তারকার প্রয়াণে ফের নস্ট্যালজিয়ায় আক্রান্ত বাঙালি ৷ শেয়ার হতে থাকে তাপস পাল অভিনীত একাধিক ছবির ক্লিপিংস ৷ এরই মধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ারে ফের ভাইরাল হয়ে যায় দাদার কীর্তি ছবিতে তাপস পালের লিপে হেমন্ত মুখ্যোপাধ্যায়ের গাওয়া রবীন্দ্র সঙ্গীত- ‘চরণ ধরিতে দিয়ো গো আমারে, নিও না নিও না সরায়ে ৷’ ফের আরও একবার ভিজে উঠল বাঙালি দর্শকের চোখের কোল ৷
advertisement
একরাতেই পাল্টে যায় চন্দননগরের সাধাসিধে ছেলের জীবনটা। তরুণ মজুমদারের দাদার কীর্তি রিলিজের পরদিনই রাতারাতি স্টার বনে যান তাপস পাল। উত্তমকুমারের পর টলিউডের অন্যতম ভরসা ছিলেন তিনি। যাঁর চওড়া কাঁধ আর প্রাণখোলা হাসিতে নতুন স্বপ্ন দেখেছিল টলিপাড়া। একের পর এক হিট ফিল্মে উত্তম-পরবর্তী জমানায় তৈরি হয়েছিল নতুন এক অধ্যায়ের।
১৯৮০ সালেই মুক্তি পায় তরুণ মজুমদারের দাদার কীর্তি। প্রথম দর্শনেই সাদাসিধে, লাজুক কেদারের প্রেমে পড়ে গেল আম বাঙালি। রাতারাতি স্টার বনে গেলেন চন্দননগরের সাদামাটা ছেলে তাপস পাল। তাঁর বয়স তখন বাইশ।
মন ভোলানো হাসি, সরল-নিষ্পাপ চেহারা, সাবলীল অভিনয়। এই তিন ইউএসপি-তে একের পর এক হার্ডলস পেরিয়ে যেতে থাকেন তাপস পাল। ক্রমশ হয়ে ওঠেন ইন্ডাস্ট্রির চোখের মণি।
একের পর এক হিট । ভালোবাসা ভালোবাসা, পথভোলা, সাহেব, পারাবত প্রিয়া, অনুরাগের ছোঁয়া, গুরুদক্ষিণা ,, প্রতীক, উত্তরা,মন্দ মেয়ের উপাধ্যান ......তরুণ মজুমদার, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, হরনাথ চক্রবর্তী, প্রভাত রায়, তপন সিনহা, অঞ্জন চৌধুরী, দীনেন গুপ্ত----বিভিন্ন ঘরানার পরিচালক। তিনশোরও বেশি ফিল্ম। বার বার ভেঙেছেন নিজেকে। কিন্তু অভিনয়ের সাবলীলতা হারাননি। বাঙালির মনে তিনি যেন পাশের বাড়ির ছেলে।
রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে কম ছবি করতে থাকেন। তার মধ্যেও আটটা আটের বনগাঁ লোকালের প্রতিবাদী অনন্ত দাস আশা জাগায়। এরপর চ্যালেঞ্জ টু, খিলাড়ি। সেখানেই শেষ। সেটা ২০১৩। শেষ দিকে ডায়লগ ভুলে যেতেন। কথাবার্তাও অসংলগ্ন হয়ে পড়ছিল।
জীবনের শেষ দিকে নানা বিতর্কের জেরে যেন ম্লান হয়ে যাচ্ছিল তাঁর তারকার উজ্জ্বল ভাবমূর্তি। তবু দিলখোলা হাসিখুশী তাপস পালের জন্য মন খারাপ টলিউডের। উত্তমকুমারের উত্তরসূরীর মৃত্যুতে শেষ হল বাংলা চলচ্চিত্র জগতের একটি অধ্যায়ের।