তারমানে কী হেরে গেলেন উত্তমবাবু? "না না এ তো কোনও হারজিতের গল্প নয়। হারবেন কেন? এটা কিংবদন্তী দুটো মানুষের জীবনের ঘটনা। তাঁদের সম্পর্কের কথা। এটুকু বলবো আমি নিজেকে নিয়ে অনেক ভেবেছি এই ছবিতে। সৌমিকও খুব ভাল পরিচালক। উত্তমবাবু এই ছবি দেখলে খুশি হতেন।" আরও একবার মুচকি হেসে সিগারেট ধরালেন উত্তম। ওদিকে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রর চরিত্রে কাজ করছেন শুভাশিষ মুখোপাধ্যায়। শুভাশিষ খুবই ভাল অভিনেতা। বললেন, "আমি এই কাজটা করার জন্য প্রথমে রেডিও-র তিন জন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। সমরেশ ঘোষ, অজিত মুখোপাধ্যায় ও জগন্নাথ বসুর সঙ্গে। তাঁরা সকলেই বীরেন্দ্রবাবুর সঙ্গে কাজ করেছেন। তাঁদের থেকে আমি জানতে শুরু করি ভদ্রবাবু মানুষটা কেমন ছিলেন। জগন্নাথ বসুতো আমাকে অভিনয় করে দেখিয়েছেন কেমন করে হাঁটতেন বীরেন্দ্রবাবু। তাছাড়া পরিচালকও অনেক সাহায্য করেছে। যীশুর সঙ্গেও অনেকদিন পরে কাজ করছি। ও তো খুব ভাল কাজ করে। তবে এখানে একটা সিন আছে সেটাতে কাজ করার পর আমি আর যীশু দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে ছিলাম প্রায় দুমিনিট। কেউ কোনও কথা বলতে পারিনি। পারবই বা কী করে! যে দুজন মানুষের চরিত্রে আমরা কাজ করছি, তাঁরা তাদের কাজের জগতে ভগবান। আমরা ভাগ্যবান যে এই কাজ করতে পারছি। এটা তাঁদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা নিবেদন।" উত্তম কুমার তাঁর জায়গায় যেমন ছিলেন সেরা। তেমনই বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রকে ছাড়া মহালয়া হয় না। মহালয়া মানেই দেবীর আগমনি বার্তা আর বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র। গোটা ব্যাপারটাই নজর করছিলেন উত্তম কুমার। আর মনে মনে হাঁসছিলেন। কারণ বীরেন্দ্রর সঙ্গে যে সেদিন ঠিক কী হয়েছিল তাঁর, তা জানেন একমাত্র তিনি। বাকিটা তো ইতিহাস। তবুও নতুন প্রজন্ম তাঁর কথা ভাবছেন, তাঁদের কথা ভাবছেন, ছবি করছেন এই অনেক নয় কি! তবে বাইরের কথোপকথনেই খুশি হলেন উত্তম। ছবিটা আর দেখলেন না। তাঁর ফেরার সময় হয়ে গিয়েছে। সিগারেটের ধোঁয়া উড়িয়ে রওনা দিলেন তিনি। এমনটা উত্তম বেঁচে থাকলে হয়ত হত!
advertisement