সেটাই আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে প্রমাণ করে দিলেন বাংলা ধারাবাহিকের দুই জনপ্রিয় মুখ । ঐন্দ্রিলা শর্মা আর সব্যসাচী চৌধুরি । একজন ‘জিয়নকাঠি’তে অভিনয় করছেন, অন্যজন ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’ ধারাবাহিকে সকলের প্রিয় ‘বামাক্ষ্যাপা’। ভালবাসার শিকড় যে কতটা গভীর হতে পারে তা নিঃশব্দে বুঝিয়ে দিলেন তাঁরাই ।
বহুদিন ধরেই ক্যান্সারে আক্রান্ত ঐন্দ্রিলা । একাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময় তাঁর শরীরে এই মারণ রোগ বাসা বেঁধেছিল । বহু লড়াই করে সেই যুদ্ধে জয়ী হয়ে ফিরে এসেছিলেন সাহসী মেয়ে । আবারও লাইটস, ক্যামেরা, অ্যাকশনের দুনিয়ায় নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন । কিন্তু ভাগ্য বিধাতা যে তাঁর জন্য মসৃণ পথ তৈরি করেননি । ফলে আবারও ফিরে আসে সেই রোগ ।
advertisement
এ বছর সরস্বতী পুজোর দিন শ্যুটিং ফ্লোরেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন অভিনেত্রী । তাঁর দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হলে, চিকিৎসকরা জানান তাঁর বাম ফুসফুসে ক্যান্সার ফের থাবা বসিয়েছে । আবারও শুরু হয় নতুন লড়াইয়ের গল্প । এ বার আর একা নন অভিনেত্রী । পাশে পেয়ে যান প্রেমিক সব্যসাচীকে । তাঁর দেখভাল করা থেকে যত্ন করে খাইয়ে দেওয়া, পাশে থেকে ভালবাসা আর ভরসার হাতটা বাড়িয়ে দেন সব্যসাচী ।
কেমো থেরাপি শুরু হয়েছে ঐন্দ্রিলার । তাঁর সমস্ত চুল উঠে গিয়েছে । এক ঢাল লম্বা কালো চুল আজ আর নেই । কিন্তু ভালবাসার গায়ে লাগেনি কোনও আঁচড় । তাঁরা এখনও হাসি মুখে পৃথিবীকে শেখাচ্ছেন ভালবাসার পাঠ । সেই ঐন্দ্রিলার এ বার হবে অস্ত্রোপচার । আর তা হতে চলেছে এই সপ্তাহেই ।
সেই খবরই ফেসবুকে শেয়ার করলেন সব্যসাচী । লিখলেন তাঁর প্রেমিকার অনুমতি নিয়েই তাঁদের ভক্তদের সবটা জানাচ্ছেন তাঁরা । ১৩ সেমি X ১১ সেমি X ৯ সেমি আয়তনের একটি টিউমর ঐন্দ্রিলার ফুসফুসে বাধা বেঁধেছে । সব্যসাচীর ভাষায়, ‘‘একটা মাংসপিন্ড পাঁজরের ভেতর নিয়ে ফেব্রুয়ারী অবধি চুটিয়ে অভিনয় করেছে, ফাটিয়ে ঝগড়া করেছে, রীতিমতন দাপিয়ে বেরিয়েছে স্কুটি চালিয়ে। পাশে থেকেও একটিবারের জন্যে বুঝতেও পারিনি।’’
তবে আশার কথাও শুনিয়েছেন ছোট পর্দার নায়ক । লিখেছেন, সেই টিউমরটি কেমোথেরাপির ফলে আয়তনে অর্ধেক হয়ে গিয়েছে । সেটা পুরোটাই সম্ভব হয়েছে ঐন্দ্রিলার নিয়মানুবর্তিতা ওশৃঙ্খলাবোধ থেকেই । এখন সেটা অস্ত্রোপচার করতে হবে । তবে চিকিৎসকরা বলছেন এই অস্ত্রোপচার ঝুঁকিপূর্ণ ।
তবে প্রেমিক সব্যসাচী জানেন, তাঁর মিষ্টি প্রেমিকার মনের জোর অনেকটা । কখনও অবসাদ তাঁকে ছুঁতে পারে না । জীবনের কঠিন এই সময়েও সবসময় হাসি লেগেই আছে মেয়েটার মুখে । এখন সকলের প্রার্থনা, সারা জীবন এমন ভাবেই যেন মেয়েটা হেসে যেতে পারে । তাঁর এই হাসি মুখটা যেন আরও অনেকগুলো বছর সকলে দেখতে পারন ।