উত্তমকুমার। বাঙালি ম্যাটিনি আইডল। তাঁর লেখা গান ছবিতে শোনা যাবে এই প্রথম। যাকে দেখার তৃষ্ণা বাঙালির কোনওদিনও মিটবে না। স্বপ্ন বা পর্দা সব জায়গাতে তাঁর এখনও অবাধ বিচরণ। সেই মহানায়ক উত্তমকুমার অভিনয় ছাড়াও যে গানও লিখেছেন এই খবরে তাঁর ভক্তকুল শুধু আশ্চর্যই নয়, চমকিত হবেন তাতে সন্দেহ নেই। ছয়-সাতের দশকে তাঁর লিপে প্রত্যেকটা গান রোম্যান্টিকতার চূড়ান্ত মাত্রায় পোঁছেছিল।
advertisement
আরও পড়ুন- ৩৮-এ পা শ্রেয়া ঘোষালের! মুর্শিদাবাদ থেকে মুম্বই! গানের পথ সহজ ছিল না তাঁর
এই ২০২২-এ তাঁর লেখা গান উত্তম অনুরাগীদের কাছে অবশ্যই এক নতুন প্রাপ্তি। বারবার পর্দায় তাঁকে দেখে আশ না মেটা বাঙালির এই প্রাপ্তিযোগ ছয়-সাতের দশকের নস্ট্যালজিয়াকে আবার উসকে দেবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। ‘অচেনা উত্তম’। উত্তমকুমারের বায়োপিক। ছবির শ্যুটিং শুরু হয়েছিল এপ্রিলে। উত্তমকুমারের জীবন নিয়ে ছবি, তাই রিসার্চের কাজ শেষ করতেই অনেকটা সময় লেগে যায়।
এই ছবিতে একটা গান স্বয়ং মহানায়কের লেখা। এই গানের খবর এতদিন তাঁর পরিবার ছাড়া আর কেউ জানতেন না। পরিচালক অতনু বোসের উদ্যোগে এই শোনা যাবে এই ছবিতে। ছবিতে আরও কয়েকটা গান রয়েছে যা মহানায়কের খুব প্রিয়। গানের রেকর্ডিংয়ের কাজ চলছে। এর আগেও মহানায়কের জীবন নিয়ে লেখা হয়েছে বই। তৈরি হয়েছে মেগা সিরিয়াল।
তাঁর জীবনের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে প্রতিনিয়ত চর্চা হয়েছে। আপামর বাঙালির কাছে এই রোম্যান্টিক নায়কের জীবনের আনাচকানাচ সবটাই খুব চেনা। ‘গুরু’-র হেয়ার স্টাইল, চলাফেরা, হাসি, পোশাক, তাঁর জীবনের প্রেম কোনওটাই ফ্যানেদের কাছে অজানা নয়। তাহলে তাঁর বায়োপিকে দর্শক নতুন কী পাবেন। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে।
মহানায়কের লেখা গান। এই ছবির মূল ইউএসপি। দর্শকের কাছে মহানায়কের এই দিকটা এখনও অজানা, শুধু তাই নয়, উত্তমকুমারের ছোটবেলার নানা ঘটনার কথা বলবে ‘অচেনা উত্তম।’ এই ছবির গল্পে প্রাধান্য পেয়েছে মানুষ উত্তম আর ছোটবেলা থেকে তার বেড়ে ওঠা
উত্তমকুমারের ভাইদের কথা অনেকেই জানেন। কিন্তু তাঁর দিদির কথা কেউ জানেন না। ‘পুতুল দিদি’। দিদির সঙ্গে কাটানো অনেক মুহূর্ত তুলে ধরা হবে এই ছবিতে।
আরও পড়ুন- গসিপ: অভিনয়, লাস্য, সৌন্দর্য্যা মাতোয়ার করেন, জানেন কত কোটি করে নেন এঁরা!
বাবার সঙ্গে মেট্রো সিনেমায় ইংরেজি ছবি দেখতে যাওয়া, বাড়ি ফিরে আয়নার সামনে হলিউড নায়কের অভিনয়ের রিহার্সাল, মঞ্চ নাটকে পর্দার আড়াল থেকে গান গাওয়া, উত্তমকুমারের জীবনের শেষ দুটো দিনে ঠিক কী ঘটেছিল, সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক, যার সবটা অনেকেই জানেন না, এমন অনেক অজানা ঘটনা দেখা যাবে এই ছবিতে। জানালেন ছবির ডিরেক্টর অতনু বোস।
ছবির শুটিং হয়েছে আটষট্টিটা লোকেশনে। যা নাকি বাংলা ছবিতে আগে কখনও হয়নি। প্রত্যেকটা লোকেশনই উত্তমকুমারের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে। দাবি অতনুবাবুর।কাস্টিংয়ের ক্ষেত্রেও চিন্তাভাবনা করেছেন পরিচালক। উত্তমকুমারের অন্দরমহলের কাউকে অভিনয় করতে দেখা যাবে না এই ছবিতে। গৌরবের ব্যস্ততাও এর একটা কারণ।
উত্তমকুমারের কিশোর বয়সের চরিত্রে দেখা যাবে নবাগত তীর্থরাজ বোসকে। সুপ্রিয়া দেবীর চরিত্রেও রয়েছে চমক। কোনও পরিচিত মুখ নয় এই চরিত্রে দেখা যাবে সায়ন্তনী রায়চৌধুরিকে । সুচিত্রা সেনের ভূমিকায় ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
চল্লিশোর্ধ উত্তমের চরিত্রে রয়েছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। গৌরি দেবীর ভূমিকায় শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। চিত্রনাট্য শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সংগীত পরিচালনার দায়িত্বে উপালি চট্টেপাধ্যায়। প্রযোজনায় মুম্বইয়ের অলকানন্দা আর্টস।