তৃণা আর খড়কুটোর গুণগুণের কতটা মিল?
তৃণা: কোনও মিল নেই। শুধু মনে যা, মুখে তা ছাড়া সবই অমিল। তৃণা অতটা ইমম্যাচিওর না।
দুলাল লাহিড়ী, চন্দন সেন, সোহিনী সেনগুপ্ত, অভিষেক চট্টোপাধ্যায়-এর মতো তারকাদের সঙ্গে কাজ। নিজেকে আলাদা করতে পারাটা চ্যালেঞ্জিং মনে হয়?
advertisement
তৃণা: চ্যালেঞ্জিং তো পরে। আমিই অডিশনের সময় ভাবছিলাম যে, এঁদের সঙ্গে আমাকে অভিনয় করতে হবে? টানা একটা সিরিয়াল করব? আমি খুবই নার্ভাস ছিলাম। এই সিরিয়ালের সবাই দারুণ অভিনেতা। আমি এখনও সিন করার সময় এটাই ভাবি।
বাংলা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে তৃণা সাহা এখন তারকা। এত এত ভক্ত। এত খবর। কেমন লাগে এই স্টারডমটা?
তৃণা: স্টারডম বলে কিছু মনে হয় না। এখনও খুবই কম কাজ করেছি আমি। সদ্য শুরু, অনেক কাজ বাকি। আমি কিছুই না।
অভিনয় জগতে এলে কী ভাবে?
তৃণা: অভিনয় করব কোনও দিন ভাবিনি। পড়াশোনাটাই করতাম। পরিচালক হওয়ার খুব ইচ্ছে। অ্যাসিস্ট করা শুরু করেছিলাম। ফেসবুকে ছবি দেখে অডিশনের ডাক পাই। কিন্তু খুব খারাপ অডিশন দিয়েছিলাম। ওরা ওয়ার্কশপ করায়। রোগা হতে বলা হয়। আমার তখন ৭২ কিলো ওজন ছিল। সেটা করি। তার পর 'খোকাবাবু'-তে সুযোগ পাই।
তোমরা তো এখন পাওয়ার কাপল। নীল-তৃণা জুটিকে নিেয় হই হই... আবার সিরিয়াল ও বাস্তবের বিয়ের দিনও একেবারে এক... প্রেমটা হল কী ভাবে?
তৃণা: প্রেম আমাদের বেশিদিনের নয়। একে অপরকে চিনি প্রায় ১৩ বছর হয়ে গেছে। কলেজের সময় থেকে। একসঙ্গে টিউশনে পড়তাম। প্রথমে বন্ধু ছিলাম। সেখান থেকে একটু ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব হল। আমি পরে ৩ বছর দিল্লিতে ছিলাম। তখন খুব একটা কথা হত না। কলকাতায় ফেরার পর আবার দেখা করা শুরু হল। ২০১৭-এ মনে হল বন্ধুত্বটা একটু বেশিই। সেই সময়টা ছিল ঠিক বন্ধুও না, আবার প্রেমিক-প্রেমিকাও না। অদ্ভুত। এটা কেটে গেল যখন বুঝলাম যে, না আমরা একে অপরকে ভালোবাসি। ২০১৮-র জন্মদিনে নীল আমাকে প্রোপোজ করে। তার পর এখন তো আমরা বর-বউ...
সংসার করছ এখন তোমরা। ছুটির দিনে নীল-তৃণা কী ভাবে কাটায়?
তৃণা: ছুটির দিন পেলে সবচেয়ে খুশি হন আমার শ্বশুর-শাশুড়ি। কারণ, ওঁরা তো আমাকে দেখতেই পান না বাড়িতে।
আরও পড়ুন: গায়িকার জীবনে নায়িকা-সংবাদ, নতুন জীবন শুরু করতে চললেন ইমন চক্রবর্তী!
শাশুড়ি-বউমার সম্পর্ক কেমন?
তৃণা: ভীষণ ভালো। আমার শাশুড়ি আমার বন্ধুর মতো। আমাকে প্যাম্পার করেন শাশুড়ি। এক গ্লাস জল নিয়ে খেতে গেলে বলেন, কেন কী দরকার? করতে দেন না কিছুই।
বিয়ের পর প্রথম পুজো তোমার ও নীলের। স্পেশ্যাল কী প্ল্যান তোমাদের?
তৃণা: হ্যাঁ, এ বছরের পুজোটা সত্যিই স্পেশ্যাল। এবার প্রথম বিবাহিত মহিলা হিসেবে ঠাকুর বরণ করার সুযোগ পাব। এটা আমার কাছে এবার খুবই স্পেশ্যাল। কিন্তু প্ল্যানিংয়ে আমি নেই। দুই পরিবার, বন্ধুরা মিলে দারুণ কিছুই হবে। আর পুজোর সময় কলকাতা ছেড়ে কোথাও যাই না, যাবও না।
পুজোয় সাজবে কেমন?
তৃণা: আমি না ভীষণ ল্যাদ একটা মানুষ। সেটের বাইরে একদম সাজি না। ওই কমফোর্টেবল পোশাক আর হাল্কা সাজ। মেক-আপ, চুল অত আমি ভালোবাসি না।
নীল-তৃণার মধ্যে কে বেশি খেতে ভালোবাসে?
তৃণা: দু'জনেই। অসম্ভব খেতে ভালোবাসি, সব খাবার খাই। তবে দু'জনেরই প্রিয় মাটন বিরিয়ানি। সুইট ডিশও খুব পছন্দ।
তৃণা কি নীলকে রান্না করে খাওয়ায়?
তৃণা: অনেক বার। অনেক কিছু করে খাইয়েছি। আমি রান্না করতে ভালোবাসি। লকডাউনের সময় অনেক রান্না করে খাইয়েছি।
আর নীল?
তৃণা: ও জলটাও গরম করতে পারে না। ওর রান্নাঘরে ঢুকে কিছু করার থেকে, আমার ওটা করে খাওয়াও হয়ে যাবে।
নীলকে পুজোয় কী স্পেশ্যাল উপহার দেবে?
তৃণা: আসলে, নীলকে এত বছরে আমি সব কিছু দিয়ে দিয়েছি। স্পেশ্যাল কিছু বাকি নেই। ও যা চাইবে তাই দেব। কিন্তু কিছুই না দেওয়ার বাকি নেই আসলে। একটা বাড়ি ছাড়া ওঁকে সব কিছুই দিয়ে দিয়েছি মনে হয় আমার।
কথায় বলে বিয়ের পরই স্বামীদের আসল রূপ বোঝা যায়, এখনও কি এমন কোনও অভিজ্ঞতা হয়েছে?
তৃণা: না, নীল আসলে এখনও সিঙ্গল লাইফেই রয়েছে। আমি আছি, জানে আমার বউ আছে। সেটা হয়তো ২-৩ শতাংশ। বাকি ও বিয়ের আগে যেমন ছিল, তেমনই আছে। তবে এটা দেরিতে এলেই ভালো। ইনোসেন্সটা থাকবে।
এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি, টলিউডে কিন্তু এখন একাধিক বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের গুঞ্জন। কিন্তু তোমার ও নীলের এই দাম্পত্যের রহস্যটা কী?
তৃণা: আমাদের তো সবে শুরু। আর এই ইন্ডাস্ট্রি তো শুধু না, সব জায়গাতেই এই কথা শোনা যায়। আমার মনে হয়, ভালোবাসা দেখানোটা খুব জরুরি, কাজে-কর্মে। আর আমার কাছে সততা ও বিশ্বাস। দু'জনের মধ্যে ট্রান্সপারেন্সিটা থাকতে হবে। কথা বলা ও বন্ধুত্বটা বজায় রাখতে হবে।
রাজনীতির প্রসঙ্গে আসি। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচারে দেখা গিয়েছে। প্রার্থী হিসেবে দেখব কবে?
তৃণা: এখনই সেটা জানি না। আসলে, আমি ও নীল মনে করি রাজনীতিতে এলেও, সেটা নিয়ে পড়াশোনাটা করে আসতে হবে। শুধু লোকে চেনে বলে গেলে হবে না। কাজ করতে হবে। আগে এটা বুঝতে শিখি, পারব কি পারব না বুঝি। ভবিষ্যতে যদি আমাদের মনে হয়, দিদিরও মনে হয় তখন হয়তো দাঁড়াব।
তৃণমূলকে বেছে নেওয়ার কারণ?
তৃণা: আমি অনেক আগে থেকে দিদিকে সাপোর্ট করি। ইন্ডাস্ট্রিতে ঢোকার পর থেকে দিদি সব সময় পাশে থেকেছেন, অনেক অনেক ভাবে সাহায্য করেছেন। শুধু আমাকে না, অনেককে। তাই আমার মনে হয়, দিদিকে আমাদের দরকার। সেটা যদি তৃণমূলকে সাপোর্ট করা হয়, তাহলে তাই।
সিনেমায় কবে দেখব তোমাকে?
তৃণা: লেটস সি। এখন শুধু মন দিয়ে খড়কুটো করছি। তবে পরের কাজ নিয়ে এখনই কিছু বলছি না। বলা যাবে না... (হাসি)
নিউজ ১৮ বাংলা ডিজিটালের পাঠকদের কোনও বার্তা?
তৃণা: হ্যাঁ, যেটা মনে রাখতে হবে যে, কোভিড এখনও যায়নি। মাস্কটা পরতেই হবে। নিজেকে নিয়ে শুধু না, বাকিদের কথাও ভেবো। যতটা সম্ভব পজিটিভ থাকো। পুজোর সময়টা খুব ভালো করে কাটুক সবার।
আরও পড়ুন: টলিউডে প্রতিদ্বন্দ্বী কে? নাচ থেকে অভিনেত্রীর উড়ানে সওয়ার 'মিঠাই'! মনের খাতা খুললেন সৌমিতৃষা