শত-সহস্র মানুষের জীবিকা জড়িয়ে আছে সিরিয়ালের সঙ্গে। ধারাবাহিক টিভিতে টেলিকাস্ট না হলে তাঁরা কী খাবেন? অনেক আলোচনা পর্যালোচনার পর বহু দিন আগে থেকেই জোর কদমে শুরু হয়ে গিয়েছে ধারাবাহিকের কাজ। বহু শিল্পী করোনা-আক্রান্ত হলেও নতুন এপিসোড টেলিকাস্ট হওয়া থেমে থাকেনি। তার পরেই এসেছে সিনেমার পালা। টুকটুক করে খুলছে সিনেমা হল। শ্যুটিংও অল্প বিস্তর শুরু হয়ে গেছে।
advertisement
আর মঞ্চ? যেখানে নানা বেশে, নানা রূপে শিল্পীরা সরাসরি দর্শকদের চোখে চোখ রেখে অভিনয় করেন? তার কী হবে- উত্তর আসেনি কোনও জায়গা থেকে।
অটিজমে আক্রান্ত জয়দীপ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অটিজম সোসাইটিতে দ্বাররক্ষীর কাজ করেন। অটিজমের সঙ্গে তীব্র মানসিক অবসাদও ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী। সেই অবসাদ কিছুটা হলেও ঘোচাতে পেরেছিল থিয়েটারে অভিনয়। গত ১৫ বছর ধরে দু'টি নাট্যগোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত ছিলেন জয়দীপ। সেবা আর কাশীপুর অন্যরূপ নামের এই দু'টি দলের হাত ধরেই নানা ছোটখাটো ভূমিকায় অভিনয় করা। দ্বাররক্ষী হিসেবে বেতন পেতেন ৩১০০ টাকা আর বাকিটা আসত থিয়েটার থেকে। রোল পিছু ২০০ টাকা পেতেন জয়দীপ।
অতিমারী শুরু হওয়ার পর জয়দীপের বেতন এখন ২০০০-এ এসে দাঁড়িয়েছে। আর থিয়েটার থেকে আয়? শূন্য! চারজনের পরিবার ২০০০ টাকায় চলে না। বাধ্য হয়েই লোকের কাছে হাত পাততে হচ্ছে শিল্পীকে।
একই রকম কাহিনি গোপাল ঘোষেরও। থিয়েটারে টেকনিসিয়ান হিসেবে ৩২ বছর ধরে কাজ করেছেন গোপাল। এখন পরিস্থিতির চাপে তাঁকে দরজায় দরজায় ফিনাইল আর স্যানিটাইজার বিক্রি করে বেড়াতে হচ্ছে।
তবে এই রকম অবস্থায় সবাই যে চুপ করে বসে আছেন তা নয়। শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, কৌশিক সেনের মতো অভিনেতারা এগিয়ে এসে গড়ে তুলেছেন সৌভ্রাত্রীয়। এঁরা বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করছেন শিল্পী ও টেকনিসিয়ানদের। ঋতব্রত মুখোপাধ্যায় ও অনির্বাণ ভট্টাচার্যের মতো তরুণশিল্পীরা গড়ে তুলেছেন জেলা ফান্ড-এর মতো একটি প্রয়াস। আবার ‘বুলন্দ ইরাদে’ নাম দিয়ে অনলাইন কনসার্ট করেও থিয়েটার শিল্পীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে। এ বার থিয়েটার পাড়া সরগরম হয়ে উঠলেই হাঁপ ছেড়ে বাঁচবেন অনেকেই।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের থিয়েটার শিল্পীদের জন্য আপৎকালীন ফান্ড: যদি কেউ সাহায্য করতে চান, তা হলে যোগাযোগ করতে পারেন- +৯১৭৯৮০০২০৩৮১ (G Pay), মধুরিমা গোস্বামী, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (পটারি রোড শাখা), অ্যাকাউন্ট 20023938429, আইএফএসসি কোড SBIN0008439