প্রথম পরিকল্পিত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন
ব্রিটিশদের সঙ্গে লড়াই করার জন্য ভারতীয়দের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ পরিকল্পনার অভাব ছিল। একদিকে দেশ জুড়ে চলছিল সহিংস আন্দোলন, অন্য দিকে গান্ধীজি ছিলেন অহিংসার পক্ষে। বলা হয়, এই লবণ সত্যাগ্রহের হাত ধরেই ডান্ডি পদযাত্রা নিয়ে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে কংগ্রেসের সব নেতারা একমত হন। যদি গান্ধীজি গ্রেফতার হন, তবে কে তাঁর জায়গায় আন্দোলন চালাবেন, বিশদে আলোচনা করে ঠিক করে নিয়েছিল কংগ্রেস।
advertisement
২৪ দিনে ২৪০ মাইল পাড়ি
এই সুবিশাল পথ পাড়ি দেওয়াটাও আন্দোলনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গান্ধী ২৪ দিন ধরে যে সব অঞ্চল হেঁটে বেড়িয়েছিলেন, তার সবক'টিতেই ছড়িয়ে দিয়েছিলেন স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন। সব শেষে গুজরাতের নওসারির ডান্ডিতে পৌঁছে সাগরজল থেকে তিনি লবণ তৈরি করে আইন অমান্য আন্দোলনের সূচনা করেন। তা যে অহিংস পথে হতে পারে, দেশের কাছে প্রমাণ করে দিয়েছিল ডান্ডি পদযাত্রা।
বিপুল জনসমর্থন
১৯২০ সালে চৌরিচোরার থানা জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় বিপ্লবীদের হাতে গান্ধীর অহিংস রাজনীতির মতাদর্শ লঙ্ঘিত হয়েছিল। কিন্তু লবণ সত্যাগ্রহে সে রকম কোনও ঘটনা ঘটেনি। পাশাপাশি, এর কিছু দিন আগেই কংগ্রেস গ্রহণ করেছিল পূর্ণ স্বরাজের কর্মসূচী। সব মিলিয়ে সারা দেশের সমর্থন পেয়েছিল এই ডান্ডি অভিযান।
বিশ্বদরবারে প্রতিক্রিয়া
ডান্ডি পদযাত্রার সমাপ্তি হয়েছিল আইন অমান্য করে। পরিণামে ব্রিটিশ সরকার আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করে। কিন্তু বিপ্লবীরা সহিংস প্রতিবাদ জানাননি। ফলে, বিশ্বদরবারে ব্রিটিশ সরকারের ভারত-শাসন নীতি এবং অত্যাচার নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার দেশের জনতাকে স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার কথা ভাবতে থাকে। সেই কারণেই অনেক ঐতিহাসিক বলে থাকেন যে দেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তির সুস্পষ্ট ভিত হল এই ডান্ডি পদযাত্রা।
Written By: Anirban Chaudhury