#কলকাতা: ঘটনাটা বহু বছর আগের। লন্ডনে। সেদিন ছিল জয়া বচ্চনের জন্মদিন। ঘটনাচক্রে তিনি তখন লন্ডনে। জয়া এবং অমিতাভ বচ্চন, তাঁর কাছে জেদ ধরে বসলেন, ‘আমাদের নিয়ে কাজ করতেই হবে। কথা দিন। লিখে দিন আপনি।’ তাঁকে লিখে দিতে হল। বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। লিখে তিনি দিয়েছিলেন ঠিকই, তবে কাজ করে ওঠা হয়নি এখনও।
advertisement
পরিচালক মনে করেন অমিতাভ ভীষণ ভাল কাজ করার ক্ষমতা রাখেন। তবে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর একটাই আক্ষেপ, মিস্টার বচ্চন বার বার একই জিনিস রিপিট করেন! তবে তিনি এও মানেন, অমিতাভকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিলে তিনি স্ক্রিনে ম্যাজিক সৃষ্টি করতে পারেন। আগামী ছবি ‘উড়ো জাহাজ’ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মেমরি লেনে উঁকি মারলেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত।
কী হল, এবং কী হতে পারে, এর মধ্যে বিচরণ করে 'উড়ো জাহাজ'। পরিচালকের ভাষায়, যাকে বলে এক্সটেনডেড রিয়েলিটি। ছবির মুখ্য চরিত্রে চন্দন রায় সান্যাল। চন্দনের চরিত্রের নাম বাচ্চু। পেশায় মেক্যানিক। গাড়ি মেরামত করে, কাজেই তার সাজ পোশাক কেমন হবে তা নিয়ে সকলের ধারনা রয়েছে। শ্যুটিং চলাকালীন যে হোটেলে ইউনিট থাকত, তার মালিক দেখতেন, চন্দন একই পোশাক পরে রোজ শ্যুটিং করতে যান। কালি মাখা মুখ। একদিন কৌতূহলবশত তিনি চন্দনকে জিজ্ঞেস-ই করে ফেললেন ‘ আপনি নায়ক, অথচ রোজ একই জামা পরেন ?' আসলে, নায়কের যে চেনা সংজ্ঞা রয়েছে, সেটা ভাঙতে চান বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত।
এই প্রসঙ্গেই আবার নস্ট্যালজিক হয়ে পড়লেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। ‘তাহাদের কথা’র শ্যুটিং করার সময় মিঠুনের সঙ্গে দেখা করতে আসেন স্ত্রী যোগিতা বালি। বদ্ধদেব দাশগুপ্তর কাছে অভিযোগ করেন জোগিতা, মিঠুন নাকী কাপড় পাল্টাচ্ছেন না, স্নানও করছেন না। পরিচালক নায়ককে ডেকে জিজ্ঞেস করেন এমন আচরণ করার কারণ কী ? মিঠুন বলেন, পোশাকটা ছেড়ে ফেললে তিনি চরিত্র থেকে বেরিয়ে যাবেন। জোগিতার অভিযোগ আর ধোপে টেকে না। বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত নিজের ছবির জন্য এমনই অভিনেতা চান, যিনি সবটুকু উজাড় করে দেবেন চরিত্রের যথাযথ চরিত্রায়নের জন্য।
বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর কথায়, তিনি চিরকালই ভয় না পেয়ে, নিজের মনের খুশিতে, নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করে এসেছেন। এখনকার পরিচালকরা সম্ভাবনা থাকলেও সাহসী হতে পারেন না। প্রযোজক না পাওয়ার ভয়, সমালোচনা হওয়ার ভয়--নানা ধরনের ভয় পেয়ে তাঁরা খোলসে আটকে থাকেন। ভাল কাজ করতে পারেন না। আগামী দিনে পরিচালকরা নির্ভিক হয়ে কাজ করুক, এমনটাই চান বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত।