গানে ভুবন ভরিয়ে রেখেছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়(Sandhya Mukherjee)। অথচ তাঁর গান শুনে কে বলবে যে তিনি ডান কানে শুনতে পেতেন না! অবাক লাগবে এ কথা শুনলে। সত্যিই তিনি ডান কানে শুনতেন না। ছোটবেলা থেকেই নানা বিপদের মধ্যে তাঁর জীবন কেটেছে। কিন্তু তিনি নিজের শক্তিতে জয় করেছেন সবটাই। ছোটবেলায় এক দুর্ঘটনায় বাঁচার কথাই ছিল না তাঁর!
advertisement
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের(Sandhya Mukherjee) বাড়ি ঢাকুরিয়ার ব্যানার্জী পাড়ায়। তাঁদের দোতলা বাড়ি। বাড়ির দু পাশে নিচু ছাদ। সেখানে বাড়ির সকলে শাড়ি শুকোতে দিত। ভিজে শাড়ি রোদে মেলা হত। শাড়ি যাতে উড়ে না যায়, সেজন্য বড় আধলা ইঁট চাপা দেওয়া হত শাড়ির ওপরে। আর বিকেলে শাড়ি শুকিয়ে গেলে তোলার দায়িত্ব ছিল ছোট্ট সন্ধ্যার। কিন্তু সেই শাড়ি তুলতে গিয়ে কাণ্ড ঘটালেন তিনি। নিচে দাঁড়িয়েই শাড়িতে টান। মাথায় এসে পড়ে সেই ইঁট। সাংঘাতিক অবস্থা। ডাক্তার হসপিটাল ছোটাছোটি। সে যাত্রায় ডাক্তারদের চেষ্টায় প্রাণ বাঁচে তাঁর। তবে কানে এই সময় ক্ষতি হয় না।
সে সময় ১৭ বছর বয়স সন্ধ্যার(Sandhya Mukherjee)। গানের জগতে একটু একটু করে নাম হচ্ছে তাঁর। হঠাৎ একবার মাম্পস হয় তাঁর। অনেক চিকিৎসাতেও ফল মেলে না। যদিও পরে এই অসুখ সেরে যায়। কিন্তু চিরকালের মতো ক্ষতি হয় তাঁর। ডান কানটা নষ্ট হয়ে যায়। তারপর কত ডাক্তার, কত চেষ্টা কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। সে সময় কানের মেশিন এত ভাল ছিল না। শেষ পর্যন্ত এক কানে না শুনেই একের পর এক গান গেয়েছেন তিনি। এ এক ঐশ্বরীক ক্ষমতাই বটে। আজ তাঁর প্রয়ানে শোকস্তব্ধ গোটা বাংলা। না ফেরার দেশে হারিয়ে গেলেন তিনি।