TRENDING:

Exclusive: "উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরির ভায়োলিন নিয়ে 'ঘরে বাইরে'র রেকর্ডিংয়ে গিয়েছিলাম"- দেবজ্যোতি মিশ্র

Last Updated:

'ঘরে বাইরে'র পরে 'আগন্তুক' 'গনশত্রু' 'শাখা প্রশাখা'র মতন ছবিতে কাজ করেছেন দেবজ্যোতি। নিজের নানা রকমের অভিজ্ঞতা দিয়েই ৩৬ চ্যাপ্টারের একটি বইও লিখেছেন দেবজ্যোতি মিশ্র

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কলকাতা: বয়স তখন ১৯ বা ২০।   HMVতে তখন চলছে 'ঘরে বাইরে'র রেকর্ডিং। সেখানেই প্রথম ডাক সত্যজিতের ছবিতে কাজ করার। তখন তিনি ভায়োলিন প্লেয়ার।সে কি উৎসাহ দেবজ্যোতি মিশ্রের। সামনে থেকে একবার তাঁকে দেখতে তো পাবো! আবার এখানেই একটা অদ্ভুত কানেকশনও ঘটে যায়।রেকর্ডিংয়ে নিয়ে যেতে হবে নিজের ভায়োলিন। যে ভায়োলিন নিয়ে দেবজ্যোতি  বাজাতে গিয়েছিলেন, সেটা ছিল  উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ভায়োলিন। সত্যজিৎ রায় ওই ভায়োলিন দিয়েছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে কবি সৌগত চট্টোপাধ্যায়কে।
advertisement

বুবু,অর্থাৎ সৌগত, আবার দেবজ্যোতির ভালো বন্ধু। দুজনেই ভায়োলিন বাজান। ঘরে বাইরে রেকর্ডিংয়ে যাবেন বলে ভালো ভায়োলিন না থাকায় বুবুর  ভায়োলিন  নিয়েই দেবজ্যোতি গেলেন রেকর্ডিয়ে। তা সে যাই হোক।মানুষটা কী ভাবে ডিরেকশন দেন, কী ভাবে হাঁটেন,কী ভাবে কথা বলেন এই সবই প্রথমবার দেখার জন্য মুখিয়ে ছিলেন দেবজ্যোতি।

"উনি স্টুডিওতে আসতেন হাতে একটা ব্রিফকেস থাকত।HMV-র গেটের সামনে থেকে যে নুড়ি পাথর, সেটা পেরিয়ে সব সময় নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ঢুকতেন স্টুডিওতে।একবার ঢুকতে ১৫ মিনিট দেরি হয়েছিল । এসেই বলেছিলেন 'ভাই,আমার জন্য নয় ডঃ বক্সির জন্য দেরি হল।(ওনাকে তখন দেখতেন ডঃবক্সি)। যাই হোক প্রথম দিন থেকেই এক অন্য সত্যজিতকে দেখতে পেয়েছিলাম আমি। যাকে আমি বলব মগ্ন সত্যজিৎ।স্মার্ট ঝকঝকে সত্যজিতের থেকে এই মানুষটাকেই বেশি পছন্দ ছিল আামার।

advertisement

প্রথমদিন লাঞ্চ ব্রেক হওয়ার পরে নিজের জায়গায় ফিরে   চমকে গেলাম ।তিনি দাঁড়িয়ে রয়েছেন পিয়ানোর সামনে। একেবারে মগ্ন। মিউজিকে যেন ডুবে গিয়েছেন।তাঁর মুখের সেই এক্সপ্রেশন যেন ভোলার নয়।আবার কাজ শেষ হওয়ার পরে  স্টুডিও থেকে যেন  একটা দীর্ঘায়িত ঝড়ের বেগে বেড়িয়ে যেতেন ।পেছনে না তাকিয়ে জোরে বলতেন 'আবার সামনের ছবিতে দেখা হবে ভাই'।বলে পেছনে আার ফিরে তাকাতেন না। যেন কোনও কিছুর সঙ্গেই আর সম্পর্ক নেই তাঁর।নিজের স্বরলিপির সঙ্গেও না। তখন ওনাকে বেশ দাম্ভিক অহংকারী মনে হত।কিন্তু আজ মনে হয় পেছনে তাকালে বোধহয় সত্যি হয় না।" জানালেন দেবজ্যোতি।

advertisement

ছবি বানানোর মধ্যে সব  থেকে  যেটা ওনাকে বেশি আনন্দ দিত তা অবশ্যই ছবির সঙ্গীত।"ওনাকে একেবারে  অন্য ভাবে পাওয়া যেত স্টুডিওতে। ওনার চরিত্রে একটা বৈপরীত্ব ছিল। একটা ছিল বিশাল পান্ডিত্যের দিক আরেক দিকে একটা শিশুমন। যা শেষ দিন অবধি ছিল তাঁর মধ্যে। পাশ্চাত্য সঙ্গীতের দারুণ পড়াশোনা  ছিল সত্যজিতের। সেটা কীভাবে নিজের দেশের, নিজের মাটির সঙ্গে মিলিয়ে ব্যবহার করতে হবে সেটা ভালই জানতেন তিনি।ভায়োলিন ব্যবহার করতেন কিন্তু তার ছবির ভায়োলিনে ভাইব্রেটর দিয়ে বাজানো নিষেধ ছিল। 'ভাইব্রেটর নয় ভাই' গম্ভীর স্বরে বলে উঠতেন সত্যজিৎ রেকর্ডিং এর সময়। এটাই ছিল ওনার ইউনিক ওয়ে।যে কারণে আমি এখন যখন শুনি মনে হয়ে কি অসাধারণ।বার্গম্যান এর ভায়োলিন আর রায়ের ভায়োলিন সেই কারণেই এক নয়। ইউনিক ওয়েতে উনি মিউজিক ব্যবহার করতেন।সেটা সত্যি আর পাওয়া মুশকিল। সঙ্গীত  যে বৈশিষ্ট্য তার মধ্যে ছিল তা সবার থেকে ওনাকে আলাদা করে দেয়। ধরা যাক 'আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে', সেখানে    মোৎজার্ট ঢুকে গেল  সরোদ, সেতার,আঁড় বাঁশিতে।একেবারে সেটা অন্য রকম বাঙালি চরিত্র পেয়ে গেল। রবিশঙ্কর আর আলী আকবর খান ওনার ছবিতে কাজ করেছেন।কিন্তু ছবির কাজ আার ওনাদের চেনা সরদ সেতার এর মধ্যে একেবারে আকাশ পাতাল পার্থক্য।অর্থাৎ যে কোনও বাদ্য যন্ত্রকেই তিনি কীভাবে বাঙলার ধাঁচে ফেলবেন তা বেশ ভালই জানতেন সত্যজিৎ। "বলে জানান দেবজ্যোতি।

advertisement

'ঘরে বাইরে'র পরে 'আগন্তুক' 'গনশত্রু' 'শাখা প্রশাখা'র মতন ছবিতে কাজ করেছেন দেবজ্যোতি।  নিজের নানা রকমের অভিজ্ঞতা দিয়েই ৩৬ চ্যাপ্টারের একটি বইও লিখেছেন দেবজ্যোতি মিশ্র।নাম  'কম্পোজার সত্যজিৎ'।নিজের আঁকা মায়োস্ট্রোর বেশ অনেকগুলো ইলাস্ট্রেশনও রয়েছে তাতে। লকডাউন না হলে এত দিনে 'কম্পোজার সত্যজিৎ'ও হয়ত থাকত আপনার হাতে।এই বইটিতে চেনা মানুষটাকে আরও একটু বেশি চেনাবেন দেবজ্যোতি।

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
১৭ রাজ্য পাড়ি দিয়ে শান্তির বার্তা — স্কুটিতে একা অভিযানে বর্ধমানের শিক্ষিকা
আরও দেখুন

Sreeparna Dasgupta

বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
Exclusive: "উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরির ভায়োলিন নিয়ে 'ঘরে বাইরে'র রেকর্ডিংয়ে গিয়েছিলাম"- দেবজ্যোতি মিশ্র
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল