যাত্রীদের মনে প্রচণ্ড প্রভাব ফেলে। এর সঙ্গে রয়েছে শারীরিক ভাবে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও। এখনও পর্যন্ত মহাকাশ যাত্রার সঙ্গে যুক্ত কোনও রকমের বিমা তৈরি করা হয়নি। ফলে যাত্রীর প্রাণহানি হলে সেক্ষেত্রে বেজোস যে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য নন, সেটাও মাথায় রাখা ভালো!